অসমের এনআরসি থেকে বাদ পড়লেন বর্তমান এমএলএ, সাবেক সেনাসদস্য
অসমের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। শনিবার (৩১ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় অনলাইনে ও এনআরসি সেবাকেন্দ্রে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।
‘অবৈধ অভিবাসী’ বাছতে অসম সরকার নাগরিকদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তা দেখে বিধায়ক অনন্ত কুমার মালো নির্ঘাত চমকে উঠেছেন। কারণ, চূড়ান্ত তালিকায় তার নাম নেই।
অনন্ত অসমের বিধানসভার দ্বিতীয় প্রভাবশালী বিরোধীদল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) নেতা।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানাউল্লাহর নামও পাওয়া যায়নি নাগরিকদের চূড়ান্ত তালিকায়।
কারগিল যুদ্ধে অংশ নেওয়া ও রাষ্ট্রপতি পদক পাওয়া মোহাম্মদ সানাউল্লাহকে কামরূপের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করে।
শনিবার অসমের ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।
চূড়ান্ত তালিকায় অসমের নাগরিক হিসাবে ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জনের আবেদন গৃহীত হয়েছে; বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন।
যারা বাদ পড়েছেন তারা মূলত দরিদ্র এবং বেশিরভাগই মুসলমান বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে।
রাজ্য বিজিপি নেতারাও অনেক প্রকৃত নাগরিকের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ার কথা বলছেন। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের আগে শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের।
রাজ্যের মন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বাস শর্মা বলেন, “তারা ১৯৭১ সালের আগে শরণার্থী হিসেবে এলেও কর্তৃপক্ষ তাদের শরণার্থী সনদ নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করেনি।”
বিজেপি নেতা হেমন্ত বিশ্বাস এর আগেই এনআরসি’র উপর তার আস্থা নেই বলে জানিয়েছিলেন।
আরেক বিজেপি নেতা এমএলএ শিলাদিত্য দেব আরেক কাঠি বাড়িয়ে বলেন, নাগরিকপঞ্জি ‘হিন্দুদের বের করার এবং মুসলমানদের সাহায্য করার চক্রান্ত’।
তবে তালিকায় নাম না থাকলেই বিদেশি বলে চিহ্নিত কিংবা বন্দিশিবিরে নেওয়া হবে না বলে ইতোমধ্যে আশ্বস্ত করেছে অসম রাজ্য সরকার।
তালিকায় যাদের নাম নেই, তাদের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে বলা হয়েছে ১২০ দিনের মধ্যে। এই বিষয়ে শুনানির জন্য রাজ্যজুড়ে ১ হাজার ট্রাইব্যুনাল গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যেই ১০০ ট্রাইব্যুনাল খোলা হয়েছে। আরও ২০০টি ট্রাইব্যুনাল সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই খোলার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালে মামলায় হেরে গেলে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে।