পাখিগুলো বাসাবদল করলো অজান্তে…বেণী থেকে খুলে আসছিল বিকেল। পাশের বাড়ি তখন ফর্দ লিখছে।
বরবাদ লিখছে তোমার দু’চোখ
কখন যে মোরগ ডেকে উঠেছিল!
বুঝেছিলাম ভোর হল।
আজ চোখ বদলেছে, দৃষ্টিও…
টকটক-ঝালঝাল।পুরো নমকিন!
অভাব উড়লে স্বভাব পালায়-সময় পালায়!
আমি হাসতে হাসতে অভিনন্দিত করলাম
বাসাবদলের মুখর পাখিদের
মেজোপিসিমার নাতি তখন দরবারিতে সবে সা-লাগিয়েছে!
রে
চরিত্রগুলো কাঁপছে সুবর্ণা…
কিছু অন্ধকার আরও একবার দাও..
তিরতির করে গান ছুটছে।
সামনে কিছু বন্য গোলাপ… কথা সারছে খুব গোপনে! আসলে বন আর বন্য খুব বুকে-বুকে হলেও,একফালি চোখের মত আড়াআড়ি ব্যবধান। যে-ব্যবধান ফিরিয়ে দেয় অবধারিত কিছু অঘটন অথবা অনটন…
সুবর্ণা, আরও কিছু পাপ ঝুমকফুলের মতো দুলতে দুলতে আমার অনামিকা ধরে এগিয়ে যাচ্ছে শেড ব্রাউন কফিনের দিকে … বুক থেকে সাদা ওড়না ঝমঝম উড়ছে … এখনও কিছু নেশা নুপুর খুলে পা -টিপে ক্রমশ পাঁচতলা জানলা থেকে ছোঁড়া ল্যাভেন্ডার রঙের সুতো ধরে ওপর থেকে আরও ওপরে… বন আর বন্য, মাঝে শুধু গোলাপের সমবেত গান…
চরিত্রগুলো ভীষণ কাঁপছে
সুবর্ণা হাতটা … এই যে … আরও আরও চেপে ধরে… হাত-পা-পুরো শরীরটাকে মুঠোর মধ্যে লুকিয়ে ফেলো…
সফেদ বকের ডানার মত ওড়নায় সেই অনন্ত কাল থেকেই আমি উড়ছি… তীব্র সুখে …
সুবর্ণা… সময় খুন হয়েছে … বহুকাল… আর দেরি নয়…দেরি নয়…
ত্রিকোণ বারান্দা থেকে বেরিয়ে আসছিল ভেতরের খুঁটিনাটি
পুতুল বৌদির যন্ত্রণা সুখ হয়ে যাচ্ছিল, ফিসফাস সাঁতরে আসছিল
নোটেশন ডিজাইনের আধুনিক গ্রিল থেকে
মাইক্রোওয়েভ থেকে থিকিথিকি উত্তাপ শাওয়ারের নীচে। ধারাস্নান আয়না দেখে।
টপ্পা মিশ্র-খাম্বাজে মূর্তি হল। এরপর আর সেই পাতাদের গান কখনও শোনা যায়নি
শুনেছিলাম একটা স্বাক্ষর এরা প্রত্যেকেইই করেছিল
সমস্ত, সমস্ত সরল ও বক্রপথ ধরে মাইলের পর মাইল —
ফলকের পর ফলক পেরিয়েছি, কিন্তু খুঁজে পাইনি আর সেসব অনায়াস আর গান…
গাছগুলোতে ঝুলছে ছায়া আর ইশতিহার—–শতাব্দী পেরোনো ‘সন্ধান চাই’
নাহ, গান ফেরেনি আর
আজ হঠাৎ সহস্র পাখোয়াজ বাজতেই চমকে উঠি
ত্রিকোণ বারান্দায় পুতুল বৌদির সাথে লক্ষাধিক আমি বেরিয়ে আসতেই দেখি পৃথিবীটা আস্ত বকুল বাগানে ভরে আছে…
ফুলগুলোর মুখের গড়ন হুবহু গানের মতো…
পুতুল বৌদি খোলা চুলের ঝাপটায় বকুল বাগানে কী – একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে
বাঁকা-হাসি নিয়ে একছুটে ভেতরে গেল
উত্তরের পেছনে পেছনে একঝাঁক প্রশ্নও ছুটছিল
পুতুলবৌদির গলা উড়ে যাচ্ছে গান হয়ে
বাকিটুকু শুধুই সুখ…
যেভাবে আকাশ মাটিকে দেখে
অথবা
মাটি আকাশ কে দেখে!
যেভাবে অন্ধকার আলো কে দেখে
অনাহার যেভাবে আহার কে দেখে!
সেভাবেই, সেভাবেই আমি
তোমাকেই দেখছিলাম
তোমাকেই দেখি
তোমাকেই দেখবো…
সব ছবি কেমন ঘাস হয়ে হতে হতে কখনও ফড়িং, কখনও আবির হয়ে যাচ্ছে!
অনিঃশেষ শ্রাবণের মত ঢল নিয়ে কেবলই নেমে আসছে সাজ!
আসলে ঘাম আর শ্বাসের সাপ-গল্প ছাড়া আদৌ কিছু থাকে না! আসলে, সুবর্ণা উড়োসুখ-ইথার গান চাইলেও শেষে বুঝেছিল এসবই ঝুটো। পুঁজরক্ত পড়া হতাশ লাল রাতের মতো… গুণ বুঝলে গুনীতক… নইলে বৃথা আস্ফালন।
পঞ্চমে এসে অবশেষে দাঁড়িয়েছে সুর… দাঁড়ানোই বড়ো… দাঁড়িয়ে থাকাটাও…
ছেলেকে বললাম যে ওর ইরেজারটা আনতে “বাঁশি সঙ্গীত হারা”… ‘ এবার এটা মুছে দাও মহারাজ… ‘