আজ ০৪ এপ্রিল কবি পৃথা রায় চৌধুরীর শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
এখন কবিতা
তোমার তাতে কিই বা এসে যায়
যখন দেখো, সমস্ত শব্দেরা আমার শহর ছেড়ে
তোমার সাথে ঢুকে পড়েছে
স্বেচ্ছায় বেছে নেওয়া তোমার একাবাড়ি।
কার মনে পড়ার কথা নয় প্রশ্নের উত্তরে
আমার নাম আসে নি তোমার মনে…
ধন্য ধন্য বর্ষা নামে বারুদ সমেত
যে গান শুনতে চেয়ে চলে গেছ
সে গান ঠোঁটে রাঙিয়ে বেড়াই
কানে পরে থাকি, তোমার প্রিয় ‘নন্দর মা’
তোমার দিয়ে যাওয়া স্বরে;
এখন ছাতার নিচে হাঁটি
রোদ পেরিয়ে বৃষ্টি নেয়ে
তোমার থুতনিতে কটা সাদা গোনার অপেক্ষায়…
দিনক্ষণতারিখের গল্প,
তুমি এলে হবে।
ব্রেকিং নিউজ
বর্ষা লিখেছিলে এক খোলা খাতায় বিরহী প্রেমিক
মুখোমুখি চেয়েছিলে ঝাপসায়, ঝড়সঙ্গিনীর প্রাচীনে
টুকে রেখেছ মৃত্যুজুয়ার ফলাফল দৈনিক;
কখনো শূন্যে, কখনো কাঁধের ওপর মন্দিরে
বহু মিথ্যাচারের পলি চেপে সোনালি বামন শরীরে,
আগুন! তবু আতসকাঁচ ধুয়ে রাঙায় সূর্য জন্মসন্ধানে…
অজানা প্রহরকাঁটা ক্ষরা বোনে শ্বেতজমিনে
কাহিনী নবছলনার
খোলা জিভ মৃত কলম, চলকে পড়া চা-দাগবালিশে
চাটে সমুদ্র গড়ার দায়
আজকের পেয়ালা শিরোনামে একক সংবাদ,
জুড়িয়ে জল হওয়া চা আজও তার প্রিয় পানীয়।
বৃষ্টি শেষে
মানুষ জঙ্গলে বুনো ঘোড়া
আকাশী পোষ না মানা ক্ষণ,
ভাঙ্গা অক্ষর দেখা যায়নি।
চোখের তারার নামে লেখা
সন্ধ্যের আঘাটা, বর্ষা নামার সময়
জান্তব শ্বাস বেড়াল চলনে।
শোধের নাম ছুঁড়ে দেওয়া;
রক্তকরবী ফুটে ওঠে…
নয়া রিংটোন, শাসন,
থইথই সমুদ্দুর।
মেঘেরা বিষাদ ঝরিয়ে
শিউলি হেসে ভালোবাসি বলে,
সাদা পাতায় দখলদারী।
এই প্রথম… তোমাকে…
ফিরে সন্ধান
একটা না শোনা, একটা ধারালো শোনার
অবধি পেরিয়ে সোনার তরোয়ালময়
বেশ পিস-অনুপিস, পিসানুপিস বোঝাবো
খাঁ খাঁ ফাঁকি টুকির মনখারাপ, এরপরেই
দিবস রজনী কাটে না, যাবতীয় গোপন।
হাতে ঘিলু হাতে লাবডুব, সামাল সামাল
তুমি কামাল, কেমন করে ঘূর্ণিপাক খাচ্ছি;
যেমন করে ইচ্ছাকৃত ঢোঁকের পরে ঢোঁক জব্বর
শান্ত চালাক টুনিলাইট যখন তখন ঝিকিরমিক,
যখন অবাকভরা নামঠিকানার টেলিস্কোপ।
দেবদাসী, তোমার কালির রঙ নির্ণয়
এই ঘোর কোকিল ডাকায় কি সম্ভব?
৫০০% বুঝেছ…?
বারুদকে চুমু খেয়ে দেখেছি,
জ্বালা হয় না, দেগে যায় শুধু
উল্লাসী শিহরণ কোনো এক
ভিড়ভাট্টা সন্ধ্যে ঝিলের
দেখুক গে অবকাশ।
মানে, বারুদ আমাকে চুমু খেলো
বলল, এক বুলেটে নাম লিখবো তোর,
ততক্ষণ জবরদস্তি হারানো চৌমাথায়
অনবরত দূরোফোন গান ফাঁকেও
বিষাক্ত হোক নিঃশ্বাস।
কত সহজে স্বীকার করলে,
বারুদে আগুন হঠাৎ নৃশংস
মায়াময়।
সম্মুখবর্তী
দেখো কতো বিরক্ত তুমি
দুই ভ্রূর মাঝ বরাবর
টানটান শিরদাঁড়া
সটান উঠে গেছে বিরক্তিদাগ।
এই যে তুমি ভালোবাসো,
বা ভালবেসেছিলে,
কেমন যেন গল্প শেষের
নটেগাছটি হয়ে গেছে।
যেখানে নিজের মুখোশের ভয়
নিজেই পাও,
সেখানে খুঁজে চলো
সে যেন কোন দোষে দোষী!
সিঁড়ির জেদি ধাপে দাঁড়িয়ে
বেশ কষে চেল্লাও
দূর হয়ে যাও সাচ্চা মুখ
নসীবে শুয়েছে তিনটি বলিরেখা।
আরশি দেখে ফেলে
অন্ধকার চক্ষু কোটর;
চেয়ে আছে অখণ্ডচারী প্রতিবিম্ব
… কে?
