মধ্য কলকাতার একই পাড়ায় থাকতাম আমি আর শৈবাল মিত্র । আমি তাঁর নাম জানতাম । কিন্তু কোনদিন দেখা হয় নি আমাদের । তার কারণ আছে । শৈবাল তখন নকশাল রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে। আর আমার কাছে সে রাজনীতি ‘সংর্কীণতাবাদী রাজনীতি’ । তারপরে আমি দক্ষিণ কলকাতায় চলে আসি। বন্ধুদের মুখে শৈবালের কথা শুনতাম । শৈবাল অধ্যাপনার কাজ নিয়েছেন । উপন্যাস লিখছেন । অবশ্যই রাজনৈতিক উপন্যাস । তাঁর ‘যৌবরাজ্য’, ‘জেগে আছে একজন’, ‘কলির শেষ’, ‘নরাধম’, ‘মাথ নিশীথের কোকিল’, রসাতল’, ফায়ারিং স্কোয়াডে ভোর’-এসব উপন্যাস পড়েছি । দেখেছি একবগ্গা ভাব তাঁর মধ্যে নেই, শ্লোগান আর সাহিত্যের পার্থক্যটা তিনি মাথায় রেখেছেন ।
গোরা বা চৈতন্যদেবকে নিয়ে তিনি একটা উপন্যাস লিখছেন, এ কথা শুনে অবাক হয়েছিলাম একটু । মতাদর্শগত গোঁড়ামি থাকলে তাঁর পক্ষে এ উপন্যাস লেখা সম্ভব হত না । অনুমান করতে পারি, তখনও তাঁর কিছু গোঁড়া বন্ধু ছিলেন এবং তাঁরা নিশ্চয়ই ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন । প্রথম প্রকাশের [২০১২ ; তাঁর মৃত্যুর পরে] আট বছর বাদে তাঁর ‘গোরা’ হাতে এল আমার । ৬৩৪ পাতার ঢাউস বই । পুনরুক্তি আছে, বিবৃতিমূলকতা পাঠে বিঘ্ন ঘটায়, কোন কোন বর্ণনায় অসঙ্গতি দেখি । তথাপি এ বই অসামান্য । ভক্তদের হাতে চৈতন্য ফুল-মালা-চন্দন-কৃষ্ণাবতারের আচ্ছাদনে সম্পূর্ণ ঢাকা পড়ে গেছেন । চৈতন্যের ভক্তিকে অস্বীকার না করেও আমাদের সামনে হাজির করেছেন এক রক্তমাংসের চৈতন্যকে । এটাই আমাদের পরম প্রাপ্তি ।
এ উপন্যাস হেলাফেলা করে লেখা নয় । পূজো সংখ্যার তাগিদ মেটানোর জন্য লেখক চটজলদি লিখে ফেলেন নি । এর রচনার পেছনে প্রায় একষুগের সন্ধান ও শ্রম । বইএর শেষে বিশাল গ্রন্থপঞ্জি [১০৮টি] দেখলে কিছুটা বোঝা যায় । অন্যসূত্রে জানা যায় নবদ্বীপ-গয়া-বৃন্দাবন-শ্রীহট্ট-নীলাচল প্রভৃতি চৈতন্যস্পর্শবিজড়িত স্থানগুলি পরিদর্শন করেছেন গবেষকের মন নিয়ে । চৈতন্য সম্পর্কিত আরও অনেক বই যে তাঁর পড়া হয় নি সে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে । তাঁর মতে রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে যত বই লেখা হয়েছে, চৈতন্য সম্পর্কে তার চেয়ে অনেক বেশি লেখা হয়েছে । শৈবাল যে মতবাদে বিশ্বাসী ছিলেন, তাতে চৈতন্যকে তিনি নিখাদ সমাজ বিপ্লবী হিসেবে হাজির করতে পারতেন । তা তিনি করেন নি । করলে ইতিহাসের প্রতি অবিচার করা হত। কৃষ্ণপ্রেমে বিহ্বল চৈতন্যদেবের অবিকল মূর্তি এঁকেছেন তিনি, তাঁর দিব্যোন্মাদ অবস্থার ছবি দেখিয়েছেন, সেই সঙ্গে বলেছেন বাল্যে তাঁর মৃগী রোগের কথা । সন্ন্যাস নিয়েছেন চৈতন্য, না নিলে সেই মুহূর্তে সুলতান হুসেন শা্হ ও কাজীর রোষ থেকে রেহাই পেতেন না । রেহাই পেতেন না গোঁড়া ব্রাহ্মণদের রোষ থেকে । এই সব ব্রাহ্মণরা ভক্তিমার্গকে অশ্রদ্ধা করতেন, চৈতন্যের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় শঙ্কিত ছিলেন । সুলতানের কাছে ক্রমাগত অভিযোগও করে যাচ্ছিলেন তাঁরা । বিধবা নারায়ণীর গর্ভসঞ্চারের ঘটনায় তাঁরা চৈতন্যের উপর প্রতিশোধ গ্রহণের সুযোগ পেয়ে গেলেন । এই হল সন্ন্যাস গ্রহণের প্রেক্ষাপট ।
কৃষ্ণপ্রেমে দিব্যোন্মাদ চৈতন্য কিন্তু সমাজবহির্ভূত ছিলেন না । বাল্য থেকেই [পৃথক জিনের কারণে ?] গোরা ব্যতিক্রমী ছিলেন । তাঁর দাদা ‘বর্ণপরিচয়ের’ গোপাল হলেও তিনি ছিলেন অবিমিশ্র রাখাল । দুষ্টুমি ও নষ্টামিতে তাঁর জুড়ি ছিল না ।
থোড়াই কেয়ার করতেন ব্রাহ্মণ সমাজের প্রচলিত নিয়ম-কানুন ও রীতি-নীতিকে । রঘুনাথ শিরোমণির চতুষ্পাঠী ছেড়ে দিয়ে সারাদিন ঘুরে বেড়াতেন টং টং করে । ‘ম্লেচ্ছপল্লি’, ‘শূদ্রপাড়াতে’ বেশি দেখা যেত তাঁকে । অজাত-কুজাত ছেলেদের সঙ্গে তাঁর মেলামেশা, ওঠাবসা, নাচ-গান-নাটক নিয়ে মজে থাকা । খুব বিস্তৃত করে এসব দেখিয়েছেন শৈবাল । কারণ চৈতন্যকে ‘ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার’ আবর্তে এনে ফেলতে হবে । গণসংযোগ প্রকৃত নেতার অবশ্যম্ভাবী গুণ । সে গুণ চৈতন্যের মধ্যে ছিল সহজাতভাবে । কাজীর বিরুদ্ধে মিছিলে তার প্রথম প্রকাশ । সে মিছিলের সাফল্য চৈতন্যকে আরও উদ্বুদ্ধ করেছে ।
চৈতন্যের আরও একটা দিক শৈবাল মিত্র আলোকিত করেছেন । তাঁর মতে পাঁচশো বছরের বেশি সময় ধরে চৈতন্য অপ্রতিদ্বন্দ্বী বাঙালি ব্যক্তিত্ব, হাজার বছরের বাঙালি জাতির ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ মানুষ চৈতন্য। ‘চুয়াড়’ বাঙালিকে তিনি সহবত, সৌজন্য শিখিয়েছিলেন, নামের আগে ‘শ্রী’ ও ‘শ্রীমতী’ ব্যবহার করতে শিখিয়েছেন, সৌজন্য বিনিময়ের জন্য হাততুলে নমস্কার করতে শিখিয়েছেন ।‘ব্রাবৈকা’[ ব্রাহ্মণ-কায়স্থ-বৈদ্য] সংস্কৃতি নির্মাণ করার চেষ্টা করেছেন । লেখকের দুঃসাহসিক মন্তব্য : রামমোহন, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথের মতো দশ জন মনীষী বাঙালিকে এক শরীরে জুড়লেও বাঙালি জীবনে শ্রীচৈতন্যেরতুলনায় তাঁদের প্রভাব এক দশমাংসের কম । শৈবাল আরও মনে করেন যে চৈতন্যের কথা মাথায় রেখে রবীন্দ্রনাথ ‘গোরা’ উপন্যাস লিখেছিলেন ।
এসব বক্তব্য নিয়ে লেখক শৈবাল মিত্রের বিরুদ্ধে আঙুল তোলা যাবে না । তখন তিনি বলতে পারবেন, এসব তিনি বলেন নি, এসব বলেছে তাঁর সৃষ্ট চরিত্রগুলি—নভোবিজ্ঞানী ড. ত্রিদিবনাথ রায় এবং তাঁর ভাইপো গোরা । গোরা বা চৈতন্যকে নিয়ে একটা মেগা সিরিয়াল করার জন্য হাউসটন থেকে কলকাতায় এসেছেন ত্রিদিবনাথ । সেজকাকার কাছে ৫০টা এপিসোডের কাহিনি শুনেছে একালের গোরা । চৈতন্যের সন্ন্যাস গ্রহণের পরবর্তী কাহিনি আমরা শুনেছি ত্রিদিবনাথের ভাইপোর মুখে । নিজে না বলে অন্যকে দিয়ে বলানোর কারণ আছে । ‘কমলাকান্তের দপ্তরে’ বঙ্কিম এমনটা করেছিলেন । হয়তো চৈতন্যভক্তদের আক্রমণ থেকে রেহাই পাবার কৌশল এটা । সব ধর্মের ভক্তরাই অন্ধ, গোঁড়া, অসহিষ্ণু । গত শতকের শেষ দিকে চৈতন্যদেব সম্পর্কে সমালোচনামূলক বই লিখে এক লেখককে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছিল ।
চৈতন্যের অবতাররূপে আবির্ভূত হওয়ার সামাজিক পটভূমি বেশ সযত্নে নির্মাণ করেছেন শৈবাল । ঠিক যেমন মহাশ্বেতা দেবীর ‘অরণ্যের অধিকারে’ বীরসা মুণ্ডা তাঁদের সমাজে ‘ধরতি আবা’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন । ১. অবতারত্বের সহায়ক ছিল গোরার দৈহিক রূপ । গড়পড়তা বাঙালির চেয়ে অনেকবেশি লম্বা, আজানুলম্বিত বাহু, দেবোপম সুন্দর মুখশ্রী । এই রূপ দেখে নদিয়া-নবদ্বীপের নারীরা কেমন বিহ্বল হয়ে পড়ত, নরহরি সরকার প্রমুখদের নাগরিয়া পদে তার বর্ণনা আছে । কিন্তু শুধু নারী নয়, বিহ্বল হত পুরুষরাও । এই রূপের অধিকারীর সংর্কীতনমুখর ভাবাবেশ আবিষ্ট করত পুরুষদেরও । ২. দেশে সুলতানি শাসন শুরু হওয়ার আগে থেকে প্রজাপীড়ক রাজপুরুষেরা শয়নে-স্বপনে-জাগরণে কৃষ্ণের ভূত দেখছিল । এদেশের শাস্ত্রবিদ পণ্ডিতদের মুখে তারা শুনেছিল অত্যাচারের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য কৃষ্ণ সম্ভবামি যুগে যুগে । সম্ভবত গৌড়ের ভক্তদের বিশ্বাস সংক্রমিত হয়েছিল রাজপুরুষদের মধ্যে । মাধবেন্দ্র পুরী বিশ্বাস করতেন দ্বারকা, মগধ, ত্রিশুত, কলিঙ্গ, গৌড়-বাংলার রথী-মহারথীরা মিলিত হবেন এক ধর্মযুদ্ধে । রামানুজের ‘শ্রী’ সম্প্রদায়, ধর্মনেতা রামানন্দ, শিখগুরু নানক, ভক্ত কবীর, নামদেব. তুকারামও আসন্ন ধর্মযুদ্ধের উপলব্ধি করতে পারছিলেন । ৩. গোরা যে মহাশক্তিধর পরমপুরুষ কৃষ্ণ, নানা অ-লৌকিক ঘটনাচক্র থেকে শ্রীবাস পণ্ডিতএর মনে প্রথম সে উপলব্ধি জাগ্রত হয় । শান্তিপুরে অদ্বৈত আচার্যের কাছে সে খবর পৌঁছে দেন তিনি । এভাবে গোরাকে নিয়ে গড়ে উঠতে লাগল নানা উপকথা । উপকথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এমন সব ঘটনা ঘটতে থাকল এবং এমন সব অতিরঞ্জিত প্রচার হতে থাকল যে দেশের মানুষ তা সহজেই বিশ্বাস করে নিল । বাল্য থেকেই সমাজের নিচুতলার মানুষদের সঙ্গে অন্তরঙ্গতা ছিল গোরার । সেই সব অব্রাহ্মণ, নবশাক, শূদ্র, ম্লেচ্ছ মানুষেরাও গোরার মধ্যে তাদের পরিত্রাতার রূপ দেখতে পেল । শ্রীবাসদের কৃষ্ণাবতারের সঙ্গে তাদের পরিত্রাতার কল্পনা মিলে-মিশে গেল । শান্তিপুরের অদ্বৈত আচার্য, কুলিয়ার বিদ্যাবাচস্পতি থেকে পুরুযোত্তমপুরের বাসুদেব সার্বভৌম, বিদ্যানগরের রামানন্দ পট্টনায়েক সবাই মেনে নিলেন গোরার দৈব সত্তার কথা । ৪. দাদা বিশ্বরূপের পুঁথি এবং সেই পুঁথিতে গোরার অবতারত্বের কথা যদি প্রামাণ্য হয়, তাহলে বলতে হবে তার প্রভাব গোরার উপর পড়েছিল । পরবর্তীকালে হাজার হাজার মানুষের শ্রদ্ধা, পূজা ও আকুলতায় গোরার মনে এই প্রত্যয় গাঢ় হয়েছিল যে তাঁর মধ্যে দৈবীসত্তা আছে । ঐকান্তিক বিশ্বাস যে মানুষকে অমিত শক্তি দেয়, এ ব্যাপারটি অ-বৈজ্ঞানিক নয় ।
এবার অসঙ্গতির কথা বলি । জগন্নাথ মিশ্রের পত্নী শচী ও শ্রীবাস পণ্ডিতের ভ্রাতুষ্পুত্রী নারায়ণীর গর্ভসঞ্চারের বর্ণনা এই বইতে আছে । শচীর গর্ভেই গোরার জন্ম । পরোক্ষ বর্ণনার মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিলেও প্রত্যক্ষভাবে লেখক এসবকে ‘ অলৌকিক গর্ভসঞ্চার’ বলেছেন । শচীর অটটি কন্যাসন্তানের কেউই জীবিত ছিল না, তার পরে বিশ্বরূপের জন্ম । তারপরে দশ বছর শচী কোন গর্ভ ধারণ করেন নি । বিশ্বরূপের জন্মের দশ বছর পরে , জগন্নাথ যখন ব্রহ্মচর্য পালন করছেন, শচী গর্ভধারণ করলেন । স্বামী ও পুত্রের সঙ্গে শচী শ্রীহট্টে তাঁর স্বামীর পৈতৃক নিবাসে গিয়েছিলেন । বুরহানুদ্দিন মাজারে পুত্র বিশ্বরূপের মঙ্গলকামনায় শচীকে নিয়ে গিয়েছিলেন জগন্নাথ । সেখানকার ষষ্ঠ মুজাভির শচীকে বলেছিলেন শচীর দ্বিতীয় সন্তান জন্ম না নিলে বিশ্বরূপের আয়ু খণ্ডিত হতে পারে । মুজাভিরের নির্দেশে মাজারের গর্ভগৃহে তিন রাত্রি ধর্ণা দেন শচী । তারপরে শ্বশুরালয়ে থাকার সময়ে তাঁর গর্ভলক্ষণ প্রকাশ পায় । মুজাভিরের সঙ্গে গোরার দেহাকৃতির ও মানসিকতার সাদৃশ্য, বিস্ময়কর গর্ভসঞ্চারে শ্বশুরালয়ে উষ্মা, গোরার প্রতি মুজাভিরের অপত্যস্নেহ ইত্যাদির মাধ্যমে লেখক পাঠকের কাছে লৌকিকতার প্রেক্ষাপট আভাসে-ইঙ্গিত তুলে ধরেছেন । কিন্তু অলৌকিকতার নির্মোককে পুরোপুরি ছিন্ন করতে পারেন নি ।
একই অসঙ্গতি নারায়ণীর গর্ভসঞ্চারের বর্ণনাতেও । স্বামী ও সন্তান হারিয়ে নারায়ণী শ্রীবাসের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন । নিজেকে কৃষ্ণসেবায় ডুবিয়ে দিয়ে নারায়ণী আত্মিক সান্ত্বনা পেয়েছিলেন । নিতাই নারায়ণীবৃত্তান্ত অবগত ছিলেন না । শ্রীবাসের ঘরে নারায়ণীকে তিনি ‘পুত্রবতী হও’ বলে আর্শীবাদ করেন । নিতাইএর আর্শীবাদের অনতিকাল পরেই নারায়ণীর ‘অলৌকিক গর্ভসঞ্চার’ । মহোৎসব চলাকালীন এক রাত্রিলীলায় রাতের তিন প্রহরের পালা শেষ হতে বিষ্ণুর খাটের পাশে মেঝেতে আঁচল বিছিয়ে শুয়ে পড়েছিলেন নারায়ণী । তন্দ্রাতুর আবেশে তাঁর মনে হয়েছিল স্বয়ং বিষ্ণু নিজের শয্যা থেকে নেমে এসে তাঁকে আদরে-সোহাগে ভরিয়ে তুলছেন । আভাসে-ইঙ্গিতে লেখক সম্ভাব্য লৌকিকতার কথা বলেছেন । গোরার প্রতি নারায়ণীর গোপন অনুরাগ [ভক্তরা একে ‘কৃষ্ণেন্দ্রিয় প্রীতি ইচ্ছা’ বলতে পারেন] , নারায়ণীর দুর্দশা বিমোচনে গোরার আবেগাতুর ভাবনা, অজ্ঞতাবশত ভক্ত নিতাই যে আর্শীবাদ করে ফেলেছেন তাকে মিথ্যে হতে না দেবার ভাবনা—এসব হল সম্ভাব্য লৌকিক কারণ ।
অলৌকিকতার আবরণ ছিন্ন করে কেন লেখক কঠিন সত্য উচ্চারণ করলেন না, এ প্রশ্ন তোলা যেতে পারে । বিশেষ করে লেখক যখন কমিউনিস্ট মতবাদে বিশ্বাসী শৈবাল মিত্র । মনে হতে পারে লেখক দ্বিধামুক্ত হতে পারেন নি । এসব প্রশ্ন সত্ত্বেও চৈতন্যদেবের মতো বলব : এহ বাহ্য আগে কহ আর । অনেক যত্নে, অনেক পরিশ্রমে শৈবাল রক্ত-মাংসের যে গোরাকে উপহার দিয়েছেন, তাই বা কি কম !
গবেষক