আনুমানিক পঠনকাল: 3 মিনিট
ধ্যান
একাগ্র থাকার মতন চিরশুভ্র
এর বেশি আঙুল ছিল না কোন খেলায়
নীতিনির্দিষ্ট ওই প্রাচীন প্রাসাদের ভেতর টসটসে হীরকদ্যুতি
বর্ণচ্ছটা নিয়ে কোথাও স্পষ্ট
তোমার দোষ একটা রূপালি বীজ–প্রচেষ্টাহীন উজ্জ্বল কুহক
এখন হর্ম্যরক্ষকের কাছে সেসব অতিকায় অপরাহ্নের কথা বলো
সার সার ফলিয়েছ নষ্ট শস্য,বেমানান জলাশয় আর পাগল করা
মিনারগম্বুজ ,তাঁবুর অবস্থান মেনে এক ধবধবে শীর্ণতা…
চোখের ঝাঁঝরি স্ফুরিত অলিন্দের প্রহরে বসে
ঘন ধূম্রজাল আর মাংসের উনুনে মুখ গুঁজে এই করুণা!
আমি শিখরে আহ্লাদিত না-আমার শেষ প্রতিবেশী সোনার চাবি
কুসুমস্রাবে ঘ’ষে ঘ’ষে ধার করে আর বুক পাতে দ্বিপদ অঙ্গীকারে
অথচ সজাগ সবই আহ্লাদ,ইশতেহার – বারবেকিউ!
পূরকে নষ্ট হচ্ছে নক্ষত্রধ্বজ , ফজরের ধূপদানি
কপালের মাঝে থেকে যাচ্ছে উজ্জ্বল কাঁকর
কপাল চিরে সাতরঙা সূর্য আমার পাতায় ওড়ে…
পুরুষরাত্রি
খয়েরি রক্তের কথা,নক্ষত্রের মিহিন গোলাপ…
কুঁকড়ে ওঠা গাঁজাখোর পিঠ-পল্লীপ্রান্তে কুমকুম জল
এরপরও বিকেল ফুরোয় না-
অগ্নিকুণ্ড ঘিরে চঞ্চু নেমে আসে, খুবলে নেয় ফিনকি অগ্নি
নরম ডিমের পরিমিত হলুদ পুঁছে দালানে ফিরে আসে যুবতী
ঐখানে ভরসন্ধ্যে,পোষা স্তনের গল্প বলে
তিনসত্যি ডোমবন আর রহস্য ছেঁকে নেয় আমাদের
পরিপুষ্ট আঁচে মাংস,আদ্যাশক্তি, কস্তুরী রস গড়িয়ে নামে
ধূ ধূ নিশীথে অর্ধস্ফুট সুড়ঙ্গে ঘুমজড়ানো মৃগয়া
উজাগর ঝকঝকে শাটার, শূলে উঠে, খিলখিল হাসে
ছায়াদের কেউ ধরতে নামে না
ধারাগৃহে সিঁদুরফোটা রাত ফুরোয় না…
পোষ্য
প্রত্যেক অর্চনার পর ওই লাল চক্ষু
নিবিড় উপনিবেশ বাঁচিয়ে ফিরে আসে
একাগ্র রক্তজানালা সেচে
তোমাদের গৃহে-প্রস্তাবে-হাঁড়ির তলদোষে
কালো দীর্ঘশ্বাস ও থাবায় বেঁচে উঠি পুনরায়
ভাগ হাতে মুঠো করি টিপপোকা,জোনাকি,বাঘশিশু
আর ছুঁড়ে দিই শিবিরভর্তি গরিমা
চকচকে কালো পিঠের ঋণী উদযাপনে
জলে ভাসমান নরম হৃদধ্বনিতে
বর্ণমথিত থাবা দাগ কাটে …
বুক-বুকের সুডৌল ফাঁদ-পৃথিবীর প্রাচীন যুদ্ধ প্রবাদ
কৃপণভাবে দেখো,সরাসরি চোখে দেখো
আঙুলের ফাঁকে-চোখ রাখো অন্তরীক্ষে
উদ্দেশ্যমূলক হলুদ মোড়ক
তোমার জন্য,পোষ মানা জিরাফের ব্রেকফাস্ট দেখতে
মানুষেরা শিখরে শিখরে ছড়িয়ে,
নৌকো ভর্তি লোকের সামনে গৃহস্থ বাঘের খুনসুটি বলো
পরিব্রাজক তটে আঁকশিময় মাংসগাথা…
উপমা
কেউ কারও ভাষা বোঝেনি অথচ বক্তব্য
জোরালো হওয়া জরুরি…
গভীর রাতে, দরজায় ধাক্কা দেয় জমকালো পরিচিতি
অসহায়ের মতন আয়নায় দেখি বিপরীতে আলোকোজ্জ্বল
উপত্যকা সজোর শব্দে মিশে যায় পরিপূর্ণ ব্যাপ্তি জুড়ে
বিচ্ছেদের রাতে এমনই ভাবি…
অনুবাদ- তর্জমা এইবার থামানো ভালো
অন্যান্য মানুষের উপমা ব্যবহারে আমি ক্রমেই আরো ক্লান্ত
শ্রোতৃমণ্ডলী বসে আছে নদীর প্রান্তে,ঘাসে ঘাসে
ভাসমান মঞ্চে সবাই কয়েকটি জোরালো বক্তব্য রাখছে
ভাসমান ওই মঞ্চে, কেউ কারো কথা শুনছে না
নদীর অন্যান্য প্রান্তে রঙীন পোশাকের মানুষ কখনোবা
একেকটা উপমায় উঠে আসে…
ভাত
অনর্থক অন্ন রেখে যায় উঠোনে কারা
শালবনে চলে গেছে ধূসর রাস্তা যেখানে ইজারায়
এক নিরুদ্দেশ লোক এসে দাঁড়ায়
আচ্ছন্ন বৃন্তে ঠোঁট বুলিয়ে গাঢ় ভেষজ পানরত
রঙের পক্ষপাত-ক্ষয়িষ্ণু আব্বুলিশ-বারান্দার বেতফল
বিষয়ে ধবধবে অন্নের সংকলন আজ
নক্ষত্রবীজে অরণিদানের আগে পাতার ছাউনি-
খড়ের পালক বেঁধে অন্ধনাচের পালা
বেগুনি জামফলের কারিগর মুঠো ভরে নিচ্ছে
ভাস্কর্যে পোঁতা রক্তাভ ক্কাথ…
জন্ম ১২ অক্টোবর ১৯৮৭ খ্রিঃ। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণীবিদ্যায় স্নাতকোত্তর। বর্তমানে মালদা জেলায় সরকার পোষিত বিদ্যালয়ে জীববিজ্ঞান শিক্ষক। পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন প্রথম সারির ওয়েবম্যাগ ও লিটিল ম্যাগে নিয়মিত লেখালিখি করেন ।