Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

মিলন চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ

Reading Time: < 1 minute

আজ ১২ ডিসেম্বর কবি, গদ্যকার ও সম্পাদক মিলন চট্টোপাধ্যায়ের শুভ জন্মতিথি।ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


দেখা হলে জেনে ফেলি দুজনেই
দুজনার কথা 
.
আটশ দিনের পরে
কারও হাতে লেখা নেই। চুলে পাক।
আলো কমে গিয়েছে চোখের… 
.
বসে থাকি চুপচাপ।
মাঝে মাঝে দু’একটা কথা…
.
কিছুক্ষণ পরে বলি – ‘আসি এইবার’
. ‘আবার লিখতে হবে’ – এটুকুই সেও
বলে বিড়বিড় করে
.
‘হয়ত লিখব ফের’
.
হাতদুটি চেপে ধরে বলে আসি তার!

ক্যামোফ্লাজ

চেনা খড়খড়ি
অচেনা হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টিতে,
রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ছে লাল রঙের আলো ।
সুবেশা তরুণীদের গায়ে
চকচক করছে যৌনতা !

এমন দিনে
কোলকাতার কিছু গৃহস্থ বাড়ি
নীলকমল হয়ে যায় !

মাহেন্দ্রক্ষণ

নেইপন্থার বীর্য
চেটেপুটে খেয়ে নিচ্ছে শেয়াল
দু’শ বাস ভরে যাচ্ছে বদগন্ধে, দলীয় পতাকা
ভিজে যাচ্ছে ঘামে ।

জাতি’র ভবিষ্যৎ জমা রাখা সুইসব্যাঙ্কে
একটা মাছি গলারও উপায় রাখেনি মহত্ত্ব …

ফায়ারব্রিগেড । ফেনা । নির্বাক অশ্বারোহী ।
পাগলাঘণ্টি জানান দিচ্ছে –
মাহেন্দ্রক্ষণ এসে গেছে!

 

 

সম্ভবনা

একদিন যদি, থেমে যায় চাকা

একদিন যদি, কথা চুপ করে

আমার লেখারা তবু থেকে যাবে …

যে লেখায় ঘুরে ফিরে বিষাদরা আসে

যে লেখায় মৃত সম্ভবনা

সে লেখাই চেনাবে আমাকে ।

 

 

 

কুয়ো

ছোট থেকেই খুব বই পড়তাম
পড়তে পড়তে কাঁদতাম , হাসতাম
গ্রন্থকীট শব্দটা না বলে আমাকে গ্রন্থোন্মাদ বলাই উচিৎ , কারণ
পাগলই কেবলমাত্র যুগপৎ হাসে আর কাঁদে ।

দৈনিক খবরে লেখা থাকে
‘অমুক মৃত্যুমুখে পতিত হলেন’
এমন লাইন বহুবার পড়েছি ,
কিন্তু আজ মনে হল
মৃত্যুমুখে পতিত হওয়ার সাথে
কুয়োর একটা সম্পর্ক আছে, নিদেন
ভেবে নিতে দোষ নেই কোনো !

তারপর থেকেই আমি কুয়ো দেখছি
একটা অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে , ভ্যাপসা গন্ধমাখা কুয়ো
স্বপ্নেও বারবার সে আসছে ।

আশ্চর্য এটাই,
কোনোবার কোনো বালতি কিংবা কপিকল
অনুষঙ্গে আসছে না !

প্রস্তুতি

প্রত্যেকদিন আমি, একেকটি মৃত্যুর পাশে বসে থাকি
কথা হয় না। দুজনেই সামনের দিকে তাকিয়ে
চশমা ঠিক করি– বিষণ্ণ হই…একেকটি মৃত্যু একেকরকমএতদিন একসঙ্গে থেকে, আলাপ না হওয়া মৃত্যু
আমার প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলে, তারপর
হাত ধরে চলে যায়…
আবার আসে…এই আলাপ না হওয়া দীর্ঘায়িত জীবনে
প্রিয়জনদের কাছে যাওয়ার অপেক্ষা ছাড়া কোনও কবিতা নেই।

উন্নয়ণ

বাঁশে বাঁধা সার সার লাশ
উর্দির ক্যামফ্লেজে কয়েকটি রোবট
নিয়ে আসছে ওদের !
রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলে উন্নয়ণের টাকায় ।
এমন ভীষণ উন্নয়ণে ওরা মাকড়ের ডিম খেয়ে বাঁচে !

শানানো মগজ ভালো নাকি ভালো কালাশনিকভ !

শুকনো হাওয়ায় দোল খাচ্ছিল এক মেয়ে
শিউলি ফোটা সকালে তখন
পুজো পাচ্ছিল আরেক মেয়ে ।
দশ হাতে তার অস্ত্র, পায়ের নীচে
করজোড়ে বসে আছে রোবটের পিতা ।

এই মেয়ে ভুলে যাও অসুরের মানে
এখন অসুর হস্তে অঢেল টাকা ও দাপট
শুম্ভ-নিশুম্ভ সরকারী খরচে লড়াই করে
আর
সুরাসুর যুদ্ধ আজ লাইভ টেলিকাস্ট হয় !!

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>