| 28 মার্চ 2024
Categories
ধারাবাহিক লোকসংস্কৃতি

নারী পুরুষের মিলন কাহিনী (পর্ব-১৭)

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

বিবাহ  মানব সমাজের প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান। যুগে যুগে প্রতিষ্ঠানটি এর আদি রূপ থেকে বর্তমান কাঠামোয় উপনীত হয়েছে। বিবাহপ্রথাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে প্রধানত ধর্ম। বিয়েসংক্রান্ত সকল নিয়মকানুন বিধিবদ্ধ হয়েছে ধর্মীয় অনুশাসনে। প্রাচীনকাল থেকে বাংলায় ধর্মীয় শাস্ত্রের বিধানই ছিল সামাজিক আইন, ধর্মীয় আইনের দ্বারাই শাসিত হতো সমাজ-সংসার। ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনের পাশাপাশি লোকজ সংস্কৃতিও বৈবাহিক জীবনকে প্রভাবিত করেছে নানাভাবে। মনুস্মৃতি এবং অর্থশাস্ত্রে আট প্রকারের হিন্দু-বিবাহ পদ্ধতির উল্লেখ আছে। ‘ব্রাহ্ম’, ‘দৈব’, ‘আর্য’, ‘প্রজাপত্য’, ‘অসুর’, ‘রাক্ষস’, ‘পৈশাচ’ ও ‘গান্ধর্ব’ এই আট ধরনের বিবাহের মধ্যে ব্রাহ্ম বিবাহই শুধু গ্রহণযোগ্য ছিল। দায়ভাগ গ্রন্থে জীমূতবাহন উল্লেখ করেছেন যে, ব্রাহ্ম, দৈব, আর্য, প্রজাপত্য এবং গান্ধর্ব বিবাহ অনিন্দনীয়। ধর্মশাস্ত্রের বিধান অনুযায়ী নিজ বর্ণের মধ্যে বিবাহ ছিল সাধারণ নিয়ম। সবর্ণে বিবাহ উৎকৃষ্ট হলেও মনু ব্রাহ্মণ পুরুষকে নিজ বর্ণ ছাড়া নিম্নতর তিন বর্ণে বিবাহের অধিকার দিয়েছিলেন। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে, যেমন চন্ডীমঙ্গলে, মুসলমানদের নিকা বিবাহের কথা বলা হয়েছে। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে, এমনকি বিশ শতকেও মুসলমানদের মধ্যে বহুবিবাহ ব্যাপক হারে প্রচলিত ছিল। উচ্চশ্রেণীর অবস্থাপন্ন মুসলমানদের একাধিক স্ত্রী থাকত। বিশ শতকের শুরুতে কুলীনদের বাইরে হিন্দু সমাজে বহুবিবাহ তেমন প্রচলিত ছিল না। বিয়ের এমন অনেক জানা অজানা বিষয়ে আলো ফেলেছেন ড. রোহিণী ধর্মপাল তাঁর এই ধারাবাহিক ‘নারী-পুরুষের মিলন কাহিনী’-তে। আজ থাকছে নারী-পুরুষের মিলন কাহিনীর ১৭ পর্ব।


Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com
সত্যবতী থেকে অনেকটা সরে এসছি। কিন্তু সেখানে আবার ফিরতেই হবে। নারী পুরুষের মিলন এর একটা আশ্চর্য অদ্ভুত দিক একদম ধরাই হয় নি এখনও । এই দিকটিকে মিলন বলব, কি বলব না, তাও জানি না । যদিও তথাকথিত বিবাহিত সম্পর্কেও অনেক সময়েই তো ঠিকমত মিলন হয় না, তবু তাকে আমরা মিলনই বলি; কারণ ওই, সমাজ অনুমোদিত যে! কোন প্রথার কথা বলছি, ইতিমধ্যেই অনুমান করেছেন নিশ্চয়ই । হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন একেবারে । নিয়োগ প্রথার কথাই বলছি।
আমরা শেষ দেখেছি সত্যবতীকে যখন ভীষ্ম তাঁকে নিয়ে এলেন দাসরাজার কাছ থেকে, শান্তনুর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হল এবং শান্তনু স্ত্রীকে নিয়ে নিজের ভবনে প্রবেশ করলেন।
সত্যবতীর গর্ভে পর পর দুইটি পুত্র জন্ম নিল। প্রথম, চিত্রাঙ্গদ, বাবার মৃত্যুর পর তিনিই প্রথম সিংহাসনে বসলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, তাঁকে তাঁরই সমনাম যুক্ত এক গন্ধর্ব এসে যুদ্ধে আহ্বান জানালেন। কারণ অদ্ভুত । নয় যুদ্ধ করো, নয় নিজের চিত্রাঙ্গদ নামটি পাল্টে ফেলো! অনেকটা উত্তর কোরিয়ার চূড়ান্ত স্বৈরাচারী শাসক কিম-জং-উনের মত স্বভাব যেন! কেউ ওর মত চুলের ছাঁট করলেও মরতে হবে! চিত্রাঙ্গদও বীর ছিলেন। শুরু হল যুদ্ধ, তিন বছর ধরে এই অকারণ যুদ্ধ চলল।
তারপর চিত্রাঙ্গদ হারলেন এবং মৃত্যু বরণ করলেন। ফলে রাজা হলেন ছোট ভাই বিচিত্রবীর্য্য। তাঁর জন্য তিন কাশী-রাজকন্যাকে হরণ করে আনলেন ভীষ্ম, যাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বোন অম্বার কথা আগেই বলেছি, যিনি এই বিয়েতে অসম্মতি জানিয়ে চলে গেছিলেন। পরের দুই বোন, অম্বিকা ও অম্বালিকার সঙ্গেই মহা ধুমধাম করে বিয়ে হল বিচিত্রবীর্য্যের। 
বিয়ের পর দুই সুন্দরী স্ত্রীকে পেয়ে মত্ত হয়ে উঠলেন তিনি।  এই দুই সুন্দরী রাণীই কিন্তু শ্যামবর্ণা মানে সোজা কথায় কালো ছিলেন। এই ফর্সা রঙ নিয়ে ফ্যাকফ্যাকানিটা একেবারে আমাদের ঔপনিবেশিক দাস মানসিকতার সবচেয়ে বড় মনস্তাত্ত্বিক প্রমাণ!!! যাক্,  কালো রঙে সামান্য কোঁকড়ানো  নীলচে চুলের ঢাল  লালচে নখ আর বেশ মাংসল স্তন আর নিতম্ব; অনেকটা দক্ষিণী মেয়েদের মত। বিচিত্রবীর্য্যের তো এমন নেশা ধরে গেল যে তিনি একেবারে “সর্ব্বাসামেব নারীণাং চিত্তপ্রমথনোহভবৎ”,  সমস্ত মেয়েদের চিত্তই আকর্ষণ করতে থাকলেন । অর্থাৎ শুধু দুই স্ত্রী নন, তাঁর আরো মেয়েদের প্রয়োজন পড়তে লাগল। আর এত এত বেশি যৌনতা শেষ পর্যন্ত তাঁকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিল। অতিরিক্ত কামের ফলে তাঁর দেহে বাসা বাঁধল যক্ষ্মা (নাকি AIDS!!!???) এবং সমস্ত চিকিৎসকদের মিলিত চেষ্টা ব্যর্থ করে, হস্তিনাপুরের সিংহাসনটিকে ফাঁকা করে তিনি মারা গেলেন!
এইবার! এইবার কি হবে উপায়! ব্যাকুল সত্যবতী ভীষ্মকে ডেকে পাঠালেন। তাঁকে বললেন, “বাপু! নয় তুমি এই সিংহাসনে  বস অথবা এই দুই রাণীর গর্ভে সন্তান তৈরি করো”। 
বিয়ে করো বলেন নি কিন্তু একবরাটিও! ভীষ্ম তো সরাসরি না বললেন আর সত্যবতীর হাজার বোঝানোতেও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে নড়লেন না। কিন্তু একটা অদ্ভুত কাহিনী শোনালেন।
সেই যে পরশুরাম, একুশটি বার ক্ষত্রিয়দের মেরে নির্বংশ করে তবে রেহাই দিয়েছিলেন নিজেকে, তারপর তো পৃথিবী ক্ষত্রিয়শূন্য হয়ে গেছিল, তখন ক্ষত্রিয়-মেয়েরাই আবার বাঁচিয়ে তুলেছিলেন ক্ষত্রিয় সমাজকে। কীভাবে? তাঁরা  সোজা লাজলজ্জা ত্যাগ করে চলে গেলেন ব্রাহ্মণদের কাছে, আর তাঁদের সঙ্গে মিলিত হয়ে একের পর এক সন্তানের জন্ম দিতে লাগলেন।   আর পাণিগ্রাহস্য তনয় ইতি বেদেষু নিশ্চিতম্ অর্থাৎ ক্ষেত্রজ সন্তানে পরিণেতার অধিকারই নিশ্চিত জেনে নতুন করে আবার ক্ষত্রিয় জাতি সৃষ্টি করলেন। সুতরাং এই ভাবে সন্তান উৎপাদন করাই যায় । 
এছাড়াও আরেকটি গল্প বললেন ভীষ্ম, যার মধ্যে আবার আরোও গল্প জড়িয়ে মড়িয়ে ঢুকে আছে । রীতিমতো অদ্ভুত সে গল্প । সেখানে ধর্ষণ আছে, অধার্মিক বরকে পরিত্যাগ করা আছে আবার নিয়োগপ্রথার বিষয়ও আছে ।
উতথ্য আর মমতা । পরম সুখী এক ঋষি দম্পতি। এই উতথ্যের ভাই হলে দেবগুরু বৃহস্পতি । সেই কচের বাবা। একদিন, এই বৃহস্পতি এলেন উতথ্য-মমতার আশ্রমে। মমতা সেই সময় অন্তঃসত্ত্বা । কিন্তু মমতাকে দেখে এমন তাড়না জাগল বৃহস্পতির, যে তিনি নিজেকে আটকাতে পারলেন না। মমতা অনেক ভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেন। বললেন, আমি গর্ভবতী, আপনার বড়বৌদিদি। ছেড়ে দিন আমাকে! কাকস্যপরিবেদনা! বৃহস্পতি তাঁর শিশ্নটিকে মমতার অভ্যন্তরে প্রবেশ করাতে যাবেন, গর্ভস্থ ভ্রূণটি কথা বলে উঠল! “জ্যেঠু, এখানে জায়গা বড্ড কম, আপনার বীর্য তো অব্যর্থ, তাই সেখান থেকেও নির্ঘাত আরেকটি ভ্রূণ তৈরি হবে! একে তো আমি আগে এসছি, তার উপর এইটুকু জায়গায় ঠাসাঠাসি হলে আরো কষ্ট পাব! আপনি কথা শুনুন। সরে যান”!
নাঃ! বারণে থামার লোক তো বৃহস্পতি নন, আর তাছাড়া কামকে সংযত করতে পুরুষ আরো কম পারে, বৃহস্পতি থামলেন না এবং তাঁর বীর্য বেরিয়ে এল। সেই ভ্রূণ তখন করল কি জানেন? নিজের পা  এমন ভাবে মেলে ধরল, যাতে বীর্য ভেতরে আসতেই না পারে এবং হলোও তাই। বীর্যটি বাইরে পড়ে গেল!
রাগে অগ্নিশর্মা বৃহস্পতি, ধর্ষণ করতে এসে বাধা পেয়ে ধর্ষকের রাগ তো বাড়বেই, কোথায় সবাই মিলে ধর্ষণে সহযোগিতা করবে ইত্যাদি; তা না! বাধা! প্রথমে মমতা নিজে, তারপর তার ভ্রূণটি!!! বৃহস্পতি অভিশাপ দিলেন তুই ব্যাটা অন্ধ হবি! ধর্ষণের জন্য কিন্তু বৃহস্পতির কোনো শাস্তিই হল না । বরং ওই ভ্রূণটি সত্যি অন্ধ হয়ে জন্মাল। নাম হল দীর্ঘতমা। দীর্ঘ দিন ধরে যাকে তম বা অন্ধকারে থাকতে হবে, তাই সে দীর্ঘতমা ।
এই দীর্ঘতমা বড় হলেন। পড়াশোনা শিখলেন ভালোই। প্রদ্বেষী বলে এক বামুনমেয়েকে বিয়ে করলেন। সন্তানাদিও হল। কিন্তু আশ্চর্য এই যে তিনি সুরভীনন্দন কামধেনুর থেকে গোধর্ম শিখে যেখানে সেখানে যখন তখন সঙ্গম করে বেড়াতে শুরু করলেন। গোধর্ম মানেই তাই। পশুদের মত যত্রতত্র সঙ্গম এবং প্রকাশ্যেও। আশ্রমের বাকিরা তো অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেনই,  সবচেয়ে রেগে গেলেন তাঁর স্ত্রী। এবং আশ্রমের সব্বাই তাঁকে ত্যাগ করলেন। এমনকী একদিন তাঁর ছেলেরা মিলে তাঁকে বেঁধে ভেলায় করে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দিল ।
 বলি নামে এক রাজা, সেই প্রহ্লাদের নাতি নয় কিন্তু, ইনি অন্য, দীর্ঘতমাকে এই অবস্থায় পেয়ে তুলে রাজপ্রাসাদে নিয়ে গেলেন বলি। আর নিঃসন্তান এই রাজা মুনিকে অনুরোধ করলেন তাঁর স্ত্রী সুদেষ্ণার গর্ভসঞ্চার করতে! কিন্তু ওই অন্ধ বুড়োর কাছে কে যাবে!! তাই সুদেষ্ণা দীর্ঘতমার কাছে পাঠিয়ে দিলেন তাঁর ধাইমার মেয়েকে। কি? গল্প চেনা চেনা লাগছে তো? ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি সাহিত্যে!! এবার, সেই মেয়েটির গর্ভে এগারোটি পুত্র জন্মানোর পর রাজা জানতে পারলেন ভেতরের কথা। তখন সুদেষ্ণাকে আবার পাঠালেন মুনির কাছে। মুনি বুঝলেন রাণীর বিরাগ, তিনি শুধু স্পর্শ করে রাণীকে বললেন, আপনার পাঁচ পুত্র হবে আর তাদের নামে পাঁচটি প্রদেশ তৈরি হবে– অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ, পুণ্ড্র ও সুহ্ম। এখন এই স্পর্শ দিয়ে জন্মানোর কল্পনাকে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করাই যায়, কারণ শুধু ছুঁলে তো আর ভ্রূণ তৈরি হয় না!
এই দুই কাহিনী বলে ভীষ্ম বললেন সত্যবতীকে, যে এইরকম ভাবে কোনো গুণবান ব্রাহ্মণকে ডেকে আনুন আর নিয়োগ প্রথার মাধ্যমে বিচিত্রবীর্য্যের স্ত্রীদের মা হওয়ার পথ করে দিন।
সেই শুনে সত্যবতী ডেকে পাঠালেন পুত্র দ্বৈপায়ন বা ব্যাসকে।
একটা কথা এখানে বলার। অতিরিক্ত যৌনতার জন্য হোক বা অন্য কোনো কারণ হোক; অনেক সময়ই দেখা যাচ্ছে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা থাকছে না । আর সন্তানাদি না হওয়ার জন্য কিন্তু স্ত্রীয়ের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে না। বিশেষ করে নিয়োগ প্রথার প্রয়োগ যেখানে স্বামী থাকতেও হচ্ছে, সেখানে তিনি কিন্তু মেনেই নিচ্ছেন যে যা কিছু সমস্যা, তা তাঁর । তাঁর স্ত্রীর নয়। এই প্রসঙ্গে মনুসংহিতার একটা শ্লোকের উল্লেখ না করলেই নয়।
পুমান্ পুংসোহধিকে শুক্রে স্ত্রী ভবত্যধিকে স্ত্রীয়াঃ।
সমেহপুমান্ পুংস্ত্রীয়ৌ বা ক্ষীণেহল্পে চ বিপর্যয়ঃ।।
মনুসংহিতা তৃতীয় অধ্যায়ের ঊনপঞ্চাশতম শ্লোক। গুরুত্বপূর্ণ হল দ্বিতীয় পংক্তিটি। এখনও, এই একবিংশ শতকেও সন্তান না হলে স্ত্রীকে দায়ী করা হয়। আধুনিক শিক্ষিত পরিবারেও সমস্যা হলে আগে মেয়েটিকে সমস্ত রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। মেয়েটির কোনো ত্রুটি না পেলেই তবেই স্বামীর পরীক্ষার পালা আসে এবং অনেক সময় সে পরীক্ষা আর হয়ই না। শুধুমাত্র সন্তানহীনতার দোহাই দিয়ে মেয়েদের জন্য কত অবমাননাকর শব্দ তৈরি হয়েছে, তার পুং শব্দগুলি ব্যবহৃতই হয় না। আঁটকুড়ি, বাঁজা, বন্ধ্যা বলতে মেয়েদেরই বোঝাই। এই একটা মাত্র কারণ কত হাজার মেয়েকে ঘরের এক কোণে ঠেলে দিয়েছে । বীরপুঙ্গব পুরুষটি আবার বিবাহ করতে গেছে। এই তো কিছু বছর আগে অস্তিত্ব সিনেমাটির কথা মনে করুন । নায়িকা ঘটনাচক্রে আরেকজন পুরুষের সঙ্গে মিলিত হয় ও গর্ভবতী হয়। তার আগে ও পরে স্বামীর সঙ্গে শত চেষ্টাতেও সে গর্ভবতী হতে পারে নি। প্রাচীন ভারতের নিয়োগপ্রথাকে আমরা খারাপ বলি, কিন্তু ওই প্রথা অন্তত একথা প্রমাণ করে যে স্বামীর প্রজননের ক্ষমতা নেই, তাই অন্য পুরুষের প্রয়োজন, এই সত্য তাঁরা জানতেন।
উপরের শ্লোকটির দ্বিতীয় পংক্তির অর্থ হল স্ত্রী বা পুরুষের বীর্য ক্ষীণ বা অসাড় অর্থাৎ inactive হলে, অথবা অল্প হলে গর্ভ উৎপন্ন হয় না।
 মহাভারতের যুগে এই বৈজ্ঞানিক সত্য আমাদের জানা ছিল যে সন্তানহীনতার জন্য নারী বা পুরুষ, উভয়েরই অসামর্থ্য থাকতে পারে। সন্তান না হলে তার দায় কেবল মেয়েদের নয়!
অথচ, এখনও, এই বিজ্ঞানের যুগে, প্রযুক্তির যুগে, এই সত্য আমরা জানি না বা না জানার ভান করে চলেছি; যূপকাষ্ঠে বলি দিয়ে চলেছি মেয়েদেরই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত