সুমন বনিকের দুটি ছড়া
সোনায় মোড়া জুতো
হাঁটতে হাঁটতে দাঁড়াই এসে গোপী গাইনের কাছে
তোমার কাছে আরও অমন জাদুর জুতো আছে?
কপালে চোখ তুলে বলে সর্বনাশা কথা!
সোনায় মোড়া জুতো পরলে হাঁটবে যথা তথা।
মুখ ফিরিয়ে বাঘা বাইনকে বলি কাতরস্বরে
জুতো জোড়া পেতেই হবে ভুগছি দারুণ জ্বরে।
জুতো জোড়ায় ক্ষিপ্রগতি আকাশ পাতাল চষে
জাদুর ছোঁয়ায় চন্দ্র-তারা পড়বে নাকি খসে!
অমন কথা বলতে গো নেই থাকো মর্ত্য ধামে
জাদুর জুতো পেতে হলে চিঠি পাঠাও খামে।
আমলাতন্ত্র গণতন্ত্র সকল পথটি ধরে
দিনের শেষে পৌঁছতে পারো জন্তর-মন্তর
ঘরে।
এতো পথে হেঁটেও যদি জুতো নাহি জোটে!
তবুও জুতো পেতেই হবে খুঁজবো খুঁটে খুঁটে ।
দয়া বশে গোপী বাঘা জুতো ছুঁড়ে মারে
ওড়ে এসে জুতো জোড়া পড়লো আমার ঘাড়ে।
হঠাৎ করে ঘুমটি ভাঙ্গে ছিঁড়ে কাঁথা গায়ে
চেয়ে দেখি ছেঁড়া জুতো আমার দুটো পায়ে!
দুটি পাখির গল্প
মুচকি হেসে চড়ুই বলে আসছে ধেয়ে ঝড়
বাবুই তুমি গাছের ডালে ঘর যে নড়বড়!
আমরা থাকি দালান কোঠা পাকা বাড়ির খোপে
তোমরা থাকো তালের গাছে বন-বাদারে ঝোপে।
এই বোশেখে তুফান এলে কেম্নে সামাল দেবে
মনটা তাই কেঁদে উঠলো তোমার কথা ভেবে ।
আর হেসো না গোল করো না ঝড়ের কথা জানি
থাকি না হয় ঝুপ-ঝাড়েতে প্রকৃতিরে-ই মানি।
কাল বৈশাখী সবার জন্যে আমার একা নয়
প্রলয় এলে দালান বাড়ি অক্ষত কি রয়?
নিজের কথা তাই ভাবিনি নেই তো কোনো ভয়
ঝড়ের মুখে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে যুদ্ধে যেতে হয়।

সিলেট শহরের মহাজনপট্টিতে ৩১আগস্ট ১৯৬৭তে জন্ম । কবিতার সঙ্গে পথচলা তিন দশকের। স্থানীয় এবং জাতীয় পত্রপত্রিকায় লেখালেখি চলছে । সাহিত্যের ছোটোকাগজ “অগ্নিশিখা” সম্পাদনা করছি। অগ্নিশিখা প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে। প্রকাশিত কবতাবই তিনটি —
“জ্বলছি জলের তলে”,”প্রেমযোগ” “অবেলায় ডোরবেল” । নিয়মিত ছড়া ও কিশোর কবিতা লিখছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে কলেজের শিক্ষকতা দিয়ে পেশাজীবন শুরু হলেও বর্তমানে ব্যাংকিং পেশায় কর্মরত ।