ফুল, অশ্রু, প্রেম-৩১ নারীর কবিতা (পর্ব-২৮) । মুম রহমান
মার্গারেট এট্যুউড [Margaret Atwood]
মার্গারেট এট্যুউড [Margaret Atwood] (১৯৩৯-) কানাডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, কবি ও সম্পাদক। শুধু তাই নয়, বিশ্বের অন্যতম একজন বেস্টসেলার লেখিকাও তিনি। তিনি একই সঙ্গে চিত্রনাট্য, রেডিওনাট্য থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ, শিশুতোষ লেখাও লেখেন। প্রায় ৩০টি ভাষায় তার লেখা অনূদিত হয়েছে। তিনি ১৯৭২ সাল থেকে পূূর্ণকালীন লেখক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি কানাডার রাইটার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট এবং কানাডার পেন ইন্টারন্যাশনালেরও প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
রাত্রির কবিতা
এখানে ভয়ের কিছু নেই,
এটা নেহাতই বাতাস
দিক বদলাচ্ছে পূবে, এ নেহাতই
তোমার বাবা, বজ্র
তোমার মা বৃষ্টি
এই জলের দেশে
এই ধূসর পশমি কাপড়ের মতো চাঁদ যেন স্যাঁতস্যাতে মাশরুম,
ডুবে যাওয়া কাঠের গুড়ি আর অসংখ্য পাখিরা
সাঁতার কাটে, যেখানে শ্যাওলা জন্মায়
গাছের চারিপাশে
আর তোমার ছায়া তোমার ছায়া নয়
কিন্তু তোমার প্রতিফলন।
তোমার সত্যিকারের বাবা-মা উধাও
যখন পর্দা নেমে আসে দরজায়।
আমরা অন্য বাবা-মা
হ্রদের তলদেশ থেকে উঠে আসা
যরা নিরবে তোমার বিছানার পাশে দাঁড়িয়েছে
আমাদের তিমির শির নিয়ে।
আমরা এসেছি তোমাকে ঢেকে দিতে
লাল উলে
আমাদের অশ্রুজল আর সুদুর গুঞ্জন সহযোগে।
তুমি দোল খাও বৃষ্টির বাহুডোরে
তোমার ঘুমের শীতল নৌকায়
যখন আমরা অপেক্ষারত, তোমার রাত্রির
বাবা ও মা
আমাদের ঠান্ডা হাত আর মৃত ফ্লাশলাইট নিয়ে,
জানি আমরাই একমাত্র
দোদুল্যমান ছায়া প্রক্ষিপ্ত
এক মোমের আলো থেকে, এই প্রতিধ্বণি
তুমি শুনতে পাবে বিশ বছর পর।
আরো পড়ুন: ফুল, অশ্রু, প্রেম-৩১ নারীর কবিতা (পর্ব-২৭)
তুমি আমার হাত ধরো
তুমি আমার হাত ধরো আর
আর আমি তখন এক অকস্মাৎ বাজে সিনেমায়,
ওটা চলতেই থাকে আর চলতেই থাকে
আর কেন আমি মুগ্ধ
আমরা মৃদু লয়ে যৌথ ওয়াৎজ্ নৃত্য করি
একঘেষে হাওয়া ঘেষে কামনায়
আমরা মিলিত হই অবিরাম প্রশ্রয় পাওয়া করতলে
তুমি ভুল জানালা দিয়ে উঠে যাও
অন্য লোকেরা চলে যাচ্ছে
কিন্তু সবসময় শেষতক থাকি
আমি টাকা দিয়েছি, আমি
দেখতে চাই কী হলো শেষ তক
এক সুযোগে বাথটাবে আমাকে
খুলে ফেলতে হয় নিজেকে
ধোঁয়া আর সেল্যুয়েডের তরল
আকারে
এটা মেনে নিতে হবে
শেষতক আমি আসক্ত,
পপকর্নের ঘ্রাণ এবং পরে থাকা সপ্তাহ পুরানো
পশমী অন্তর্বাসের
জন্ম ২৭ মার্চ, ময়মনসিংহ। এমফিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। পেশা লেখালেখি।