লড়াই করে হারলো বাংলাদেশ

Reading Time: 2 minutes

সামর্থ্য থাকলে উচ্চাশাটা সবসময়ই থাকে। প্রত্যাশার পারদ আরও চড়ে যায় সাউথ আফ্রিকার মতো দলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করলে। তবে এক ম্যাচ পরেই বাস্তবতাটা বুঝল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের কাছে ২ উইকেটে হেরে বুঝল সামনে আরও কতটা কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। বুঝল বিশ্বকাপে মঞ্চ কাড়তে হলে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আরও অনেককে জ্বলে উঠতে হবে।

বুধবার সাকিবের ৬৪, তামিমের ২৪, সৌম্যর ২৫, মিঠুনের ২৬ আর সাইফউদ্দিনের ২৯ রানেও বড় পুঁজি আসেনি। সেটা নিয়েই টাইগার বোলাররা যথেষ্ট লড়েছেন। সাকিব, মিরাজ, সাউফউদ্দিন ও মোসাদ্দেক ২টি করে উইকেট নিয়ে জোর চেষ্টা চালিয়েছেন। শেষঅবধি পেরে ওঠেননি, ওই পুঁজি কম তুলতে পারার মাশুল দিতে হয়েছে।

কেনিংটন ওভালে শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারের আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ৪৯.২ ওভারে তোলে ২৪৪ রান। জবাব দিতে নেমে ১৭ বল আর ২ উইকেট অক্ষত রেখে জয়ে নোঙর ফেলে কিউইরা।

ছোট সংগ্রহ নিয়ে লড়াই জমাতে পারলেও আসলে ম্যাচে বেশিরভাগ সময়ই নিয়ন্ত্রণ হাতছাড়া থেকেছে বাংলাদেশের। শেষে এসে ঝটপট কিছু উইকেট তুলে নিলে উত্তেজনার পারদ মূহমূহ ওঠানামা করেছে। তাতে প্রতিটি ওভারের পরতে পরতে থাকল নাটকীয়তা আর রোমাঞ্চ। সবশেষে আসেনি ‘ঈদ উপহার’! দেশে এখন দিবাগত রাত, রাত্রির নিস্তব্ধতার মতই স্তিমিত হয়ে এসেছে উত্তেজনার রেশ!

কিউইরা লক্ষ্য তাড়ায় নামলে আড়াইশ’র নিচের সংগ্রহ নিয়েও সাকিবের জোড়া আঘাতে স্বপ্নের কয়েকটা সিঁড়ি পেরিয়ে গিয়েছিল প্রত্যাশা, সে যাত্রা ধূসর করে দিচ্ছিলেন উইলিয়ামসন ও টেলর। প্রতিরোধী সেই ১০৫ রানের জুটি ভেঙে জোড়া আঘাতেই আবারও আশার সলতেটা জ্বালিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু স্বল্প পুঁজি আর আশার বেলুনের সমন্বয় করাটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে দাগ কেটে থাকবে শেষের ওই লড়াইটুকু।

দুই মারমুখী ওপেনার গাপটিল ও মুনরোকে ফেরানোর পর কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরই তাই নায়ক, আসলে ম্যাচটা টাইগারদের হাতছাড়া করে নিয়েছেন এ দুজনেই। কিউই অধিনায়ক ৪০ করে ফিরলেও টেলর থাকলেন আরও কিছুক্ষণ। ফেরার আগে তার নামের পাশে ৮২ রানের ইনিংস। ৯ চারে ৯১ বলে সাজানো।

অথচ শুরুর দিকটা আরও আশাজাগানিয়া ছিল। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই সাফল্য এনে দিয়েছিলেন সাকিব। মার্টিন গাপটিলকে ক্যাচ বানান তামিমের। ১৪ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় ২৫ রান করা কিউই ওপেনার সাজঘরে হাঁটা দিলে স্বস্তি ফেরে।

আরেক ওপেনার কলিন মুনরোকেও থিতু হতে দেননি সাকিব। তার বলে মুনরোর বুলেট শট ঝাঁপিয়ে পড়ে তালুবন্দী করেন মিরাজ। ৩ চার ও এক ছক্কায় ৩২ বলে ২৪ রানের ইনিংসটি থামে। খানিক পরেই আসে আরেকটি সুযোগ!

নিউজিল্যান্ডকে চেপে ধরার সেই সুযোগটি অবশ্য তুলে নিতে গড়বড় করে ফেলে বাংলাদেশ। করে ফেলেন আসলে মুশফিক! উইলিয়ামসনকে রানআউট করতে ব্যর্থ হন টাইগার উইকেটরক্ষক। দ্রুত রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে পড়েন টেলর ও উইলিয়ামসন। কুড়িয়ে তার দিকে থ্রো করলে বল হাতে জমানোর আগেই মুশির কনুইতে লেগে উইকেট ভেঙে যায়, বেঁচে যান কিউই অধিনায়ক।

বেঁচে গিয়ে তো ম্যাচটাই পকেটে তুলে নিলেন উইলিয়ামসন, টেলরকে সঙ্গী করে। টম ল্যাথামের রানের খাতা খুলতে না পারা তাই কোনো ঝুঁকিতেই ফেলেনি কিউইদের। জেমস নিশামকে (২৫) নিয়ে টেলরের পর কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমও (১৫) ম্যাচে শেষের আঁচড়টুকু দিতে পারেননি।

তবে মুশফিক আগের গড়বড়ের শোধ তোলেন দুর্দান্ত এক ক্যাচেই। গ্র্যান্ডহোম সাউফউদ্দিনের স্লোয়ার বাউন্সারে আপারকাট করতে গিয়েছিলেন, ঠিকমত বাতাসে ভাসাতে পারেননি বল। উইকেটের পেছনে অনেকটা লাফিয়ে হাত যথাসম্ভব উঁচুতে নিয়ে বল গ্লাভসবন্দী করেন মুশি। তার উচ্চতা আর রিফ্লেক্সের কথা মাথায় রাখলে অসাধারণ এক ক্যাচই বলা চলে এটিকে।

তাতে নাটকীয়তা বেড়েছে। যেটার শেষ টানেন মিচেল স্যান্টেনার ও লোকি ফার্গুসন। ২চারে ১২ বলে অপরাজিত ১৭ রানে স্যান্টেনার, আর ৩ বলে ৪ রানে ফার্গুসন ম্যাচ জয়ের নোঙর করেই মাঠ ছেড়েছেন।

 

 

 

.

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>