| 28 মার্চ 2024
Categories
এই দিনে বিনোদন

এক কিংবদন্তীর গল্প

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

 

“আমাদের প্রতেক্যের জীবনেই বিবর্তনের নিজস্ব ধারা আছে। চলার পথে আমাদের সবাইকে নানা ধরণের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় যা প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জিং এবং অন্যদের থেকে একদম আলাদা। কিন্তু তারপরও সবার মধ্যে কিছু সাধারণ মিল থেকেই যায়। পরস্পরের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়েও আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। দিনশেষে, জীবনযাত্রায় আমরা সবাই একই লক্ষ্যের দিকেই তো আগাই।”

কথাগুলো ভারতীয় সুরকার, গায়ক, গীতিকার, সঙ্গীত প্রযোজক, নানাবিধ যন্ত্রবাদক এবং সর্বোপরি মানবপ্রেমিক এ আর রহমানের। একনামে বর্তমান ভারতবর্ষের সেরা সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে পরিচিত তিনি।

১৯৬৭ সালের ৬ জানুয়ারি ম্যাড্রাসের এক সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এ এস দিলীপ কুমার। ম্যাড্রাসের নাম এখন চেন্নাই, এ এস দিলীপ কুমারের নাম এ আর রহমান। পূর্ণনাম ‘আল্লাহ রাখা রহমান’। নাম পরিবর্তনের সেই কাহিনীতে পরে আসছি। আগে দেখে আসা যাক কেমন ছিল বিখ্যাত এই সুরকারের শৈশবকাল।


শৈশব-কৈশোর থেকেই মেধার স্বীকৃতি পেতে থাকেন রহমান


দিলীপ কুমারের বাবা আর কে শেখর ছিলেন তামিল এবং মালায়ালাম সঙ্গীত জগতের নামকরা সুরকার। ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে স্টুডিওতে ঘুরতে যেতেন দিলীপ। হয়তো শৈশবের সেই দিনগুলোই তার মনে সঙ্গীতের নেশা ধরিয়ে দিয়েছিল, যার কারণে গানই এখন রহমানের একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান। ৪ বছর বয়সেই তিনি পিয়ানো বাজানো শিখে গিয়েছিলেন।

ছোট্ট দিলীপের ঝোঁক ছিল ইলেক্ট্রনিকস আর কম্পিউটারের প্রতি। তবে বাবা যখন একটি মিউজিক সিনথেসাইজার কিনে আনলেন তখন সঙ্গীতের প্রতিও দিলীপের একটা প্যাশন জন্ম নেয়। সেই প্যাশন নিয়ে মাতোয়ারা ৯ বছরের দিলীপকে ছেড়ে পরপারে পাড়ি দেন শেখর। স্বপ্নের ঘোর থেকে বের হয়ে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হয় দিলীপ ও তার পরিবার।

বাবার মৃত্যুর পর ৯ বছরের বালক দিলীপের উপর পরিবারের আর্থিক দায়ভার নেমে আসে। বাবার সঙ্গীত যন্ত্রগুলো ভাড়া দিয়ে কোনোমতে দিন কাটছিল তাদের। মা কারীমার (পূর্বনাম কস্তূরী) তত্ত্বাবধায়নেই বেড়ে উঠছিলেন তিনি। ১১ বছর বয়সে কিবোর্ড বাদক হিসেবে ইলায়ারাজার দলে যোগ দেন তিনি। কাজকর্মের ভিড়ে স্কুল থেকে ঝরে পড়া দিলীপ বিভিন্ন অর্কেস্ট্রা দলের সাথে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন।



ছোটবেলার বন্ধু শিভামানি, জন অ্যান্থনি, সুরেশ পিটার, জোজো এবং রাজার সাথে ‘রুটস’ নামের একটি ব্যান্ড দল গড়ে তোলেন দিলীপ। চেন্নাইভিত্তিক রক ব্যান্ড দলটির নাম দেয়া হয় ‘নেমেসিস অ্যাভিনিউ’। কিবোর্ড, পিয়ানো, সিনথেসাইজার, হারমোনিয়াম এবং গিটারের উপর ছিল তার একক আধিপত্য। ছোটবেলার সঙ্গী সিনথেসাইজারের প্রতি তার ছিল বিশেষ আকর্ষণ। তার মতে সিনথেসাইজার হলো ‘সঙ্গীত এবং প্রযুক্তির আদর্শ সমন্বয়’।

সঙ্গীতে দিলীপের হাতেখড়ি হয় ওস্তাদ ধনরাজের হাত ধরে। ১১ বছর বয়সে বাবার কাছের বন্ধু প্রখ্যাত মালায়ালাম সুরকার এম কে আরজুনানের অর্কেস্ট্রা দলে বাদক হিসেবে যোগ দেন তিনি। বেশ দ্রুতই ভোকাল, গিটার, পারকিউশন, ড্রাম, হারপেজ্জী, অটমিয়াম, ফিঙ্গারবোর্ড, কীবোর্ড, পিয়ানো, অ্যাকর্ডিয়ন, গবলেট, ড্রাম, কনসার্ট হার্প প্রভৃতিতে দখল আনতে থাকেন তিনি। তার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে এম এস বিশ্বনাথান, রামেশ নাইড়ু, রাজ কোটির মতো নামকরা সুরকাররাও দিলীপকে তাদের সাথে কাজ করার সুযোগ করে দেন।

জাকির হুসেইন, কুন্নাকুড়ি বাইদ্যোনাথন এবং এল শঙ্করের সাথে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন তিনি। সেই সময়েই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ট্রিনিটি কলেজ অফ মিউজিকে’ স্কলারশিপ পান দিলীপ। পরবর্তীতে ম্যাড্রাসে পড়ালেখা করার সময় স্থানীয় একটি স্কুল থেকে ‘ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল মিউজিকে’ ডিপ্লোমা করেন তিনি।


বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পান রহমান


১৯৮৪ সালে দিলীপের ছোট বোন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। এক বন্ধুর মাধ্যমে দিলীপ প্রথমবারের মতো পরিচিত হন ‘কাদিরী ইসলামের’ সাথে। পরিবারের নানাবিধ সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে ইসলামের প্রতি বিশ্বাস দৃঢ় হয় তার। ১৯৮৯ সালে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ধর্মান্তরিত হন ২৩ বছরের দিলীপ। ধর্মের সাথে সাথে নামও পরিবর্তিত হয়ে দিলীপ কুমার থেকে হয়ে যায় আল্লাহ রাখা রহমান, সংক্ষেপে এ আর রহমান।

শুরুর দিকে রহমান ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে ডকুমেন্টারির জন্য মিউজিক কম্পোজ করতেন। ১৯৮৭ সালে তিনি ঝুঁকে পড়েন বিজ্ঞাপনের দিকে। বছর পাঁচেকের মধ্যে তিনি ৩০০টিরও বেশি জিঙ্গেল কম্পোজ করেন। তার সুর করা জিঙ্গেলগুলোর মধ্যে কয়েকটি বেশ বিখ্যাত ছিল, যেমন টাইটান ওয়াচের জিঙ্গেল। এখানে তিনি মোৎসার্টের ২৫ নং সিম্ফনি ব্যাবহার করেন। সাম্প্রতিক সময়েও রহমানের কম্পোজ করা এয়ারটেলের জিঙ্গেলটি দারুণ জনপ্রিয়।

১৯৮৯ সালে ‘পাঞ্চাথান রেকর্ড ইন’ নামের ছোট একটি স্টুডিওর মাধ্যমে নিজস্ব সঙ্গীত জগতের সূচনা করেন তিনি। পরবর্তীতে এটি ভারতের অন্যতম সেরা সাউন্ড রেকর্ডিং স্টুডিও হিসেবে নাম করে। এটি এশিয়ার সবচেয়ে অত্যাধুনিক স্টুডিও কিনা তা নিয়েও জোর বিতর্ক চালু রয়েছে।

অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাওয়ার্ডের এক অনুষ্ঠানে রহমানের সাথে দেখা হয় ভারতের অন্যতম সেরা পরিচালক মনি রত্নমের। রহমান বেশ কিছু সুরের নমুনা দেখান মনিকে। মনি সেই সুরগুলো এতটাই পছন্দ করেন যে সঙ্গে সঙ্গে রহমানকে তার পরবর্তী তামিল ছবি ‘রোজা’তে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন। এই সিনেমাটি তাকে দেশজোড়া খ্যাতি, সাফল্য আর পরিচিতি এনে দেয়। ১৯৯২ সালের সেই দিনটি থেকে চলচ্চিত্র কেন্দ্রীক সঙ্গীত জগতে পদচারণা শুরু করেন রহমান। বাকিটা, যেমনটা বলা হয়, ইতিহাস!



১৯৯৫ সালে রহমান তার প্রথম হিন্দি ভাষার সিনেমা ‘রঙ্গিলা’য় সঙ্গীত পরিচালনা করেন। ইতোমধ্যে তামিল সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির, যা কলিউড নামেই বেশি পরিচিত, সর্বত্র চলছিল এ আর রহমানের জয়জয়কার। কলিউড কাঁপিয়ে বলিউডেও তিনি প্রবেশ করেন বীরদর্পে। ‘রঙ্গিলা’র দুর্দান্ত সাফল্য বলিউডের মাটিতে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে রহমানের শক্ত আসন তৈরি করে দেয়। যার ফলশ্রুতিতে একে একে তিনি ‘বোম্বে’ (১৯৯৫), ‘দিল সে’ (১৯৯৮), ‘তাল’ (১৯৯৯), ‘জুবাইদা’ (২০০১), ‘লাগান’ (২০০১) এর মতো বিখ্যাত সব চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করে টপ চার্ট সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবামে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নেন। এর মধ্যে ‘লাগান’ প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসেবে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড বা অস্কারে মনোনয়ন পায়। বিশ্বব্যাপী রহমানের অ্যালবাম ১০০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে।

কর্ণাটক সঙ্গীত, ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল, হিন্দুস্তানি সঙ্গীত, নুসরাত ফতেহ আলী খানের প্রভাবসমৃদ্ধ কাওয়ালি স্টাইল- সঙ্গীত পরিচালনার সময় এগুলোই বেশি পছন্দ করেন এ আর রহমান। ব্রিটিশ সুরকার অ্যান্ড্রু লয়েড ওয়েবার রহমানের সুর করা কিছু মিউজিক শুনে তাকে একটি মিউজিক্যাল ড্রামা তৈরি করার প্রস্তাব করেন। গীতিকার ডন ব্ল্যাক ও এ আর রহমান মিলে ‘বোম্বে ড্রিমস’ নামের একটি বলিউডি চলচ্চিত্রের সমালোচনামূলক ও বিদ্রূপাত্মক মিউজিক্যাল ড্রামা রচনা করেন। ২০০২ সালে লন্ডনের ওয়েস্ট এন্ডে খুব বেশি প্রচারণা ছাড়াই মিউজিক্যাল ড্রামাটি মুক্তি দেয়া হয়। ইতোমধ্যে লন্ডনে বসবাসরত ভারতীয়দের একটি বড় অংশের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন রহমান। কাজেই হু-হু করে টিকেট বিক্রি হতে থাকে এবং এই শোয়ের সাফল্য দেখে ২০০৪ সালে আবারো বৃহৎ পরিসরে মিউজিক্যাল ড্রামাটি লঞ্চ করা হয়। রহমানের পরবর্তী স্টেজ প্রজেক্ট ছিল ‘লর্ড অফ দ্য রিংস’ এর মিউজিক্যাল সংস্করণ যা ২০০৬ সালে টরেন্টোতে প্রিমিয়ার করা হয়। এই প্রজেক্টটির বাজেট ছিল প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার। সমালোচকদের কাছ থেকে কখনো কখনো বাজে মন্তব্য পেলেও দর্শক-শ্রোতারা সাদরে তাদের প্রিয় শিল্পী ও সুরকারের আসনে জায়গা করে দেন রহমানকে।

মঞ্চ, বলিউডের চলচ্চিত্রে কাজ করার পাশাপাশি তিনি তার সুরের প্রভাব বিস্তার করা শুরু করেন হলিউডেও। স্পাইক লির ‘ইনসাইড ম্যান’ (২০০৬) চলচ্চিত্রের জন্য একটি সাউন্ডট্র্যাক রচনা করেন তিনি এবং ‘এলিজাবেথ: দ্য গোল্ডেন এইজ’ (২০০৭) চলচ্চিত্রে যৌথভাবে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। সত্যিকার অর্থে ওয়েস্টার্ন জগতে রহমান ব্রেক পান ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’ চলচ্চিত্রের ‘জয় হো’ গানটির মাধ্যমে। এই গানটি তাকে অস্কার অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড পর্যন্ত এনে দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় সেরা সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব, ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি ফর ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস (বাফটা) প্রভৃতি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১০ সালে তিনি ‘জয় হো’র জন্য গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড পান।

এ আর রহমানের অর্জন ও প্রাপ্তি নিয়েই হয়তো আরেকটি আর্টিকেল লেখা যাবে। সারা বিশ্বব্যাপী সঙ্গীতের জন্য তিনি পেয়েছেন অগণিত পুরস্কার ও কোটি মানুষের ভালবাসা। ১৯৯৫ সালে সঙ্গীতে অবদান রাখার জন্য মরিশাস ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড এবং মালয়েশিয়ান অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। চার বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ছয় বার তামিলনাড়ু রাজ্য ফিল্ম পুরস্কার পাওয়া রহমান দু’বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। সঙ্গীত রাজ্যে তার তুখোড় পারফরম্যান্সের জন্য তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে তাকে ‘কালাইমামানি’ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ সরকারের কাছ থেকে অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পাশাপাশি ২০১০ সালে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ভারতের অত্যন্ত সম্মানজনক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণ’ অর্জন করেন রহমান। ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের বিশ্বের শীর্ষ ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।


পরিবারের সদস্যদের সাথে এ আর রহমান


বিশ্ব সঙ্গীতে অবদান রাখার জন্য ২০০৬ সালে ‘স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের’ পক্ষ থেকে রহমানকে একটি সম্মানসূচক অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। তাছাড়া মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়, আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, আন্না বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। দু’বারের অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে হোয়াইট হাউজে ডিনারের দাওয়াতও পেয়েছিলেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে তাঁর নামে মার্কহাম, ওন্টারিও, কানাডায় একটি সড়কের নামকরণ করা হয়।

ব্যক্তিগত জীবনে ৩ সন্তানের জনক এ আর রহমান বেশ সুখী একজন মানুষ। স্ত্রী সায়রা বানু এবং তিন সন্তান খাদিজা, রাহিমা ও আমিনকে নিয়ে বেশ ভাল দিন কাটে তাঁর। ‘কাপলস রিট্রিট’ সিনেমায় ‘নানা’ গানটি গেয়েছে আমিন এবং ‘এনথিরেন’ সিনেমায় ‘পুধিয়া মানিধা’ গানটি খাদিজার গাওয়া। রহমানের পরিবারের প্রায় সকল সদস্যই কমবেশি সঙ্গীত জগতের সাথে সম্পৃক্ত।

শুরুতেই এ আর রহমানকে মানবপ্রেমী বলেছিলাম, এবার সময় এসেছে কথাটির যথার্থতা প্রমাণের। বেশ কিছু দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত রহমান ২০০৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘স্টপ টিবি’ কার্যক্রমের বৈশ্বিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ এবং ‘ইন্ডিয়ান ওশেন’ নামক ভারতভিত্তিক বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ২০০৪ সালে সুনামি আক্রান্ত মানুষের জন্য, বিভিন্ন সময় অনাথ শিশুদের সাহায্য করার জন্য কনসার্টের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করেন রহমান। দরিদ্র ও নিপীড়িত জনগণের সাহায্যার্থে নির্মিত ফিচার ফিল্মে বিনা পারিশ্রমিকে সঙ্গীত পরিচালনা করেন এ আর রহমান। ২০০৬ সালে চেন্নাইয়ের দরিদ্র নারীদের সাহায্য করার জন্য ‘দ্য বানায়ান’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের থিম মিউজিক রচনা করেন তিনি। ২০০৮ সালে ‘ফ্রি হাগ ক্যাম্পেইন’ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে রহমান ও শিভামানি ‘জিয়া সে জিয়া’ শীর্ষক একটি গান রচনা করে ভারতের বিভিন্ন শহরে তার প্রচারণা চালান।

এ আর রহমানের একটি উক্তি দিয়ে শুরু করেছিলাম, তাঁর একটি উক্তি দিয়েই শেষ করছি।

“প্যাশনের জন্য যারা জীবন উৎসর্গ করে শেষ পর্যন্ত তারাই সাফল্যের দেখা পায়। সফল হতে হলে নম্র হও, খ্যাতি কিংবা অর্থবিত্তের মোহকে মাথায় চড়তে দিও না।”

মহৎ ব্যক্তিরা তো এমনই হন!

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত