| 20 এপ্রিল 2024
Categories
ইরাবতীর বর্ষবরণ ১৪২৮

ছোটগল্প: মরা গাঙের মাঝি  । অঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com                                                    
পিচের রাস্তার শেষে বুড়ো বটগাছটার সামনের ফাঁকা জায়গাটাতে এসে টোটো রিক্সাটাকে থামিয়ে দিল বাবুসোনা।
পাটভাঙ্গা তাঁতের শাড়িটার কুঁচি ও আঁচলটাকে এক হাতে সামলে নিয়ে খুব সাবধানে টোটোরিক্সা থেকে নেমে পড়লেন বনবীথি, কাজীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত উপ-প্রধানশিক্ষিকা। নিম্ন বুনিয়াদি ইস্কুলে পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের নিম্নবিত্ত বাবা-মায়েদের অতি প্রিয় ‘বিথি দিদিমনি’।
বনবীথির শরীরটা তেমন ভালো যাচ্ছে না ইদানিং। হাঁটুর ব্যথাটা আবার চাগাড় দিয়েছে, শ্বাসকষ্টও হচ্ছে মাঝে মাঝে। লম্বা একটা নিঃশ্বাস নিয়ে উনি সামনের দিকে তাকালেন। সামনেই সদাব্রত ঘাট, পড়ন্ত বিকেলের ঝিমধরা রোদ জলের ওপর যেন মন খারাপের আলপনা দিয়েছে। ধীরপায়ে সেদিকে এগিয়ে গেলেন বনবীথি।  
কলরব কোলাহল থেকে বেশ কিছুটা দূরে গাছপালায় ঘেরা শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ। সদাব্রত ঘাটের সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো সিঁড়িগুলো একে একে নেমে গিয়েছে আদিগঙ্গার শাখায়। স্থানীয় মানুষদের পুজো-অর্চনার জন্য গঙ্গাজলের প্রয়োজন মেটে এখানেই। প্রবাদ আছে একসময় এখান দিয়ে বড় বড় পালতোলা নৌকায় চড়ে সওদাগরেরা যেতেন বানিজ্য করতে, চাঁদ সওদাগরও এই নদীপথেই একবার বানিজ্যে গিয়েছিলেন। তবে সে সব বহু যুগ আগের কথা। এখন এটা নামেই নদী, না আছে জোয়ার না আছে ভাঁটা, পলি জমে জমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্রোতের প্রবাহ। এখন দীঘির জলের মতোই স্থির এ নদীর জল। বনবীথির মনে হল কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর ওঁর জীবনটাও এখন এই নদীর মতোই হয়ে গিয়েছে; স্রোতহীন, নিস্তরঙ্গ।
বনবীথি হাতে করে অল্প একটু গঙ্গার জল নিয়ে মাথায় দিলেন। তারপর হাতজোড় করে প্রনাম জানালেন মা গঙ্গার উদ্দেশ্যে। বাবুসোনা ততক্ষণে দু’হাতে দুটো বড় বড় প্লাস্টিকের কৌটো নিয়ে নেমে গিয়েছে একেবারে শেষ সিঁড়িতে। বনবীথি দেখলেন বাবুসোনা ওঁর ধোয়ামাজা পরিষ্কার গঙ্গাজলের কৌটোদুটোকে আরও একবার ভালো করে গঙ্গাজলে ধুয়ে নিচ্ছে। ধোয়া শেষ হলে এতেই দিদিমনির জন্য ভরে ফেলবে গঙ্গার জল।
হাঁটু চেপে ধরে উপরে উঠে এলেন বনবীথি। এই ক’টা সিঁড়ি উঠতে গিয়েই হাঁপিয়ে উঠেছেন উনি। একটু দম নিয়ে বনবীথি এগিয়ে চললেন বহু বসন্ত পার করা বটগাছটার দিকে। এই বটগাছের পাশেই রয়েছে একটা পুরোনো মন্দির। রক্ষাকালী, শিতলা মা, শিবঠাকুর ছোটবড় বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি আছে সেখানে, পালা-পার্বনে ঘটা করে পুজো হয়। বনবীথি প্রতিটি মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে কপালে জোড়হাত ঠেকালেন। ভগবান প্রায় সব মনোবাসনাই পূর্ন করেছেন বনবীথির। স্বামী প্রদীপবাবু ছিলেন সরকারি চাকুরে, অবসর নিয়েছেন বছর কয়েক আগে; এখন অখন্ড অবসর আর আজীবন পেনশনের আশ্বস্ততা। একমাত্র পুত্র রণন, সেও স্বক্ষত্রে প্রতিষ্ঠিত; এখনও অবিবাহিত তাই সংসারে কোনো অশান্তি নেই। কিন্তু এতো সুখ, এতো স্বস্তির মধ্যেও বনবীথির মনে শান্তি নেই কেন?
একটু আনমনা হয়ে পড়েছিলেন বনবীথি, টোটো রিক্সার হর্ন শুনে সম্বিত ফিরলো।  
বনবীথি এসে বসতেই রিক্সা চালু করে দিল বাবুসোনা, এগিয়ে চললো সামনের দিকে। রিক্সা সামনের দিকে এগোলেও বনবীথির মন পিছোতে লাগলো অতীতের দিকে…
                                                           (২)
“আমাকে দু’টো টাকা দেবে”
“তুমি দু’টাকা নিয়ে কি করবে?”, বিরক্ত হয়ে স্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন বিকাশবাবু। কন্যা হোক বা স্ত্রী, মহিলাদের হাতে টাকা দেওয়াটাকে উনি একেবারেই সমর্থন করেন না। নারীদের যখন যা দরকার হবে তা পালক-পুরুষের কাছে চেয়ে নিলেই তো হোলো, আলাদা করে টাকাপয়সা চাওয়ার কি দরকার? মহিলাদের হাতে টাকা দেওয়া মানেই বাজে খরচকে প্রশ্রয় দেওয়া। আর বাজে খরচ উনি একেবারেই বরদাস্ত করতে পারেন না।
“আজ বিকেলে একটু বাপের বাড়ি যাবো, তাই”, সসঙ্কোচে উত্তর দিল প্রভা।
বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রভার দু’টাকা চাওয়ার মধ্যে অযৌতিক কিছু দেখলেন না বিকাশবাবু। বাপের বাড়ি যাওয়ার সময় মেয়েদের হাতে করে কিছু না কিছু নিয়ে যেতে হয়, না হলে আবার শ্বশুরবাড়িতে জামাইয়ের সন্মান থাকে না। মানিব্যাগ থেকে একটা দু’টাকার নোট বার করে প্রভার হাতে দিলেন উনি। প্রভা হাসিমুখে বিদায় নিল। বিকাশবাবু আবার নিজের কাজে মন দিলেন। এই অতি ক্ষুদ্র ঘটনাটি হয়তো পরিবারের কারও মনেই কোনো প্রভাব ফেলতো না; ছেলে, মেয়ে, ঠিকে-ঝি সবাই হয়তো এটাকে তরকারিতে নুন বেশি হওয়ার মতোই দৈনন্দিন জীবনের একটি অঙ্গ হিসাবে ধরে নিতো। কিন্তু লুকোচুরি খেলতে খেলতে দরজার পিছনে লুকিয়ে থাকা ছোট্ট বনবীথির মনে এই ছোট্ট ঘটনাটাই একটা গভীর, দীর্ঘস্থায়ী দাগ কেটে দিল।
কিশোরীবেলায় পা দেওয়ার সাথে সাথেই বনবীথি বুঝে গিয়েছিল, সমাজে মেয়েদের কদর তাদের রূপে, ঘরকন্নার কাজ পরিপাটি করে সম্পন্ন করার দক্ষতায়, পুরুষের সব অন্যায় মুখ বুজে মেনে নেওয়ার সহনশীলতায়। লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়ানো, সংসারের দায়িত্ব নেওয়া, অন্যায় হতে দেখলে তার প্রতিবাদ করা, এ সব মেয়েদের কাজ নয়, এগুলো তো ছেলেদের জন্য বরাদ্দ। মুখে কিছু না বললেও বনবীথি কিন্তু এই বিভেদ মেনে নিতে পারেনি। তাই ছোটবেলা থেকেই সাজগোজ করার চেয়ে লেখাপড়া করার দিকেই ওর আগ্রহ ছিল বেশি; স্বপ্ন ছিল একদিন অর্থনৈতিক ভাবে আত্মনির্ভর হওয়ার। বি,এ পাশ করার পর বনবীথির বান্ধবীরা যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসবার জন্য প্রতি রবিবারে সেজেগুজে পাত্রপক্ষের সামনে হাজিরা দিতো, ও তখন খবরের কাগজের বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির জন্য দরখাস্ত লিখতো। তবে বনবীথির চাকরি পাওয়ার আগেই বিকাশবাবু মেয়ের জন্য সুপাত্রের সন্ধান পেয়ে গেলেন। পরিস্থিতির চাপে আত্মনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন শিকেয় তুলে বনবীথিও বসে পড়ল বিয়ের পিঁড়িতে। শ্রাবন মাসের এক শুভলগ্নে আত্মীয়-পরিজনদের ভুরিভোজন করিয়ে উজ্বল-শ্যামবর্না, দীর্ঘাঙ্গী, তন্বী, সুকেশী, গৃহকর্মনিপুনা বনবীথির সাথে সুদর্শন, সুপুরুষ, উচ্চ-বেতনধারী, বেঃসঃচাঃ প্রদীপবাবুর শুভ পরিণয় সুসম্পন্ন হল।
বাপের বাড়ির মতোই বনবীথির শ্বশুরবাড়িও ছিল পুরুষতান্ত্রিক। সেখানে শ্বশুরমশাইয়ের কথাই ছিল শেষ কথা, শাশুড়ি থেকে শুরু করে বাড়ির ঠিকে-ঝি অবধি সবাই তাঁর আদেশ শিরোধার্য করতো। মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছিল বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তাই নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে বনবীথির কোনো অসুবিধা হল না। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ও গর্ভবতী হল, যথাসময়ে সুস্থ,সবল পুত্রসন্তানের জন্ম দিল। জীবন এগিয়ে চলল নিজের গতিতে। তবে বিধি বাম। প্রদীপবাবুর বেসরকারি অফিস একদিন বিনা নোটিশে বন্ধ হয়ে গেল। তাতে অবশ্য বনবীথির খুব বেশি চিন্তার কিছু ছিল না; প্রদীপবাবুর যোগ্যতা ছিল, অভিজ্ঞতা ছিল, কিছুদিনের মধ্যেই একটা নতুন চাকরি জোগাড় করে ফেলতে কোনো অসুবিধা হবে না। তাছাড়া ওদের ছিল যৌথ পরিবার; শ্বশুরমশাই অবসরগ্রহন করলেও ভাসুরেরা ভালোই রোজগার করতো, তাই স্বামী বেকার হয়ে গেলেও খাওয়া-পরা নিয়ে বনবীথির মাথাব্যথা করার কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকা, ভাসুরদের দয়াদাক্ষিণ্যে ছেলেকে ভালোমন্দ খাওয়ানো; স্বাভিমানী বনবীথির মন কিছুতেই স্বায় দিলো না তাতে, সবার অলক্ষ্যে ও রোজগারের চেষ্টা করতে শুরু করলো। সুফল পেতে বেশি সময় লাগলো না, স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে সহ-শিক্ষিকার চাকরি পেয়ে গেল বনবীথি।
চাকরি পাওয়ার জন্য খুব বেশি লড়াই করতে হয়নি বনবীথিকে, ওর লড়াই শুরু হয়েছিল চাকরি পাওয়ার পর। রক্ষনশীল শ্বশুরমশাই বাড়ির বউয়ের এভাবে বাইরে বের হওয়াটাকে একেবারেই মেনে নিতে পারেননি; যেখানে পুত্র বেকার সেখানে পুত্রবধূ রোজগার করে আনবে, এ আবার কখনও হয় না কি? সুযোগ বুঝে শাশুড়ি আর জায়েরাও গায়ের জ্বালা মিটিয়েছিল বলেছিল,”বাড়ির বউ এভাবে ড্যাং ড্যাং করে সারাদিন ঘুরে বেড়ালে সংসারের কাজগুলো কে করবে?”
প্রতিকূলতার স্রোত আছড়ে পড়লেও হাল ছাড়েনি বনবীথি। মন শক্ত করে এগিয়ে চলার শপথ নিয়েছিল। তখন শক্ত হাতে হাল ধরেছিল বলেই আজ সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সহ-শিক্ষিকা থেকে উপ-প্রধানশিক্ষিকার পদে উন্নীত হতে পেরেছে। টোটো রিক্সাটা একটা ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যেতেই চিন্তায় ছেদ পড়ল বনবীথির। অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে এলেন উনি, চোখ তুলে দেখলেন গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছেন।
 
                                                           (৩)
জামাকাপড় ছেড়ে হাতমুখ ধুয়ে ডাইনিং টেবিলে এসে বসতে না বসতেই বনবীথির সামনে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ রেখে গেল বন্দনা। হাঁটুর ব্যথার জন্য বনবীথি এখন আর বেশি কাজ করতে পারেন না তাই বন্দনা রান্নাবান্না করার সাথে ঘরের বাকি কাজও করে। বনবীথি আয়েশ করে গরম চায়ে চুমুক দিলেন। ওপর থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীতের মিহি আওয়াজ ভেসে আসছে। দোতলায় নিজের ঘরে বসে গান শুনছেন প্রদীপবাবু। ওঁর দুটি শখ, এক গান শোনা আর এক গাছ লাগানো। সেই যে একদিন হঠাৎ করে বিনা নোটিশে প্রদীপবাবুর বেসরকারি অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তারপর থেকে আর বেসরকারি চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেননি উনি, বেশ কিছু কাঠখড় পুড়িয়ে জোগাড় করে নিয়েছিলেন একখানা সরকারি চাকরি। তারপর কর্মজীবনের বাকি সময়টাতে নিশ্চিন্তে কাজ করেছেন। আর এখন সকালবেলায় গাছের পরিচর্যা করা আর বিকেলে গান শোনা, অবসর জীবনটাকে ভাগ করে দিয়েছেন এই দুইয়ের মধ্যে। নিজের শখ নিয়ে বেশ শান্তিতেই আছেন উনি।
লম্বা নিঃশ্বাস নেন বনবীথি। প্রদীপবাবুর মতো উনিও তো পারতেন নিজের সাধ, আহ্লাদ পূরন করে অবসর জীবনটা কাটিয়ে দিতে। চাকরি করার সময় মনে ক্ষোভ ছিল পুজো করার সময় নেই বলে, আর এখন; হাতে অফুরন্ত সময়, মার্বেল পাথর দিয়ে বাঁধানো ঠাকুরঘরে আরাধ্য দেবী, দেবতা কিন্তু কিছুতেই আর পুজোয় মন বসাতে পারেন না বনবীথি। হতাশা গ্রাস করে ওঁকে, মনে হয় উনি সবার কাছে অপ্রয়োজনীয় হয়ে গিয়েছেন। প্রদীপবাবু বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কর্মজীবন শেষ মানেই জীবনের শেষ নয়, কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। আসলে উপার্জনের আশায় শিক্ষকতাকে পেশা হিসাবে গ্রহন করলেও পরে এটাই বনবীথির নেশায় পরিনত হয়েছিল। নিজের কর্মজীবনে বনবীথি এতোটাই নিবেদিত প্রাণ ছিলেন যে এখন কোনো কিছুই আর ওঁকে তেমনভাবে টানে না। এতোদিন ছাত্রছাত্রীদের ভালো লাগা, তাদের ভালোবাসা অতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে ছিল বনবীথির ভালো থাকার সাথে। এখন আর সে সব দায়িত্বের বেড়ি নেই তবুও মন কিছুতেই ডানা মেলতে পারছে না, মনের ডানা যে কর্মমুখর জীবনের স্মৃতিতে ভারাক্রান্ত।
“দিদি, তুমি আমার ভাইঝিটাকে একটু পড়া দেখিয়ে দেবে। ও এবার সিক্সে উঠেছে”, বন্দনার কথায় সম্বিত ফিরল বনবীথির। নিঃসন্তান, বিধবা বন্দনা ওর দাদা, বৌদির সাথেই থাকে। ওদের পরিবার খুবই গরিব। অনেক কষ্টে মেয়েটাকে লেখাপড়া শেখাচ্ছে ওরা।
“কাল থেকে পাঠিয়ে দিও”, খুশি হয়ে বললেন বনবীথি। আর তখনই ওঁর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল। একতলার একটা ঘর তো ফাঁকাই পড়ে আছে। কালেভদ্রে যদি কোনো আত্মীয়স্বজন রাতে থেকে যেতে চায় তাহলে ওখানে শোওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়। সেই ঘরটাতে যদি একটা অবৈতনিক স্কুল খোলা যায় তাহলে কেমন হয়! যাদের লেখাপড়া করার ইচ্ছা আছে কিন্তু প্রাইভেট টিউটরের কাছে যাওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি নেই তাদের পড়াবেন বনবীথি।
চায়ের কাপ ফেলে রেখে বনবীথি পা বাড়ালেন দোতলার দিকে। প্রদীপবাবুকে জানাতে হবে ওঁর নতুন পরিকল্পনার কথা। জীবনের চড়াই-উৎরাইতে সব সময় পাশে পেয়েছেন ওই মানুষটাকেই। হাঁটুর ব্যথা ভুলে সিঁড়ি দিয়ে তরতরিয়ে উঠতে লাগলেন বনবীথি, ওঁর নিস্তরঙ্গ জীবনে এসেছে উৎসাহের ভরা-কোটাল।
প্রদীপবাবুর ঘর থেকে তখন ভেসে আসছে বনবীথির মনের কথা, “এবার তোর মরা গাঙে বাণ এসেছে, জয় মা বলে ভাসা তরী…

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত