সম্পর্ক না ভাঙলে হয়তো ফিজিক্সটাই বদলে দিতেন মিলেভা

Reading Time: 2 minutes

না, সেই ভাবে সহায়তা পাননি। না ঘরে, না বাইরে। পেলে হয়তো আজকের পদার্থবিজ্ঞানকে অনেকটাই বদলে দিতে পারতেন আইনস্টাইনের প্রথম স্ত্রী মিলেভা আইনস্টাইন-মারিক। যাঁর প্রতিভা কোনও অংশেই কম ছিল না আইনস্টাইনের চেয়ে।

সদ্য প্রকাশিত একটি বই ‘আইনস্টাইন’স ওয়াইফ: দ্য রিয়েল স্টোরি অফ মিলেভা আইনস্টাইন-মারিক’ এ কথা জানিয়েছে।

নিজে বহুদর্শী ছিলেন বলেই হয়তো তাঁর বাগদত্তা মিলেভার বিজ্ঞান প্রতিভার আভাস অনেক আগেই পেয়েছিলেন আইনস্টাইন। যার ইঙ্গিত মিলেছে প্রণয়ী মিলেভাকে লেখা তাঁর একটি চিঠিতে। আইনস্টাইন ১৯০০ সালের অক্টোবরে মিলেভাকে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘‘আমি খুবই ভাগ্যবান যে তোমার মতো এক জনকে পেয়েছি। এমন একটা প্রাণী, যে একেবারে আমারই মতো। আমার সমান।’’

হফ্‌টস্ট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ডেভিড সি ক্যাসিডি-সহ তিন জন লেখকের ওই গবেষণামূলক বইটি থেকে যে সব তথ্য বেরিয়ে এসেছে, তা অবশ্য বলছে, যে প্রতিভাকে অনেক আগেই বুঝতে, চিনতে পেরেছিলেন আইনস্টাইন, সেই মিলেভার প্রতিভার বিকাশে কিন্তু ততটা ভূমিকা ছিল না কিংবদন্তী বিজ্ঞানীর।

বইটি জানিয়েছে, পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত শাস্ত্রে অসাধারণ ব্যুৎপত্তি ছিল মিলেভার। তবু ওই সময়ের অনেক মহিলা বিজ্ঞানীর মতোই মিলেভাও হারিয়ে গিয়েছিলেন উপেক্ষায়। মর্যাদা, উৎসাহ না পাওয়ার ক্ষোভে, দুঃখে, অপমানে। তাঁর স্বামী আইনস্টাইন বলে যেটা অন্তত তাঁর ক্ষেত্রে হওয়ার কথা ছিল না।

অথচ সেটাই হয়েছিল। গভীর অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন মিলেভা, আইনস্টাইনের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের যন্ত্রণায়। তাঁর শৈশবটাও তো ছিল না খুব একটা সুমধুর। ফলে, অতীত আর তাঁর বিবাহোত্তর জীবনের টানাপড়েনে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতে সেই সময়ের অন্যতম সেরা প্রতিভা মিলেভাকে আর তেমন ভাবে জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি।

বইটিতে মিলেভার শৈশব নিয়ে বিশদে লিখেছেন অধ্যাপক ক্যাসিডি। বিজ্ঞানের ইতিহাসবিদ রুথ লিউইন সাইম লিখেছেন, বিশ শতকে মিলেভার মতো মহিলা বিজ্ঞান-প্রতিভাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য কী ভাবে মরণ-বাঁচন লড়াইটা লড়তে হয়েছিল। আর ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ ও পদার্থবিদ অ্যালেন এস্টারসন লিখেছেন আইনস্টাইনের সঙ্গে মিলেভার প্রণয়, দাম্পত্য, বিবাহ বিচ্ছেদ আর তার পরের দিনগুলি নিয়ে।

এস্টারসন লিখেছেন, ‘‘সেটা এমন একটা সময় ছিল যখন বিজ্ঞানের দুনিয়ায় কোনও কদরই পেতেন না মহিলারা। মহিলাদের দিয়েও যে বিজ্ঞানের গবেষণা হয়, সেটা কেউ ভাবতেই চাইতেন না। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে, কিছুটা বিপন্ন শৈশবের নানা রকমের বাধা কাটিয়ে মিলেভা পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। আর বিজ্ঞানের ওই দু’টি জটিলতম শাখাতেও দেখিয়েছিলেন চমকে দেওয়ার মতো ব্যুৎপত্তি। কিন্তু তার পর আর পারেননি। হারিয়ে গিয়েছিলেন আইনস্টাইনের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য ভেঙে যাওয়ার পর। ডুবে গিয়েছিলেন গভীর মানসিক অবসাদে।’’

.

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>