ব্রাহ্ম মতে বিয়ে
অনেক চেষ্টা করেও জীবনানন্দ দাশের বিয়ের কার্ড সংগ্রহ করতে পারিনি।ব্রাহ্ম মতে বিয়ে কীভাবে হয় জানবার খুব কৌতূহল ছিল।জীবনানন্দ দাশের বিয়ে হয় ১৯৩০-এ।তার ঠিক ১৮ বছর আগের একটি বিয়ের কার্ড যে কীভাবে সংগ্রহ করলাম তা এক রহস্য।আসলে একটা কথা জীবনে শিখেছি মাটির কলসিও দীর্ঘদিন ধরে ঘষে ঘষে পাথর ক্ষয় করতে পারে!
১৯১২-এ এই বিয়েটা অনেকদিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত যাঁর বিয়ে হচ্ছে তিনি জীবনানন্দ দাশের দিদি অমিয়াবালা দাস।জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যানন্দ দাশের দাদা হরিচরণ ও বৌদি সুশীলাবালার মেয়ে এই অমিয়া।বিয়েটা জীবনানন্দ দাশের মতো ব্রাহ্ম মতে হয়েছে।বিয়েটা হচ্ছে সর্বানন্দ ভবনে।আর বিয়ের আচার্যের কাজ করছেন সত্যানন্দ দাস।
৮ পৃষ্ঠার এই বিয়ের কার্ডে বিস্তারিত ভাবে লেখা আছে কোন মন্ত্র কোন গান কোন উচ্চারণ ও কোন নিয়মে এই বিয়ে সম্পন্ন হবে।আন্দাজ করা যায় জীবনানন্দ দাশের বিয়ের কার্ডটিও এমনই ছিল।
পুলকিত হলাম ‘প্রথমে একটি সঙ্গীত হইবে’ লেখার পর যে গানটি আছে তা, ‘বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দ ধারা’।
আহা! এভাবেও তবে বিয়ে হয়।
স্রেফ গান গেয়ে।
মজা তো!
‘চিরবন্ধু, চিরনির্ভর,চিরশান্তি তুমি হে প্রভু!’
শেষের গানটিও চমৎকার! ‘যে প্রেমের পথ গেছে অমৃত-সদনে,/ সে প্রেম দেখায়ে দাও পথিক দুজনে।’
এরপর যদি জীবনানন্দ দাশ সত্যি সত্যি বাসর রাত্রে ‘জীবন মরণের সীমানা ছাড়ায়ে’ শুনতে চান লাবণ্যর কাছ থেকে খুব একটা অপরাধ দেখিনা।ঠিকই তো বলেছেন জীবনানন্দ।এই গানটি তো বিশেষ এই দিনে গাইবারই গান।
আমি জীবনানন্দ দাশের বিয়ের কার্ড জোগাড় করতে পারিনি।কীভাবে যেন ১৮ বছর আগের তাঁর দিদির বিয়ের কার্ড সংগ্রহ করলাম।
আর একটা কথাও ভাবি।১০৮ বছরে আমরা এগুলাম না পিছিয়ে পড়লাম!
কবি,সমালোচক,গবেষক