ব্রত রায়ের একগুচ্ছ ছড়া
আজ ২১ জানুয়ারী ছড়াকার ব্রত রায়ের শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
ছাতা ঝমঝমে বৃষ্টি বা কাঠফাটা রোদ্দুর রোদে পুড়ে, জলে ভিজে যাবে তুমি কদ্দূর? বিদেশিরা তাই দেখি সাথে ছাতা রাখবেই— পা ভিজুক, গা ভিজুক—মাথাটাকে ঢাকবেই! কেউ বলে ‘মিসরেই জন্ম ও বস্তুর’, ‘চীনে’ বলে তর্কটা জোড়ে পুরো দস্তুর— কেউ কেউ। যা-ই হোক, ছাতা নানা প্রকারের— সাদা ছাতা পুলিশের, রংচঙে জোকারের! ছাতা হয় কাপড়ের, প্লাস্টিক, চর্মের— একালের টিপছাতা নয় কোনো কর্মের! সেকালের কালো ছাতা ছিল ভালো, টেকসই— গুণে-মানে ছিল সব এক শতে এক শ-ই! ছাতা ফটো-সিনেমায়, ফ্যাশনেও দেখছেন— ছাতা নিয়ে কত কবি কবিতাও লেখছেন! ছাতা বড়ো দরকারি, আছে নানা কাজ তার— ছাতা হলো আইকন আশ্রয়, আস্থার! চশমা কোথায়? দাদুমনির চশমা কোথায়? বসার ঘরের তাকের ওপর? নেই তো! তবে স্নানের ঘরে? রান্নাঘরের শাকের ওপর? কে নিয়েছে? কে নিয়েছে? দোষ চাপাবে কাকের ওপর? হন্যে হয়ে খুঁজছে দাদু দাম কি সেটার লাখের ওপর? উঁহু। এটা দরকারি চিজ থাকতে হবে নাকের ওপর হঠাৎ দেখে আয়নাতে সে চশমা আছে টাকের ওপর! ভাসছে বাঁশির সুর সকালবেলায় ঘুম ভেঙ্গে শুনি পাখি গায় সুমধুর কী গান জানো কি? পাখিরা গাইছে, মুজিবুর মুজিবুর! নদীটির কাছে জানতে চেয়েছি যাবে তুমি কতদূর? নদীর ঢেউয়ের কলতানে শুনি, মুজিবুর মুজিবুর! হাওয়ায় হাওয়ায় দূর থেকে যেন ভাসছে বাঁশির সুর সেই সুরে আমি শুনি যে কেবল মুজিবুর মুজিবুর! অবাক হলাম। ভাবলাম। ভেবে এইটুকু বুঝলাম হাওয়া-নদী-পাখি সকলেই জানে শেখ মুজিবের নাম! . মুজিবের কথা বলছে সৈয়দ মাসুদ হোসেন কোনো একটা শব্দ আসছে কোনো একটা ধ্বনি, তাঁকে খুঁজতে এসে দেখি কেউ নেই শুধু তাঁর বজ্রকণ্ঠ শুনি। এদিক সেদিক খুঁজে বেড়াই, দাঁড়াই সিঁড়ির কাছে, শব্দেরা যেন পাশাপাশি বসে মুজিবের কথা বলছে। পাখির সকাল এখন সকাল। উঠোনজুড়ে নরম রোদের বিছানা আজ উঠোনে পাখির মেলা! হাজির বুড়ো, কী ছানা! চলছে তাদের কিচিরমিচির। আড্ডা বসায় পাখিরা একটা পাখি ছায়ায় বসা, পোহাচ্ছে রোদ বাকিরা। আমার মতো ওই পাখিটার জ্বর হয়েছে? আহা রে! জ্বর হলেও কমলা-আপেল খাওয়ায় না কেউ তাহারে! যাই, বাটিতে চাল এনে তা দিই ছড়িয়ে উঠোনে মা কন, ‘বোকা, ওইটুকে হয়? এই নে আরও দুটো নে!’
