সুন্দর যাপনের এই জীবন
ছোট্ট একটি জীবনে হাজার ব্যস্ততার মাঝে নিজেকে একটুখানি সময় প্রায় দেয়াই হয়ে ওঠে না। জীবনের ঘানি টানতে টানতে আমরা ভুলেই যাই যে সুন্দরভাবে বাঁচাটাও একটি শিল্প। আর এ শিল্পকে রপ্ত করার কিছু সহজ ও সুন্দর উপায়ও রয়েছে। এই সবগুলো সুন্দর জীবনযাপনের উপায় বা এর অর্ধেকও যদি কাজে লাগানো যায়, তবে আপনার জীবনযাপন প্রক্রিয়া হয়ে উঠবে আরও আনন্দময়!
সুন্দর জীবনযাপনের উপায়
প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪০ মিনিট হাঁটুন। হাঁটার সময় মুখে মৃদু হাসি ধরে রাখুন, হতাশা নির্মূলে এর চেয়ে ভাল উপায় আর হয় না। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট চেষ্টা করুন চুপচাপ বসে থাকতে। এ সময়টা নিজের ও চারপাশের সবকিছুকে নিয়ে মঙ্গলময় কিছু একটা চিন্তা করুন। আপনার ভেতরের ভালোটাকে বেড়ে উঠতে দিন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আপনার সৃষ্টিকর্তার কাছে সারাদিন চলার জন্য একটি দিকনির্দেশনা প্রার্থনা করুন। এতে নিজের ওপর বিশ্বাসটা জোরালো হবে। দেখবেন আপনি চাইলেও ভুল পথে পা বাড়াতে পারছেন না। প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ কমিয়ে গাছের ও চাষকৃত খাবার বেশি করে গ্রহণ করুন। কারণ পুষ্টি এতে পুরোটাই পাবেন।
সকালবেলায় খালি পেটে গ্রীন টি পান করলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া গ্রীন টিতে রয়েছে কিছু ভেষজ গুণ। তবে বিকেলের পর যেকোন ধরনের চা পান থেকে বিরত থাকুন। নইলে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান নিশ্চিত করুন। পানি শরীরের ভেতর থেকে সব ধরনের বর্জ বের হতে সাহায্য করে এবং অভ্যন্তরীণ জটিলতা দূর করতে সাহায্য করে।
আপনার খাবারের তালিকায় ব্রকলি, বাদাম ইত্যাদি রাখুন। মৌসুমী ফল ও শাক-সবজির প্রাধান্য রাখুন আপনার খাবারে। প্রতিদিন অন্তত ৩ জন মানুষকে হাসাতে চেষ্টা করুন। তাহলে আপনি নিজেও অনেক নির্মল আনন্দ পাবেন।
আপনার মূল্যবান সময়কে অহেতুক আড্ডা, নেতিবাচক ও অতীত চিন্তা কিংবা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরের চিন্তা-ভাবনায় নষ্ট করবেন না। বরং ইতিবাচক বর্তমান চিন্তায় তা নিয়োগ করে ভবিষ্যত সুনিশ্চিত করুন।
আধুনিককালে একটি প্রবাদ খুব জনপ্রিয়, ‘সকালের নাস্তা খান রাজার মতো, দুপুরের খাবার খান প্রজার মতো আর রাতের খাবার খান ভিক্ষুকের মতো।’ প্রবাদটির নিগুঢ় অর্থ হচ্ছে, আমাদের সারাদিন কাজ করার যে শক্তি, তা সকালের নাস্তা থেকেই অর্জিত হয়ে থাকে। তাই সকালের নাস্তা খেতে হয় পেট পুরে। দুপুরবেলায় তার চেয়ে কিছু কম আর রাতে খেতে হয় সবচেয়ে কম।
জীবনটা খুব সহজ নয়, তারপরও জীবন অনেক সুন্দর! কথাটাকে বিশ্বাস করে এগিয়ে চলুন। ছোট এই জীবনটা কাউকে ঘৃণা করে কাটিয়ে দেয়াটা বোধহয় খুব বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ছোটখাটো বিষয়ে ক্ষমা করে দিয়ে যদি শান্তি বজায় থাকে তবে ক্ষতি কি?
সবকিছুকে এতটা সিরিয়াসলি নেয়ার কি খুব দরকার? কেউ নেয় না! কাজেই রিল্যাক্স করুন, শান্ত থাকুন। উত্তেজিত হলেই বিপদ!
প্রতিটা তর্কে জেতা আপনার জন্য জরুরী নয়। ভুল বোঝাবুঝির সম্ভাবনা দেখলে এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।
অতীতেই শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করুন, যাতে তা আপনার সুন্দর বর্তমানকে কলুষিত করতে না পারে।
নিজের জীবনকে অন্যের জীবনের সঙ্গে তুলনা করতে যাবেন না। আপনার সুন্দর জীবনযাপনের উপায় আপনার কাছেই আছে। কারণ অন্যেরা কোন উপায়ে জীবনযাপন করে, সে সম্পর্কে আপনার কোন ধারণা নেই।
আপনার নিজের সুখ-শান্তি আপনার হাতেই। কেউ তা গড়ে দিতে পারবে না। জীবনের তথাকথিত সকল সমস্যায় নিজেকে একটি প্রশ্ন করুন, ‘৫ বছর পর এই সমস্যা কি আর থাকবে?’ মন শান্ত হয়ে আসবে।
‘ভোগে নয়, ত্যাগেই প্রকৃত সুখ’- কথাটাকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে আপনার চেয়ে যারা দুর্ভাগা, তাদের সাহায্য করুন। জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পাবেন।
অন্যেরা আপনাকে নিয়ে কী ভাবছে, তাতে আপনার কিছু আসে যায় না। অন্যের প্রশংসাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজে লাগান আর সমালোচনাগুলোকে মেনে নেয়ার চেষ্টা করুন। সমালোচনায় নিজের ভুলগুলোকে শুধরানোর সুযোগ পাবেন।
সময় সবকিছুকে ধুয়ে-মুছে দেয়। পরিস্থিতি যত খারাপ বা ভালই হোক না কেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবর্তিত হয়। আপনার কর্তব্য শুধু উদ্দীপনা ধরে রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা।
আপনি বিপদে বা অসুখে পড়লে আপনার চাকরি আপনার দায়িত্বে নেবেন না, তবে বন্ধুবান্ধবরা নিতে পারে। কাজেই বন্ধু-বান্ধবের সান্নিধ্যে থাকার চেষ্টা করুন।
এক জীবনে আপনি অনেক পেয়েছেন বা পাবেন। অকারণে ঈর্ষা করাটা তাই সময় নষ্ট আর নিজের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই না।
প্রতিরাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিন জীবনে যা কিছু পেয়েছেন তার জন্য আর প্রার্থনা করুন আগামী দিনটির জন্য।
উপরোক্ত সুন্দর জীবনযাপনের উপায় সম্পর্কিত কথাগুলো পৌঁছে দিন অন্য কারও কাছে তাকে সুন্দরভাবে বাঁচতে সাহায্য করার জন্য।
জেনে নিলেন কিছু সুন্দর জীবনযাপনের উপায় সম্পর্কে। অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য। সুন্দর হোক আপনার জীবন।