আজ ২৪ আগষ্ট কবি অরুণেশ ঘোষের প্রয়াণ দিবস। ইরাবতী পরিবারের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।


দেবীরা এখানে আসেন

এই নদীর সঙ্গে সহবাস হয়েছে অরুনেশ?
-আমি আবিষ্কার করেছি জলের নাভিদেশ!
-কোথায় তোদের সন্তানেরা, এতো শুধু বালি আর বালি!
-অগুন্তি সন্তানকে খেয়ে ফেলেছে তাদের মা আর
বাকি কয়েকজনকে আমি
-বাহ্ এই কি বাবা-মায়ের দায়বদ্ধতা, করণীয়?
-যদি আমরা ওদের গ্রাস না করতাম, ওরা আমাদের
একদিন না একদিন কুরে কুরে খেয়ে নিতো!

নদীর বাতাস এসে ডেকে তোলে আস্তাকুর থেকে
ভোররাত্রিবেলা
দেবীরা এখানে আসেন আর আসে ঘেয়ো পাগলেরা
সস্নেহে বুলায় হাত শিশ্নে ও শ্মশ্রুতে, জলে ও জ্যোৎস্নায় মিশে
সুদূর উর্বশী
হাসে, বলে, হাজার লক্ষ-কোটি ধর্ষণ আমি
আত্মস্থ করেছি
দেবীর পাগলজাত শিশু কেঁদে ওঠে, যে-কোন এক মানবীর স্তন পেতে চায়
তখনই কাকেরা কা কা ক’রে ডেকে ওঠে, পূর্ণিমার চাঁদ অস্ত যায়!

-তুইও কী তাদেরই একজন নোস্, মিথ্যা, অসম্ভব?
-আমার জন্মের সময় মা ছিলেন শব
-তুইও কী পাগলের ঔরসজাত, মেনকা অথবা উর্বশীর?
-আমাকে কুড়িয়ে পায়, পেয়ে ঘেন্না হয় গ্রাম্য রমণীর
-তবু তো তোকে সে দিয়ে গেছে স্তন
-আজ নদী এসে বলে গেল, খুন ও ধর্ষণই করতে হবে, চল্
-চুপ কর্ মাতৃগামী, পিতৃহন্তারক…
-শান্ত হও। ঐ দেখো জলাশয়ে প্রশ্নকর্তা বক…

যে তুমি, আমাকে পাঠালে পাগলদের ধারা ধরে … লও নমস্কার
যে তুমি, একই যোনিতে জন্ম ও উপগত শিখিয়েছো … ধরো বেদনা আমার
যে তুমি, দেবীদের এনেছো ডেকে, পাগলকে ঘুমহীন স্বপ্ন দিলে ধার
যে তুমি, আমাকে স্বাধীন করলে, অনুমতি দিলে, একই নদীতে স্নান করবার
যে তুমি, সময় কিংবা সময় হীনতা, আমার ও নদীর নাও—আনত প্রণাম!