আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
আজ ১৭ জানুয়ারী কবি,গল্পকার ও সম্পাদক শীলা বিশ্বাসের শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
দধীচি পুরুষ
দধীচি পুরুষ চতুর্বর্গ লক্ষ্য তোমার নয়
সংগ্রামের দিনে
বুকের ভেতর পোষ দ্রোহের গান
মৃত্যু মেখে রাখো জীবনে
নদীর মতো উদ্দাম ছুটে
আগুনে ঢেলে দাও অস্থি
পৃথিবীর বুকে জ্বলে ওঠে মশাল
ভাষাতন্ত্রে জাগাও স্বাধীনতার শপথ
স্বপ্নরাত মোছে নেপথ্য কান্না সঙ্গীত
তুমি শোন আর কে শোনে সে সব
বর্ণমালা জুড়ে রক্তের ধারা আর আর্তরব
শোনে ভাষাপাগল কবি আর তার শব ।।
শস্যঋণ
শস্যঋণ বাড়ন্ত ডালপালা ছড়ানো
তপ্ত মাটিতে বৃষ্টি অচানক
“শুধু তোমার বানী নয় গো …”
এসো পদচিহ্ন আঁকো শরীর ক্ষতে
বিষণ্ণতায় সুখ ছোঁয়া
পাপড়ি বিন্যাস শিক্ষা নিয়ে
স্পর্ধিত পেলব মাধুকরী দিনে
আসুক নেমে চন্ডিদাসী পদে
নিঃশব্দে এই বসন্ত শেষেও
আমাদের মধ্যেকার সামান্যতম ফাঁক
ঢেকে যাক বুজে যাক নৈঃশব্দের দ্যোতনায়
আবাদিত শিল্প মুহূর্তে ।।
ও মেয়ে
ও মেয়ে তুই জানতিস
তোর পুরুষ সঙ্গীর সামনেই
তোকে বিবস্ত্র করে
শরীরে গিথে দেবে দন্ড
ও মেয়ে তুই জানতিস
পাশে পড়ে থাকে পরনের শাড়ী
অর্ধমৃত শরীরের রক্ত ধারায়
লাল হয়ে যাবে
ও মেয়ে তুই জানতিস
তোর সঙ্গী প্রতিবাদী হওয়ায়
সেও ক্ষত বিক্ষত হয়ে
মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ?
ও মেয়ে তুই জানতিস
মুক্ত চিন্তার কথা বললে
মুন্ড ধর আলাদা করবে
ধর্মান্ধের চাপাতি
ও মেয়ে তুই জানতিস
সত্তর দিন কি সত্তর বছর
তুই নিরাপদ নোস এমন কি
লাশ কাটা ঘরেও
ও মেয়ে তুই জানতিস
ওদের জাত ধর্ম নেই
আছে ভেক ধারী পোষা শয়তানের
স্বার্থান্বেষী মগজের চাল।
নদীর নিজস্ব তরঙ্গে নৌকা ভেসে যায়
নিভু আঁচে সেঁকে নেয় চাঁদের এপিঠ ওপিঠ
নীল জ্যোৎস্না এসে ঢেকে দেয় যা কিছু পার্থিব
গাছের শাখাটি ঈষৎ হেলে থাকে উন্মুখ নদীর বুকে
কেঁপে ওঠে গোলাপি ঠোঁট প্রবাসী চোরাস্রোতে
কবোষ্ণ স্তনবৃন্ত থেকে চুঁইয়ে নামে গ্রহনের সুখ
ভালোবাসা আর হিংস্রতার প্রভেদ জানে নখের দাগ
খননের চিহ্নটি ঢেকে রাখার প্রকরণ শেখায় মেঘ
সংগোপনে তার সমগ্র আকাশ মেলে ধরে নদীর কাছে
প্রত্যাশা ছিল একদিন শুভসন্ধ্যা ভেসে উঠবে আলোকিত জলে
এখন ভেসে ওঠে শুধুই নিকষ অন্ধকার
বন্ধুত্বের কখনও কোনো বয়স হয় না একথা তুমি বোলতে
তুমি চলে গেলে বন্ধুত্ব বয়সী হয়ে উঠল
নৈঃশব্দে পরিযায়ী প্রেম ঘিরে ছিল কবিতার মধুচন্দ্রিমায়
এখন উচ্চকিত বিরহ নামে নিঃসঙ্গ কবিতার শরীরে
আমার কোনও গল্প বহুদিন তোমাকে ছোঁয় না
অসম্পূর্ণ পড়ে আছে নীল মানুষের গল্প
লাঞ্চটাইমের ডেকার্স লেন, চলন্ত ট্রাম,
কলেজ স্ট্রীটের পুরানো বইয়ের গন্ধ,
কফি হাউসের ভিড়, তুমি নেই কোথাও !
দোকানের ছিটকাপড় থেকে বুদ্ধ হাসলেন
চৈএসেলে ফাঁকা পকেটে অজাতশত্রু
ফুটপাথে রেলিঙে বাধা রঙ চটা কাপড়ের দোলনায় বুদ্ধ কাঁদেন
কোলে নিয়ে কে কান্না থামাবে ?
বৈরাগ্য নয় , কৃচ্ছসাধনও নয় ,
বোধির আশ্চর্য বৃক্ষ থেকে টুপ টাপ ঝরে পড়বে তুমি
আমার গল্পের প্রধান উপজীব্য হয়ে
রজনীগন্ধা ভোর পেরিয়ে গেলে
সকাল বেড়ে দিই সুগন্ধী চায়ে
স্নান ঘরের জুঁইয়ের ফেনায়িত বুদ্বুদ
গিলে ফেলে রাত্রিকালীন ঘাম
দ্বিপ্রাহরিক সূর্য ছায়াগন্ধ মেখে
বকুলগন্ধী উড়ুক্কু একঢাল চুল
ঘুমোবার আগে বুকের গন্ধটুকু
সুখি বিড়ালের মত আঁশগন্ধ মেখে
খুলে দিই আকাশের বন্ধ দরোজা
উজাগর রাত্রি রাখা আছে নিষ্পাপ ভোরের কাছে
গন্তব্যে পৌঁছানর আগেই পথ সরে যায়
নিষিদ্ধ গ্রাফিটি শহরের দেওয়াল জুড়ে
চিত্রকরের নাম শুধু দেওয়াল জানে
ভেসে আসে শৃঙ্খল ভাঙার শব্দ
প্রথা ভাঙার নিয়ম চালু হলে পেরিয়ে যায় দশদিক
Related