যুগল গদ্য
চূর্ণ গদ্য
০১
কুকুর বিশ্বস্ত হয় জানি, কিন্তু শাকিলা মমতাজ একটি অবিশ্বস্ত কুকুর পুষেছিল। তারা কোনো এক নিঝুম সন্ধ্যায় মৃত উনুনের পাশে বসে কয়েক পেয়ালা চা পান করেছিল।আর তখন ভরা পূর্ণিমার রাতে আমাদের বংশাই নদে অজানা পানসি ভেসে বেড়ায়! পানসিতে নীল পরীরা নৃত্য করে। কেবল বেল্লাল মুন্সী দেখে সেই পরীর নৃত্য! আর সেই গুপ্তকথা মানুষেরা জেনে গেলে ফড়িংয়েরা আত্মাহুতি দেয়…
ফুট নোট:
একেকটি ভূমিকম্পের পর প্রেমিক-প্রেমিকাদের পরস্পরকে আলিঙ্গন করা উচিত
ফুটনোট ২:
মিনতি মাসী ইন্ডিয়া চলে গেছে
পাথরাইল এখন একটি এনজিও তাঁতগ্রাম
০২
কোথাও কি পাড় ভাঙছে?
মিহি কান্নার ধ্বনি শুনতে পাচ্ছ!
তীর্থঙ্কর! তিরিশ লক্ষ বছর ধরে কেবল হাঁটছিই
পঙ্খীরাজ কোথায়! অলৌকিক উদ্যানে ব্যঙ্গমা-ব্যঙ্গমী আর কতকাল ভবিতব্য বলে যাবে!
তুমি বলো,
প্লিজ, স্টপ ক্রাইং মাই ডিয়ার। আই হেইট য়্যু মোর দ্যান মাগট!
একটি শব্দের জন্য প্রার্থনা:
আমি এখন কী করবো! ভোর অব্দি আমি বসে আছি একটি শব্দের জন্য। যে শব্দটি দিয়ে আমি আমার প্রিয়তমজনকে অভিবাদন জানাবো। অথচ শব্দটি কিছুতেই আমার কাছে ধরা দিচ্ছে না। আমি বাণী দেবীর কাছে প্রার্থনা করি, হে বীণাপাণি, শব্দটি আমার খুব প্রয়োজন। সেই রাত এগারোটা থেকে আমি শব্দটির তালাশে কতো সহস্র পথ পাড়ি দিয়ে এলাম! কতো কতো বন জঙ্গল! পাহাড়, নদী, খালবিল! জানালা- দরোজা, অভিধান, সংবিধান! ল্যাপটপ, কম্পিউটার, অন্তর্জাল, আন্তঃজাল! কতো কিছুর কাছে গেলাম। হাত পাতলাম। অনুনয় করলাম।তুমি দয়া করে শব্দটি আমায় দাও। আমার বুকের ভেতর এখনো কামারের তেহাই পড়ছে।! আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।
কিন্তু আমি চাই না, আমার শ্বাসকষ্ট হোক। কেননা আমার শ্বাসকষ্ট হলে গাছের পাতার প্রস্বেদন, সালোক সংশ্লেষণ বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে জাহাজের প্রপেলার। সিঙ্গাপুরগামী জাহাজটি মাঝ সাগরে নোঙর করে থাকবে। বন্ধ হয়ে যাবে সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প। এমন কি লক্ষ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণাও। শোক নেমে আসবে সংসদ ভবনে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ক্রুদ্ধ হয়ে একশ ডিসি এসপিকে সারারাত ধরে গৃহবন্দী রেখে পরের দিন প্রেপ্তার দেখাতে পারবেন না। তাই পর পর দুইবার আমি ইনহেলার নিলাম ফুসফুসে।
এরপর একে একে রাত ১১টা, ১২টা, একটার সংবাদের বুলেটিন সাজাই, হেডলাইন বানাই। সাজাই। এতো এতো শব্দ বসাই। অথচ একটি উপযুক্ত শব্দের অভাবে এখন আমাকে নির্ঘুম রাত পার করতে হবে! আমি এখন কী করবো! কার সাহায্য। নেবে। আমি কি এখন কহলীল জিব্রানের কাছ থেকে শব্দ ধার করবো! নাকি রবীন্দ্রনাথের গানের কাছে হাত পাতব! ।অসত্য কিংবা মিথ্যে বলা আমার ধাতে একেবারেই নেই!
কুকুর গোত্রের নারী আমি। প্রভুভক্ত, বিশ্বস্ত।
এই যে রাতের নিস্তব্ধতা আমি ঘুমাতে পারছি না। অথচ
পৃথিবীর পাঁজর পরিক্রমণ শেষ করছে রক্তবর্ণ চাঁদ। আমি কি এখন ভোর না হওয়া অবধি তোমার শোবার ঘরের সামনে নিঃসঙ্গ এক ছায়া হয়ে থাকব! আমার কান্না পাচ্ছে। তীব্র তাপে বিছানার জ্বর আসে। এক বালতি জল ঢেলে দেবো নাকি! একদিন শব্দের বাগানে কতো কতো ঘুরে বেরিয়েছি। একদিন মানুষ ছিলাম।
বিপুল অরণ্যে নক্ষত্র সহচরে তাই কুড়িয়েছিলুম বনজ কুসুম। এখন দীর্ঘ রজনী শেষে বাতাসে ভেঙে পড়ছে কাচের মাংস। দূর এক পৃথিবী থেকে ভেসে আসে পশুদের ঘ্রাণ!
বিষণ্ন ভূমণ্ডলে
কে আমি ভগ্নজীব জেগে আছি
কুকুর বংশীয়া…