সম্মিলিত নিষ্ঠুর শব্দগুলি
তাড়াতাড়ি এসে দেখে যা……
এ শহরে ভরদুপুরে আজও ফিনিক্স পাখিরা কাক হয়ে জন্মায়।
আয়
চোখ মেলে দ্যাখ ক্ষুধার্ত হায়েনারা কচি মাংসে সদ্য লেপটে থাকা রক্তে সড়সড় করে জিভ বোলায়।
তুই জানিস কি?
ভাগাড়ের শকুনগুলো আর ঝগড়া করে না
ওরা তাকিয়ে তোর দিকে
দ্যাখ দ্যাখ
তোর সাধের কাজল চোখে ওরা প্রেম ঠোঁট ডুবিয়ে দেবে।
মায়া হয় বড়
তোকে করুণা হয় আমার
ইচ্ছে করে জগতের সব বিষ মিশিয়ে
বিন্দু বিন্দু করে তোর জিভে দেই
তুই চেখে নে বিভীষিকাময় মৃত্যু কে
কিন্তু তারপরই,
আবার তোকে বাঁচিয়ে রাখার ইচ্ছে হয় খুব
তোর ভ্রু জোড়ার মাঝে চুম্বন করতে মন চায়।
শোন শোন ও প্রেয়সী
পৃথিবী গ্রাস করছে আমায়, আমায় গিলে খাচ্ছে আস্ত
আমি অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছি ভেঙে পড়ছি টুকরো টুকরো হয়ে,
আমি ফিরব যে আবার,
আবার ফিরবো কান খাড়া করে, স্বদন্ত বের করে
তোর অন্তিম শ্বাসের হাহাকার শুনতে
কারণ আমার শহরে ফিনিক্স পাখিরা
কাক হয়ে জন্মায় ভরদুপুরে।
আমি আর অভিসম্পাত
দুটো টালির ঘর
বারান্দায় দুটি রাজকন্যা
দুটো মার্সিডিজ
ভেতরে আধুনিকারা লাল ফোয়ারা ওড়ায়।
দুটো হলুদ মলাট
ভেতরে সাম্রাজ্য পতনের গল্প
দুটো হাতের পলা
সত্যি শোনায় নাতি নাতনিদের অনেক না পাওয়ার।
দুটো আধখাওয়া সিগারেট
ফুসফুসের অন্তরালে রাজনীতি
দুটো পেন কিলার
সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনির আরামে।
দুটো মানুষ পার্কে
ঝোপ খোঁজে ভ্যালেন্টাইন সেলিব্রেটের
দুটো শ্বাপদ মোড়ের মাথায়
রড নিয়ে দাঁড়িয়ে, টিউশন থেকে ফিরছে মেয়েটা।
দুটো কলেজ পড়ুয়া
স্লোগান তোলে নিপাত যাক নিপাত যাক
দুটো রিটায়ার্ড বৃদ্ধ
গল্প করে বাড়ির প্রধানমন্ত্রীর।
দুটো গরু
উত্তর দক্ষিনে মুখ রেখে ঘাস খায় শান্তিতে
দুটো ভিন্ন দল
মঞ্চে ভাষন দেয় ‘আজ বিপন্নপ্রায় পশুতন্ত্র এ দেশে
দুটো তালগাছ
পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আশ্রয়স্থল হয়ে চীল শকুনির
দুটো বৃদ্ধাশ্রম
দিন গোনে অধীর হয়ে পার্মানেন্ট শেটেল এর।
দুটো কিন্নর
ট্রেনে, টোল ট্যাক্সে হাতের তালিতে চিকনা শব্দ ওঠায়
দুটো সমকামী
জীবন খুঁজে পায়, নাইট ল্যাম্পে জামার হাতা গোটায়।
দুটো পৃথিবী
দুটো সূর্য
দুটো বিজ্ঞান
দুটো দর্শন
দুটো বুর্জোয়াঁ
সবাই সবাইকে আলিঙ্গন করে, চুমোচুমি করে,
আমি হাসি। হাসি পাই আমার।ফিসফিসিয়ে বলি,
‘বেশ চলছে, চলতে থাকুক, আজরাইলের ডাক না শোনা অবধি।
উপসংহারে
মৃত্যু; পথ চেয়ে প্রিয় অভিভাবকের মত
দীর্ঘ দীপ্ত জীবন কিরণে ঝলমলিয়ে,
বিনিময়ে মাত্র স্মৃতির পাহাড়, সহমর্মিতা।
আপনজন অনেক গাছ
মাটির ঢেলা।
যেভাবে সৃষ্টি কাদা -মাটি, শেষ অন্তিম মাটি’র
উপসংহারে।
সেই খেয়াটা ডুবছে যখন
সাহারায় বালিঝড়
হারিয়ে যাওয়ার মিলিয়ে যাওয়ার
প্রতিক্ষায় দিন যাপন।
কালের নিয়মে আজ’-কাল
তবুও রয়ে যাবে
পরিশিষ্ট জরাজীর্ণ কবর -স্মৃতি ভস্ম
আর ‘জানাজা।
উম্মাদনার আগের গুলো
বৃষ্টি নেমেছে
আকাশে তোমার মুখ
বিদ্যুৎ এর বুদবুদে দেখা যায় অবয়ব
সৃষ্টিসুখ
শিলাবৃষ্টি নিয়ে শৈশব
নিমিষেই মিলিয়ে যায় স্মৃতি স্মরণ সব
মানসী, তুমি হারিয়ে যাচ্ছো।
বউ পুতুলের খোঁজে
ছেঁড়া কাপড়ের ভাঁজে… অনন্য সুখ
চেনা অচেনার ভিড়ে
চেনা আঁচলের নীড়ে… মায়ের মুখ
মা তোমায় ভীষন মনে পড়ে।
কুঠুরি কিংবা চারদেয়াল
ভেতরে অগুনতি আবেগ, চোখে গোলমাল
পুরাতন জমিদারির শব
পালিশ আবলুশ কাঠে, তখন সাবেক কাল
অনন্যা তোমার অন্দরমহলে যেতে বারণ।
প্রেম-অপ্রেম তীব্র বিষ
বুকের ভেতর সযত্নে রাখা বিষাক্ত মুখখানি
ভালোবাসা-বিরহ
নাভির ওপর সদ্য স্নানের বিন্দু মুক্তো পানি
নন্দিনী কে বলে তুমি নও তন্বী?
কানের দুল নাকি বিন্দু টিপ?
গোপনে মননে টিকিয়ে রাখা তার সবুজ জিভ
অতঃপর,
ওষ্ঠেওষ্ঠ রক্তারক্তি
ঘর্মাক্ত দেহ, জড়িয়ে পরস্পর
একটি ট্যারেন্টুলা
আরেকটি?
আচ্ছা বিশ্বাসঘাতক কি শুধু মিরজাফর?
জীবন্ত লাশ
নিরন্তর প্রচেষ্টা, অহেতুক হাঁটা,
পার্থিব কালোছায়ায় আবৃষ্ট তোমার অবয়ব
আমি তখনো বৃষ্টি দেখছি।
রাস্তায় নিয়ন আলো, আবছায়া জোরালো,
আমার সরলতায় হ্যারিকেন ছড়ানো,
তখন তোমার এলো চুলে মায়াবী উষ্ণতা মাখছি।
ভেজা সন্ধ্যা , রজনীগন্ধা,
টায়ারের ছাপে মোছা আমার বেখেয়ালী জীবন
তখনো আমি এক সুযোগ সন্ধানীর ফেরার আশায়।
বন্ধুদের মাঝে, ভালো আছির সাজে,
অ্যালকোহলের নেশায় দেখি তোমার দুলহানি বেশ ,
আমি তখন জীবন্ত লাশ হয়ে যায়।
জন্ম ১৯৯৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীতে।লেখালেখিতে নবীন।সাহিত্যচর্চা ছাড়াও গানের প্রতি তাঁর মোহ ছোট থেকেই।সোনামুখী কলেজের ছাত্র।