রাসানুষ
এমন কী হতে পারে
অনান্য গ্রহের মতো একদিন পৃথিবী হবে বিরাণ
আর পৃথিবীর প্রাণ যাবে মঙ্গল অথবা চন্দ্রে!
বিজ্ঞানের কল্যাণে কোন কিছু আর অসম্ভব বলা যায় না
মানুষের মানবিক চিন্তা লোপ পাচ্ছে
বাড়ছে এলিয়েনিক ভাবনা।
এমনতো হতেই পারে রক্ত তৈরি হচ্ছে সয়ংক্রিয় মেশিনে
রাসায়নিক বিক্রিয়ায় উৎপাদন হচ্ছে খাদ্য
কৃত্রিম গর্ভে জন্ম নিচ্ছে মানুষ।
তখন হয়তো মানুষের নাম বদলে হবে রাসানুষ
মানবিক পৃথিবী রাতারাতি রূপ নেবে রাসানিক বিশ্বে
এমন কত কিছুইতো আজকাল ঘটছেই!
সময়
সময় আমাকে রাস্তার মোড়ে
ফেলে দুইহাতে তালি বাজায়।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্যে সময় আমার
কাপড় খুলে পাইলস খোঁজে।
প্রতিনিয়ত এই সময় আমার
তিল তিল শুষে নেয় জীবন রস
কালের পথে নামে নবীন ব্রাজক।
বড়বেশি বেরহম বেসামাল সময়
টালমাটাল টানে লক্ষ্যে কক্ষপথ
সংকুচিত সময় আমাকে ছিন্ন
করে ভিন্ন করে বেঁচে থাকার পথ।
আবার এই সময় আমাকে
মাথায় নিয়ে বৃত্তাকার পথ
ভ্রমণ করে, কেন্দ্রে রেখে শূন্য।
দৃষ্টি
একাকী চাঁদ জ্বলছে আকাশে
নিভন্ত চুল্লির আলোয়
আরো দূর নীলিমায় তারকাপুঞ্জ
জ্বাজল্যমান নক্ষত্র দৃষ্টিসীমায়
এর বাইরে কী সকলই শূন্য
নাকি আছে আলোহীন কিছুটা আঁধার
প্রসারিত দৃষ্টি পৌঁছে যায় অসীমের কাছাকাছি
শূন্য থেকে মহাশূন্যে
সংকোচনে কেবলই অন্ধকার
ঘিরে থাকে চারপাশে
নন্দিনী
অন্য সবার মতো আমিও তোমার দক্ষতায় মুগ্ধ
বৃত্তাবদ্ধরাজা ভেঙে করেছো চুড়মার
বুদ্ধিজীবি লেখেকের অস্ত্রে দিয়েছো শান
কৃষক মজুর শ্রমিকের মনে আলো
এমন কী
কঠিন হৃদয়ের সর্দার
তারও সাথে সদ্ভাব
পথেপথে রঞ্জন ঘরে ফেরার গান
নৃত্যানন্দে সেজেছে কুসুমকমল
চেয়ে দেখ
তোমার রঞ্জন
অন্ধকার গুহাঘরে
বধিরতা খেয়েছে সময়
পলেপলে তোমায় দেখার অন্তিমাশা
মৃত্যুসত্য জেনে আলোর
শতরশ্মি রাতাকাশে মেশা
এইতো জীবন
সকলেই নেয় মেনে
জন্ম ১৬ ই বৈশাখ, ১৩৯৪ মাদারীপুরের শিবচরে। বাবা ইন্দ্রজিৎ মালো পেশায় ছিলেন শিক্ষক। বোনহীন বড় দুই দাদার স্নেহে মায়ের ভালোবাসায় কেটেছে শৈশব। ছোটবোলা থেকেই খেলায় বলায় ডানপিটে। প্রতিবেশী স্বজনেরা আদর করে ডাকতেন তপু। উমেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ভদ্রাসন জি সি একাডেমিতে স্কুল শেষ করেছেন। ড. নুরুল আমিন কলেজে থাকাকালীন শিল্পসাহিত্যর সাথে পথচলা শুরু হয়। রাজধানী ঢাকায় এসে সরকারি তিতুমীর কলেজে গণিতে স্নাতক করেন। এসময় সাহিত্যে বাচিক চর্চা ও প্রসার প্রতিষ্ঠান কন্ঠশীলন চতুরমাসিক আবর্তন করেন। কন্ঠশীলন কোর্স চলাকালীন সত্য ও সুন্দরের আরাধনায় ‘উদ্ভাসন’ প্রতিষ্ঠিত করেন। এরপর মীর বরকত তামান্না তিথিকে নিয়ে ‘কল্পরেখা’ কোমল প্রাণের প্রদীপ প্রতিষ্ঠিত করেন। এছাড়া বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র পরিচালিত পাঠচক্রের সভ্য ছিলেন। খামখেয়ালী সভায় রবীন্দ্রচর্চায় যুক্ত ছিলেন। আবৃত্তিশিল্পী চন্দ্র তাপস শিশুরাই স্বপ্ন নিয়ে ‘প্রজাপতির মেলা’ নামে একটি স্কুল শুরু করে অর্থাভাবে বেশি দূর যেতে পারেনি। ছায়ানট পরিচালিত স্কুল নালন্দা এবং ফুলকির সম্বন্বিত শিক্ষা সাংস্কৃতিক কর্যক্রমে শিক্ষাকর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ‘কথা কবিতার ঘ্রাণ’ নামক একটি শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক অনলাইন পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ প্রকাশিত যৌথ কাব্যগ্রন্থ “কবিতা ও প্রেম”। কর্মজীবনে শিক্ষকতা, সাংবাদিকতা, ব্যাংকিং একের পর এক চাকরি ছেড়ে ব্যাবসায় যুক্ত হন। বর্তমানে প্রবাসে ভবঘুরে জীবনযাপন করছেন।