নারীগ্রহ ও অন্যান্য কবিতা / অমিতাভ পাল
নারীগ্রহ
বিকালে বৃষ্টির শেষে গাছের ছায়ায় সিক্ত একটি পুকুরে
মহাশূন্যযানের মতো নেমে এলো একটি বক
প্রাথমিকভাবে তার মাথা শ্বাপদের মতো ঘুরলো চারপাশ
যেন একটি সংবেদনশীল অ্যান্টেনা
ভিন্ন গ্রহের মাটিতে খুঁজছে সুপরিচিত ধাতু
বকটি তারপর একটা জায়গায় স্থির হলো
পায়ের আঙুল থেকে বেরিয়ে এলো ছুরির মতো নখ
শিকলের শব্দ হলো নোঙরের জলের পিছনে
এই পুকুরে বহুবিধ খনিজ এবং জ্বালানী পাওয়া যায়
২০ ডিসেম্বর,২০১৫
চামড়ার ওপরেই তুমি সবচেয়ে সুন্দর
চামড়ার নিচে তো সেই পুরানো রক্ত মাংস
বাহ্য বমির ক্লেদ
চামড়াই তোমার সবচেয়ে সুন্দর পোশাক
নগ্নতা তোমাকে ভয়ানক রূপসী করেছে
১৮ ডিসেম্বর,২০১৫
রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল সুসজ্জিত মেয়েটি
আমি তার শরীরের বাঁক গুলিতে মনযোগ দিয়ে তাকাতেই
সে উশখুশ করতে লাগলো
আর পোশাকগুলিকে শুরু করলো পুনঃবিন্যস্ত করতে
যেন এতক্ষণ তার শরীরে কোন পোশাকই ছিল না
মেয়েরা পোশাক পড়েও নগ্ন
১৬.১২.২০১৫
পাঁচ হাজার মেয়েকে চটকে মিশিয়ে
আচার বানিয়ে ভাত খেলে হয়তো
আমার অবদমিত যৌনতা
কিছুটা মুক্তি পেতো
আমি হয়তো বলছি কারণ আমার
সন্দেহ আছে নিজেকে নিয়ে
মেয়েরা বলতো তোমাদের মানস
ভাবনার কথা
এরকম সুযোগ আবার কবে যে
মিলবে- কে জানে
০২.১২.২০১৫
তোমার আর আমার মাঝখানে স্থল মাইনের মতো
ঘাপটি মেরে বসে আছে নিয়ম সমাজ ধর্ম
আর ব্যর্থতার রাগ
প্রকৃতির তৈরি করা আমাদের সহজ সম্পর্ক তাই বিপদজনক
সাধে কি আর রূপকথায় লেখে- সাত সমুদ্র তেরো নদী
আমাদের মাঝখানে আমরাই বসে আছি কাঁটাতারের মতো
১৩.১১.২০১৫
জীবনের অনেক কিছুই দেখা হয়নি আমার
এর কোন কোনটা লেগে আছে আঙুলের ডগায়
কারো উল্লেখ আছে ত্বকের তাম্রলিপিতে
কানের তাকে তাকেও সাজানো আছে কয়েকটার নির্দশন
আর কিছু আছে জিহ্বা আর নাকের পিরামিডে
গোপন মমির মতো
জীবনের অনেক কিছুই দেখা হয়নি আমার
আর সেসব কিছু জমানো আছে অনুভূতির গুহায়
আমার আত্মজীবনীর পৃষ্ঠাগুলি একটা জাদুঘরের
ছাপানো ব্রোসিওর
