নাসের হোসেনের কবিতা
দাঁড়িয়ে
অপেক্ষায় ছিলাম,আমফান বা উমপুন আসবে।এলে তার ভয়ঙ্কর দাপটে কাছে -পিঠে
সবকিছুই লণ্ডভণ্ড হবে।দেখতে দেখতে নির্ধারিত দিনক্ষণে আবির্ভূত হল সে।
দাপট বলে দাপট!! এমন দাপট মানুষ আগে কখনো দেখেনি।এমন নৃশংসতা!
বঙ্গোপসাগরে জলের উষ্ণতা বেড়ে গিয়ে তার জেগে ওঠা।তাই বলে এই যদি হয় উষ্ণতা
প্রদর্শনের নমুনা,তাহলে দোহাই তোকে উমপুন , আর কখনো লোকালয়- মুখো হবি না।
সমুদ্রে জন্ম,সমুদ্রেই হোক তোর অবসান।।
ভাবছি।কিন্তু আমার চাওয়ায় তো পৃথিবী দাঁড়িয়ে নেই!!
সে কি এখনও সেরকম মজার-মজার
খেলাধুলো করে, সে কি এখনো ভাত খাওয়ার সময়
তোমার হাত থেকে মাছ নিয়ে খায়
কিন্তু সে তো এখন বাচ্চা থাকার কথা নয়
তারো এখন বাচ্চা হওয়ার কথা, বাচ্চাকাচ্চা
মানুষ করার কথা
কিন্তু সে তো ওনেকদিন আগেকার ব্যাপার
বাচ্চাকাচ্চা মানুষ করার পর সে কি আর বেঁচে আছে ।
জাহাজ
কোথা দিয়ে কোথায় কী হয়ে গেল, জাহাজ চুরমার
সেই প্রচণ্ড ঝড়ে একটা কাঠের টুকরোর উপরে ভাসতে-ভাসতে
সিন্ধবাদ এসে পৌঁছল এক নতুন দেশে, সমুদ্রের তীরে
যখন সে পৌঁছেছিল তখন তার বিন্দুমাত্র জ্ঞান ছিল না
এক ধীবর তাকে তুলে নিয়ে চমৎকার গাছগাছালি
দিয়ে ঘেরা বিশাল পরিসর বাড়ির মধ্যে নিয়ে এল
সেখানে সে এবং তার স্ত্রী ও পুত্র-কন্যারা যথেষ্ট
সেবা পরিষেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলল, সাতদিন
পরে যখন তার জ্ঞান ফিরল, তখন সে বুঝতে পারল
তারিখ অনুযায়ী সে প্রায় একমাস সমুদ্রের জলের বুকে
ভেসে বেড়িয়েছে, দুর্বল দেহ ক্রমে সবল হল, এইবার তাকে
বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে, জিজ্ঞাসা করে সে
বুঝতে পারল এই দেশটির নাম সে বহুবার শুনেছে
কিন্তু এর আগে কখনও আসেনি, এখানকার রাজা
খুব খামখেয়ালি এবং নিষ্ঠুর, তবু সেও নিজে সিন্ধবাদ
ভুবনবিখ্যাত অভিযাত্রী, এবং একইসঙ্গে সে সওদাগর
তার সওদাগরি কেতা অনুযায়ী সে সেই দেশের রাজার
সঙ্গে দেখা করল, রাজা তাকে প্রচুর উপঢৌকন দিয়ে
সম্মান জানাল, এবং তাকে অনুরোধ জানাল সে-দেশে
এবং পাশের দেশগুলোতে তার সওদাগরি ক্যারিশমা
দেখাতে, তারপর খুব পুরনো একটা গান গাইতে-গাইতে
নিজের দেশে ফিরল, সঙ্গে তার কত যে ধনরত্ন আর
প্রত্ন বস্তুসামগ্রী, নিজের সমস্ত প্রাপ্তি, সে উপুড় করে
দিল রাজাধিরাজ হারুনের সম্মুখে, হারুন তখন কাঁদছেন
