আজ ১১ নভেম্বর কবি,কথাসাহিত্যিক,সম্পাদক পিয়ালী বসু’র শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
ডাউনটাউন
শহরে ‘ছোঁয়াচে ভাইরাল জ্বর’
ঈশ্বর আর শয়তানের মধ্যেকার ফারাক অপজাত অপচ্ছায়া মাত্র
বুকে বেঁধা সভ্যতার অনিবার্য মিরাকেল মৃত
‘ব্রথেল’ এ শহরে
এখন বেশ্যাকে কেনার চেয়েও সহজলভ্য দরে মারণ রোগ বিক্রী হয়
:
সতীত্ব
আর কোন অজুহাতে ফিরে আসা সম্ভব নয়
সম্ভব নয় বিকল্পসন্ধানী হওয়া
পরাশ্রয়ী পরকাতরতায় স্পর্শে
এই মুহূর্তে ভেসে যাচ্ছে আমি’র পরভাগ
এ জীবনে … ‘সতীত্ব’ হারানোর যন্ত্রণাই একমাত্র ‘ফ্রি’
:
অসুখ
পায়ের পাতা গোড়ালি ছাড়িয়ে
আস্তে আস্তে সে জায়গা করে নিচ্ছে কানের লতিতে
বুকের গোপন খাঁজে, চিবুকে
বেগম আখতারের গানের সঙ্গে সঙ্গে
সেও ছড়াচ্ছে শিরা উপশিরায় …
ঐতিহাসিক এই অসুখের মাঝেই
জমে আছে শত মৃত্যু !!
প্রবাবিলিটি
এ দেশে বন্যতা নিষিদ্ধ
আন্তর্জাতিকীকরণে উবে গেছে ওরিয়েন্টাল ফ্লেভার
নারী কে কামনা এখন রাত বারোটার ‘নীল ছবি’তে বদ্ধ
কংকাল পোড়ালে মানুষ হয় না
বরং শব্দের তাগিদ বর্তমান হয়ে খননের গভীরতা বাড়ায়
দুরত্ব যত গভীরতর হয়
ততোটাই স্পষ্ট হয় শর্তবিহীন জলের পোশাকে সেজে থাকা অব্যক্ত অক্ষরমালা
:
প্রতীতি
মুহূর্ত ঘনিয়ে আসে ইথারে ইথারে
দুরূহ সংকেতে স্বগত-কথন
নিষিদ্ধ মুহূর্তে ‘ব্রা’র হুক খসে পড়ে
জলমগ্ন পাথরে তখন রাশিকৃত বন্ধ্যা মেঘ
স্থিতিজাড্য এবং অকাল ঠিকানা
আজকাল সবকিছুই ভুলে যাই
প্রাক্তন প্রেমিকের আত্মহত্যার স্মৃতি অথবা শিশু পাচারের ঘৃণ্য অপরাধ
বৈধব্যের আয়ুরেখা বরাবর
প্যাস্টেল শেডের আলতো করতলটুকুই একমাত্র স্পষ্ট এখন
পলকহীন মুহূর্ত ভিজে যাওয়া রংচটা ফুটনোট
বিশ্বাস জ্বলে যাওয়া নেশাতুর ঠোঁট …
আজকাল সবকিছুই ডি’ফোকাসড’
ঘুরে দাঁড়ানো বাতাসের মুখ … যোনি গহ্বর জুড়ে আছড়ে পড়লে
তাকে বিষাদসম্ভুত অশ্রুর স্পর্শবিন্দুতে আটকে রাখা ব্যতীত
আজকাল আর তেমন কিছুই করতে পারি না
তোমাকে ‘আমার’ সম্বোধন করার দুর্নিবার তাৎপর্যটুকু
স্তনবৃন্তের তলদেশে অকালেই হারিয়ে যায়
অন্ধকারের অজুহাতে যারা শরীর ছোঁয়
ভাষার স্খলন মেপে তাদের ‘ দোসর ‘ ভেবে অকাল দহন ‘ সাঙ্গ করি …
চিবুকের নির্জনতায় একপাশে শুয়ে থাকা
দ্বৈতযাপনের এই ধারাবাহিকতাকে
ধৃতিযোগ্য ‘শরীরী পিরামিড ‘ আখ্যা দিয়ে
আজকাল স্পষ্ট করি ক্ষয়ে যাওয়া ইশারার অমোঘ টান
কালবেলা
কালবেলা
কোকের মহিমা জুড়ে ধ্রুপদ অন্ধকার
পুরনো স্বরাভাসে তীব্র অস্থিরতা
কিংবদন্তি অপ্রেমের অস্ফুট অক্ষর
বোধশব্দ ভুলে এখন সীমাহীন একাকীত্বে অপেক্ষারত
:
প্রাক্তন প্রেমিক — তোমাকে
বাইরের বাতাসে ঝিম ধরা মাদকতা
চিরকালীন আদুরে সন্ধে এখন ত্রিফলা ঘেঁসে জায়গা করে নেয়
অগণিত শরীরী চুমু
আক্ষেপের অলিন্দ জুড়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে
বর্ধিষ্ণু শহর জুড়ে গৃহস্থ প্রেম
হিরণ্ময় সন্ধে’তে বিস্তারিত মেঘ জমে যখন তখন
প্রেমের প্রলাপে এখন চিরকালীন জ্বর
এভাবেই প্রতিটি নিভৃত সম্বিতেএক একটি আমি’র মৃত্যু হয়
প্রদীপ্তকে
বীতশোক সন্ধেগুলি ইদানিং তোমার
অভিমানের চেয়েও ভারী মনে হয়
কতদিন তোমার স্পর্শ থেকে দূরে
এই মুহূর্তে উদভ্রান্ত বালির
কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আমি
নিভৃতে একটা জন্ম পুষে রেখেছি ……
গত জন্ম
নগরপত্তনের বারোমাস জুড়ে অগোচরে
মধ্যবর্তী সমস্ত ক্ষয় অপচয় সহ্য করে
শুধু তোমাকেই ভালবেসে গেছি
প্রদীপ্ত, শরীর-গন্ধী বুদবুদে
শর্তবিহীন সম্পর্কের সংজ্ঞা ফুৎকারে
উড়িয়ে দাও মুখ ডুবিয়ে দাও
আমার স্তন উপত্যকায়
এলোমেলো করে দাও আমার সমগ্র
সত্ত্বা
নির্বাসিত বর্ণমালায় সম্পর্কের শেষ
চিত্রকল্প উদ্ভাসিত হোক