আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
সিংহাসন
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
সিংহকে যতই জোর করে সিংহাসনে বসাও
সে আকাশের কাছে এসে দাঁড়াবে
সে বনের মধ্যে , গাছের ক্লোরোফিলে মেলে দেবে দৃষ্টিপাত
যেখানে বেড়ে উঠছে তৃণভোজী প্রাণীর সংসার
বাতাসে বাতাসে প্রতিধ্বনি ছড়ানো জঙ্গল
এখানেই জন্মমৃত্যু এখানেই ব্যক্তিগত দম্ভের বিস্তার
এই অহংকার যদি শেকলে বাঁধতে থাকো আইনে শাসনে
তাহলে কি স্বোপার্জিত সিংহত্ব থাকে?
সিংহাসন কারাগার
বেড়া দেওয়া চারদিকে পাচিলের উদ্যত শাসন
প্রকৃত সিংহ জানে খাঁচার গৌরব নেই জৌলুষ রয়েছে।
রাধেমোহন
সকাল রয়
আজকাল তো রোজ মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরছি-
প্রণয় বা বিরহের জন্য নয়,
রাধা ইশারা করছে বলে।
ক্যালেন্ডারে পুরোনো রাধেমোহন ঝুলে আছেন-
বাঁশরি নিয়ে,
গেছে হারিয়ে তার সুর।
আমার গলাতেও সুর নেই, চুরি করে নিয়ে গেছে মহাকাল।
রাধেমোহন সুর হারিয়ে-
অন্ধকারে প্রজাপ্রতি নিয়ে একটা নতুন পৃথিবী আঁকছেন।
আহোরিটোলার পথে হাঁটতে-হাঁটতে রাধার সাথে হলো দেখা
প্রণয়ের সুর নেই তার গলায় কিন্তু আছে অমরত্বের গল্প।
সে গল্পটা লিখতে গিয়েই রোজ মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরছি।
আলাপন
চন্দ্রাণী বসু
– শিশির ভেজা কলাপাতায় সূর্য ছোঁয়া রঙ এনে দিবি ?
– দিতেই পারি, তবে গরল রঙা নীল সমুদ্রে তাকে ভাসিয়ে নিবি ?
– তোর নীলে কি শুধুই বিষ ? আশমানী রঙ, অপরাজিতা নীল ?
নিদেন পক্ষে অধরা নীলকমল ? পরে না চোখে ?
– বা রে ! এতো সবার চোখেই পড়ে…তোর তুলিতে চাইব কেন তাকে?
– চাই ! চাই ! চাই ! অধিকারে দম বন্ধ ফাঁসির দড়ির শব্দ এরা।
– মুক্তি কি তুই সত্যিই চাস ? আসলে তুই চাস ঘুড়ির মতো উড়তে পারা।
– কথার প্যাঁচে বাঁধবি আমায় ?
– ধুত তাড়ি ছাই ! বাঁধতে তোকে কে চায় ? নে ! এই তো ছাড়লাম আকাশ জুড়ে।
বেড়া উড়ে …আমার হাতে শুধুই লাটাই…
– ফুরোও যদি সুতো ? অথবা কাড়ে যদি কেউ অন্য কোনো পথে ?
– সুতো কোথায়? বিনি সুতোয় টান… শুধু লাটাই আমার হাতে।
– এসব যত ভুল কথারা তোর শব্দেই আসে।
– রঙের কারবারি হে, শুধরে নেওয়া রেখা গুলো সব তোরই ক্যানভাসে।
– তোর শুধুই রঙীন হওয়ার সখ ! তুলির রঙে আসা কি, অতই সহজ কথা ?
– উঁহু! ওই রঙেই তুই আমায় আড়াল করে রাখিস। চিনতে মস্ত ফাঁকি। সাদা পাতা…
– আমায় চিনতে পারিস আদৌ কি তুই ? জানিস কি ? আমার তুলির প্রতিটা রঙের মানে ?
– তোর রোবট হৃদয় ভাঙতে পারে, কেবল তোরই আবেগ ভারে।
এই গোপন কথা রঙের সাথে তোর নিত্য আলাপনে।
Related