| 19 এপ্রিল 2024
Categories
গদ্য সাহিত্য

মাংস

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

প্রতিটি ভুল, প্রতিটি ভুলে যাওয়া বা ইচ্ছেমতো শব্দ ধরে-ধরে শূন্যস্থান পূরণ করা অথবা সিদ্ধান্তে পৌঁছনো; জাজমেন্টাল হওয়া এসবই এক-একটা দুর্বল কৌশল। এইসব কৌশলের ঘরে আসলে বেহুলার বেডরুমের মতো কিছু আনপ্রেডিক্টেবল ফাঁক থাকে। ফোকর থাকে। আর এর আকৃতি এতো মাইক্রোস্কোপিক যে খালি চোখে তা ধরা অসম্ভব! তাই তাকে অতিক্রম করে গেলেও উপেক্ষা করা যায় না কখনোই! তোমার ওই পলিটিক্যালি করেক্ট লজিকের মতো। হকচকিয়ে যাবার মতো। অপরাধবোধে ভোগার মতো। উপভোগ্য বেশ। অথচ, ধরা পড়ে যায় সবই; ওই চোখ এড়িয়ে যাওয়া ফাঁকও; আবার নির্ভরযোগ্য মিথ্যের সোমও। সময়-সোম-ফাঁক একটা প্যারালাল রেখা ধরে ধীর গতিতে এগিয়ে যায়। গালিবনামা থেকে কুচিকুচি কুয়াশার মতো খসে পড়ে এক-একটা সাদা-কালো নিঃস্ব রিড। নিঃস্বই ওরা। একসঙ্গে থেকেও কত মানুষ কত একলা হয় তো! আমরা ‘অনেক’ দেখি; হ্যালিউসিনেট করি। একটা নেশা পেয়ে বসে। দুর্মর সে-নেশা। উপেক্ষা করা কঠিন। প্রতিটি ভুল একটা আত্মবিশ্বাসী দড়ির ওপর দিয়ে হেঁটে এগিয়ে যায়। রিং-মাস্টার হাসে। আমরা কখনও সজোরে দু-চোখ বুঝে দু-কান চেপে ধরি; কখনও বুক চেপে ঘাড়টা ঘুরিয়ে নিই। মনে হয় ঠিক যেন তাঁবু খাটানো সার্কাস-শো’এর দর্শকাসনে! তফাৎ একটাই; সেখানে রিং-মাস্টারকে দ্যাখা যায় আর এখানে চোখে নয় মনে দ্যাখা যায়, এই-যা! শুধু নিজেরা নিজেদের আনন্দ দেবে বলে একটা তাজা মানুষকে স্কেপগোট করবে! মাঝেমাঝে জায়গা বদল খুব দরকার এবং জরুরিও।

ধ্বংসের কোনও অনুবাদ ও আওয়াজ হয় না। কাউকে কিছু না-বলেই সে পালিয়ে যায় চিরকালের মতো। অতএব চিহ্ন থাকে না। শুধু অনুভব করা যায়। স্ক্রল করা জীবনের একপাশে ভাঙা বাঁশের সাঁকোর মতো একটা লম্বা ভাঁজ-ভাঁজ চুল পড়ে থাকে…গ্রে-হেয়ার। প্রাচীন দুঃখ প্রাজ্ঞ হয়। বটের অসংখ্য নেমে আসা ঝুরির মতো কাটা-ছেঁড়া জীবনটা কেমন ঝুলতে থাকে, হাওয়া এসে দুলিয়ে দেয়! অনেকটা কসাইয়ের দোকানে সারিবদ্ধ ঝোলানো চামড়া ছোলা খাসির দেহের মতো বা পাঁঠার দেহের মতো ঝুলতে থাকে; তুমি আমাকে চিনতে পারো না। কেউ আমাকে চিনতে পারে না। আনমনে তুমিও ওই চামড়া ছোলা ঝুলন্ত শরীরে মগে করে জল দাও। গুরদা চাও। আমি টু-শব্দ করি না। স্ক্রিনশটে আসা-যাওয়ার স্মৃতিটুকু তুলে রাখি; এখন তো আর আমার বুক নেই…

মন নেই…এখন আর আমি দেহও নই আর; সবাই এখন মাংস বলে… বুফে সার্ভিসে অতিথিদের প্লেটে গড়াগড়ি খাচ্ছি। চারিদিকে আলোর রোশনাই। তুমুল হৈচৈ। আমার কান্নার আওয়াজ ভিড়ে পিষে গ্যাছে, থ্যতলানো মাংসের আবার কান্না কী…তার আবার আওয়াজ…

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত