| 19 এপ্রিল 2024
Categories
এই দিনে কবিতা সাহিত্য

সুধীর দত্তের কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

আজ ১২ এপ্রিল। কবি, সুধীর দত্তের জন্মদিন। ইরাবতীর পাঠকদের জন্য রইল কবি‘র কবিতা। কবি সুধীর দত্তের প্রতি রইল ইরাবতী পরিবারের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

 


জন্মদিন


চারদিকে এখন বসন্তের আহ্লাদ।
আর এই সেই জাম গাছ
যার নিচ থেকে একদা দেবতারা উড়িয়ে নিয়ে যেতেন এক
অগম দেশে।
দোর খুলে ভোর আজ রেখে গেছে শত শরতের আয়ুষ্কামনা,
যুবতীরা তোড়া তোড়া কুসুককলি।
আমি এক লগনচাঁদা বুধ
হেঁটে চলেছি অশ্বত্থ গাছের দিকে।
এই দেখো মেদবর্ণ পাথরটির উপর
স্নেহ পদার্থের খোঁজে বসে আছে কাক।
আমি ঢেকে রাখিনি আমার ভয় আর লজ্জাস্থানগুলি।
শুধু মানুষই নয়, দেবতাদের ঘিরে রাখে ওরা।
ঢিল ছুঁড়ে মাটির হাঁড়ি ভেঙে ফেলার মতো, বলো
কেমন করে ভাঙব নমুচিদের ব্যুহ?
 
তোমার কথা আমার মনে পড়ে না, তবুও ইচ্ছে করে,
খুব ইচ্ছে করে মা,-
এই আমার মাথা, চুম্বন করো আর পরিয়ে দাও মুঞ্জতৃণের মুকুট।
আজ ঊনত্রিশে চৈত্র, আমার জন্মদিন।
 
 
 

ঋষি অথর্বানের আজ্ঞায়


 

মশক পাহাড় ছেড়ে তুমি তো কাঁকড়াদাঁড়া গিয়েছ ক’বার।
একটি বার বলে দ্যাখো,কাঁকড়াটি দাঁড়ার বিষ তুলে নেব,ছত্রাকের মতো
যা বিস্তার করছে বংশ , ঘিলু খাচ্ছে, ফুসফুসের  স্বাদুমাংস, সুকোমল প্লীহা ও যকৃত।
 
#
 
সন্তানের কাতরতা তাঁকে বড়ো বিহ্বল করে
 
#
 
আমি কি পিতার সংগে এক, তুমি বিশ্বাস করো?
তা যদি বিশ্বাস কর
মুহূর্তে শিথিল হোক সকল সংশয়-গ্রন্থি,
ভাঙুক মাটির ঘট, এই বিদেহী আমি
খুলে ফেলছি পঞ্চকোষ, অন্নদেহ, অতিবাহিক,
বিশ্বাস সত্য হোক,অন্ধ যেরকম ফিরে পেয়েছিল চোখ,
যেরকম ত্বক থেকে নিমেষে উধাও হয়ে গিয়েছিল কুঠ,
তোমার দৃষ্টির নীচে
ভবন্তু সুখীনঃসর্বে,সন্তু নিরাময়।
 
#
 
এই নাও আয়ু তবে, নাও ক্ষুদ্র জীবৎকাল, আয়ু।
শান্তি, শান্তি, ওঁ শান্তি; ভেদ করুন অগ্নি মিত্র বায়ু ও বরুণ
ষাটকৗশিক এই দেহ,পঞ্চ প্রাণ;ঋষি অথর্বানের আজ্ঞায়
ধায় বাক, ব্রহ্মবাক; ওষিধসকল
 
#
 
যাও শুশ্রুতের কাছে,হে শুশ্রূষা ওসিমার্টিনিব*
তৃতীয় পুরুষে জন্ম
শোণিতপ্রবাহে ধাও , ধাও করোটির নীচে,
ধংস করো, শুষে খাও
ত্বরিতে সমূহ কূট বিষ…
 
 
 
 
*এ-টি একটি আধুনিকতম টারগেটেড থেরাপি
 
 
 
 

 


উপনিবেশ


 

বন্দনায় ব্যাপৃত ছিলে!আচ্ছন্নতা ভালো লেগেছিল!
বলোনি হে ধীমহি,
হে জবাকুসুমসঙ্কাশ, বুদ্ধি প্রচোদিত করো।
ভালো লেগেছিল চারুবাক।
এইভাবে কুসুমিত,ফুটে ওঠা স্থলপদ্ম,প্রথম কুঁড়িটি।
আর এই মূর্খ কবি দূর থেকে
দেখে গিয়েছিল শুধু কুয়াশার ভিতর কীভাবে
তোমরা একটি দেবদারু কলোনি গড়েছ।
ম্যাজিক লন্ঠন জ্বেলে সঙ্কেতে কথা বলছ,
পাথর খোদাই করছ খরোষ্ঠী লিপিতে।
হাটুরে লোকেরা উঁকি মারে,
আড়ি পাতে দেহাতিজনেরা।
দ্যাখে গূহ্য তন্ত্রাচার,মদ্য মাংস মুদ্রা আর হস্তধৃত তুমুল মৈথুন।
অতঃপর অ আ ক খ, কবিতার যম নিয়ম,আকুমার ব্রহ্মচারী নৈমিষ অরণ্যে শুকমুনি।
আমি তো চপল এক, বালক গ্রহের মতো মন্দবুদ্ধি,দেখছি কীভাবে
মানুষেরা ঢেকে রাখে সযতনে মুখব্রণগুলি।
ঠুলি চোখে জাদুটোনা
বশ্য যত রমণীরা মারণ ও উচাটনে তা দিতে থাকে নষ্ট ডিমে,
বুঝি-বা ভিতরে তার কোনও সুপর্ণ এক
উড়ে যাবে অন্তরিক্ষে
বিপুল ডানার নীচে ভূঃ ভূবঃ স্বর্লোক ছাড়িয়ে।
 
এভাবেই পুষ্ট হয় দ্বেষ ও অসূয়া ঈষা,স্তম্ভনে ঔপনিবেশিক
পার্ষদেরা তাল দেয়, গালবাদ্য, বম, বম, ববম, ববম, অহো গুরু!
কৃষ্ণদাস কবি ভনে, শুনো শুনো জগজনে…
কর্তাভজা পিরীতের এও এক রীতি।
তালে ছন্দে গাহে গীতি,বাঁধা গতে নাচে সখিগণ।

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত