বিদায় কবি মুশাররাফ করিম
১১ জানুয়ারী রাতে না ফেরার দেশে চলে গেছেন কবি মুশাররাফ করিম। ইরাবতী পরিবার শোকাহত।ইরাবতী পরিবারের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।
কোথায় গিয়ে স্থিত হয় মানুষ কেন আসে মানুষ কেন চলে যায়? কোথায় গিয়ে তাহারা ঢেরা বাঁধে স্থিত হয় লুকানো-ছাপনো এই নিগূঢ় মাহাত্ম; মুনি-ঋষিগণ গবেষণা করেও পায়নি কুল। তবু মানুষ আসে তবু মানুষ চলে যায় পরে থাকে ঘর-সংসার মালা ও মোহর, সঙ্গে নিয়ে যাওয়া সাধ্যেরও অতীত শূন্য হাতে আসে শূন্য হাতে চলে যায়। যাবো আনন্দ শয়নে সন্মত না হয়ে কোথায় যাবে, কোথায় লুকাবে আমায় আড়াল দিয়ে? খুঁজে আনবো সাত-সমুদ্র সেচে পাহাড় যতো ‘দশ হাত খুঁড়ে,বিশ হাত খুঁড়ে’। তোমায় আমি না পাই যদি বন-বাদাড়ে; ভিখিরির মতো ঘুরবো দ্বারে দ্বারে পেয়ে যাবো তোমায় একদিন দেখা নিশ্চিত সিঁড়ি ঘরে জাপটে ধরবো তোমার পা,যাবো আনন্দ -শয়নে। রোহিঙ্গাদের লাশ যেনো নাফ নদীর ঢেউ আপনি এসে দেখে যান গৌতম বুদ্ধ আপনার শান্তির ধর্ম অনুসারীদের হিংস্রতায় মিয়ানমার আজ মৃত্যু উপত্যকা হাজার বছরের শস্যমালায় আবৃত শান্তিভূমি রাখাইন ভাসছে রক্তগঙ্গায়। পাখিদের কোলাহল ছাপিয়ে ভাসছে মানুষের আর্তনাদ বর্মার বর্বর সেনাদের ব্রাশ ফায়ারে চাপা পড়ছে সেই শ্বাশত শ্লোক-‘বুদ্ধনং শরনং গচ্ছামি’ সমস্ত রাখাইন আজ এক হাবিয়া দোজখ ঘরে ঘরে দিচ্ছে আগুন কেড়ে নিচ্ছে মুখের ভাত ক্ষুধাতুর শিশু মায়ের স্তনে মুখ রেখে চুষছে রক্ত আগ্নেয়াস্ত্রে নিহত রোহিঙ্গাদের লাশ যেনো নাফ নাফ নদীর ঢেউ। তারা স্বজনের মরদেহ কাঁধে ফিরছে বাংলাদেশে বানের পানির লাহান বাংলাদেশে নামছে রোহিঙ্গাদের ঢল নিরুপায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা দেখছে সভ্যতার পতন আর ক্ষমতার মসনদে মূক ও বধির হয়ে নির্বিকার বসে আছেন নির্লজ্জ অং সান সুচি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এরদোগান পুতিন দেসমন্ড টুটু দালাইললামার প্রতিবাদ আর আহ্বান তার কানে ঢুকছে না দিব্য জ্যােতিস্মান হয়েও সে জন্মান্ধ তাহলে ‘জীব হত্যা মহাপাপ’ আপনার এই মহার্ঘ বাণী কি সত্যি সত্যি মিথ্যায় পর্যবসিত হবে। কোন অপরাধে রাখাইন আজ মৃত্যু উপত্যকা আমরা এই উপত্যকা চাই না,আমরা চাই না পাখিদের মতো রোহিঙ্গাদের নির্মম মরণ অবিলম্বে বন্ধ হোক রাখাইনে গণহত্যা নইলে রোহিঙ্গারাও সাপের মতো ঘুরে দাঁড়াবে গোটা বিশ্বও থাকবে তাদের পাশে।
