আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
একতারা-জীবন
অল্প একটু মধ্যবিত্ত সুলভ চড়ুই-আলো
নেচে উঠলেই
আপামর মধ্যবিত্ত গলা ছেড়ে দেয়,
অন্তত তার সম্ভাবনা থাকে।
যদিও এখন আলো সম্বন্ধে কোনো বক্তব্য থাকতেই পারে না।
তুমুল হৈচৈ-এর বুদবুূদ ওঠা অ্যাকোরিয়াম একটা। সহবাসী মাছেদের মতো
সহযাত্রীদের থেকে পিছন ফিরে বসে
সারাক্ষণ বরং মেয়েটি চোখের জল আড়াল করে গেল, তার পিছনে অন্যদের বিবিধ সন্দেহ
সে কাঙ্ক্ষিত স্টেশন জনশূন্য দেখবে না,
বদলে অফুরন্ত সূর্যাস্ত গুনেছে –
ট্রেন ভর্তি আলো থাকলেও সে জানে
তার কেবল একটা একতারা-জীবন;
অন্ধ মেয়েটি যেমন
একটাই তার বাজিয়ে চলেছে
কামরার পর কামরায়
অতিমারী সংক্রান্ত
ক্রমশঃ দ্রাঘিমারেখা সরে যায়।
গর্ভধারিণী তত ভিজে-পা হাঁসের পথ ধরে
নিরালা বৈকল্যের ভেতর মুখ গুঁজে থাকে
বহুদিন লন্ঠনে কালি সারানে হয়নি,
ঘর অন্ধকার শুকতারায় বিশ্বাস পাঠ করলো – তবু এইসব মারী আর বিষুখের দাবানলে
হৃদয়ের মতো কোনো লিপি
সুবাতাসে লিখতে পারিনি…
দরজায় ধুলো জমেছে, মাগো, কত পুরু ধুলো!
কতটা গরীব – কতটা অসফল জলস্তর –
দুর্দান্ত সাবানের ফেনাতেও
দ্রাঘিমা ও কর্কটক্রান্তি রেখা
বসার একটা সামান্য মোড়াতেও
আঁটবে কিনা সন্দেহ!
প্রবাদ
…ওপারে আছে অগাধ শস্যখেত
সম্পূর্ণ নীল একটা আকাশ
সুমিষ্ট একনদী জল -! আরও কিছু চাই?…
আচ্ছা, তোমার জন্য আরও একটু বরাদ্দ –
সেখানে খেলা করছে স্বাস্থ্যবান শিশুরা।
প্রবাদ হলো, একটা দরজা আছে। যদি খুঁজে পাও তবে দেখবে সেটা এত ছোট –
হয়তো বুকে হঁটে ঢোকা যায়;
তবে ঢোকবার আগেই তুমি দেখতে পাবে
তোমার দিকে বন্দুক তাক করে আছে
পাথরের মতো মুখওয়ালা সেপাই
প্রথম প্রবাদ – দরজাটা আছে জানো,
কিন্তু দরজাটা তুমি খুঁজে পাবে না কোনোদিন
পড়শি, তোমায় বলি
তবুও তোমারই দু-হাতে আমার সমূহ বিনাশ
টেলিফোনের খুঁটিটি সুপ্রাচীন।
তা থেকে মুক্ত – কাটা ঘুড়ি মন্দ্র বনপথে
ভ্রমণের মতো উড়েছে অভীষ্টের দিকে
মরণই স্থির বাজে হাওয়ার বৃন্দগানে। আমাদের সব গেছে,
কোনো জন্মে ঘটেছিলো যা সব…!
আকাশের দেওয়ালে অক্ষয় স্মৃতিজরুলের মতো
চাঁদকে ঝুলিয়েছে কেউ,
শিস দিয়ে ফক্কুরে নক্ষত্র রফির দু’কলি হিন্দির পর দুটো পাক দিয়ে নেয়
তবু বিনাশই সত্য,
মরীচিকা-আকাশ ফাজলামি করবে,
ঘুরে ঘুরে ঘুড়ি কথা বলে যাবে শুধু…
যেমন বটফল, খসে পড়ছে – পড়ছে – তারপর হঠাৎ ফ্রিজ শট –
ঘুড়িও এগোলো, অচেনা করতলে মকরস্নানের প্রত্যাশী সে – করতলও কিছু জলমগ্ন –
একটা মারণ হাইফেনের মতো
মাঝখানে দাঁড়ালো অনুজীবের অতিমারী – আর দুর্দান্ত একটা ফ্রিজ শটে জমানা দাঁড়িয়ে থাকলো –
ছোঁয়া বারণ, বুকের কাছে হাতজোড়
পূর্ব বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর অঞ্চলের অজ পাড়াগাঁয়ের ধুলোবালিতে জীবনের অনেকটা। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। শিক্ষকতার বৃত্তি। কবিতা প্রথম প্রেম। প্রকাশিত কবিতার বই এখনও পাঁচটি। গদ্যের বই তিনটি গদ্যগ্রন্থের মধ্যে ‘দক্ষিণ দামোদর জনপদ’ উপন্যাস, যেটি সাম্প্রতিক কালে ‘সাজি’ পত্রিকা কর্তৃক অজিত রায় স্মৃতি সম্মাননা লাভ করেছে।