কোয়ারেন্টিন শব্দটির জন্ম
‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দটির উৎপত্তি ইতালিয় ভাষার শব্দ ‘কোয়ারেন্টিনা’ থেকে। আমাদের এই মুহূর্তে বহুল ব্যবহৃত ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দের অর্থ ‘৪০ দিন’। কথাটির উৎস হয়েছিল প্লেগের সময়। প্লেগের সংক্রমণ রুখতে টানা ৪০ দিন ধরে নগরাঞ্চল থেকে জাহাজব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছিল। এই সময়টাকেই লোকেরা মহামারি প্রতিরোধের সময়সীমা হিসেবে পরিমাপ করতে থাকে।
১৩৪৭ থেকে ১৩৫২.. বছরকয়েকের এই কুখ্যাত ‘ব্ল্যাক ডেথ’ ইউরোপের জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ নিশ্চিহ্ন করে ফেলে। বাদ থাকে না এশিয়াও। এশিয়ার জনসংখ্যার এক বিরাট অংশও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এই মহামারিতে।
১৩৭৭ খ্রিস্টাব্দের একটি তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, সেকালের রাগুসা, একালের ক্রোয়েশিয়ার অন্তর্বর্তী ডুব্রোভনিক শহরে প্রবেশ করার আগে অনুপ্রবেশকারীদের একটা ‘স্ক্রিনিং’-এর মধ্য দিয়ে যেতে হত। কী ছিল সেই ‘স্ক্রিনিং’?
দেখা হত অনুপ্রবেশকারীদের শরীরে ব্ল্যাক ডেথের উপসর্গগুলো রয়েছে কি না। এই উপসর্গ বোঝার জন্য তাদের এক নিকটবর্তী দ্বীপপুঞ্জে ৩০ দিনের জন্য ‘রেসট্রিক্টেড’ পিরিয়ডে রাখা হত। দেখা হত, প্লেগের উপসর্গ এই ৩০ দিনে প্রকট হয়ে ওঠে কি না। আমাদের এখনকার অতিপরিচিত ‘ইনকিউবেশন পিরিয়ড’-এর মতো! এই ৩০দিনের সময়সীমাকে বলা হত ‘ট্রেন্টিন’।
১৪৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভেনিশিয়ান সেনেট এই পর্যবেক্ষণের সময়সীমা ৩০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৪০ দিন করে দেয়। আর সেখান থেকেই ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দটির জন্ম।
৪০ দিনের এই কোয়ারেন্টিন প্লেগের সংক্রমণ ঠেকাতে অনেক বড় ভূমিকা নিয়েছিল। কারণ, বিউবোনিক প্লেগের সংক্রমণ থেকে মৃত্যু পুরো ব্যাপারটাই ৩৭ দিনের মধ্যে পরিষ্কার নজরে আসত।
তাই, মহামারির প্রাদুর্ভাব রুখতে সেকালের মতো একালেও কোয়ারেন্টিনের ভূমিকা যে অনস্বীকার্য, একথা বলাই বাহুল্য।
কৃতজ্ঞতা : ১৯/২০