| 29 মার্চ 2024
Categories
এই দিনে কবিতা সাহিত্য

ধীমান চক্রবর্তীর কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 3 মিনিট

০৪ অক্টোবর কবি ধীমান চক্রবর্তী’র জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


অনন্ত
 
জন্মদাগ ও সাদাচুল। ডাকনাম মনে রাখতে
চেয়েছিল। নদীতে সদ্য কাচা জামা।
বাড়ি ফিরে গলিয়ে নেয় হাতলওয়ালা ছুরি।
 
                           আলো না অন্ধকার,
 
কে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে,
তা এই বৃদ্ধ পৃথিবী জানে না। মধুশালাও না!
বাঁধভাঙা জল ও মানুষের নীল বিষ,
গিলে খেতে চায় সবকিছু। এমনকি
মাঠে ঝুঁকে থাকা রহস্যের ইতিহাসটুকুও।
 
                                   কোনও গান –
 
মুখস্থ নেই বলে, নিশ্চিন্তে উড়তে পারে প্যারাসুট।
মেয়েটির রাস্তায় পড়ে থাকা কাটাহাত আরও
 
                                     স্বচ্ছ হয়ে এলো।
 
তাকে আলো বলে ডাকছে কেউ কেউ।
যেন সে বেঁচে থাকবে চিরটাকাল!  
 
 
 
 
 
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com
 
 
 
 
গমন
 
তোমার শহর বললেই ভিজে চুমু।
আট-দশ রকম শোনা আর বেজে ওঠা।
পাখিশেষ বারান্দায় শেখানো শীতকাল।
 
                           বেতের চেয়ারে
 
শুক্লপক্ষ এবং রিহার্সাল। অল্প ফেরিঘাট।
দোষ না দেওয়া রঙচটা জিনস্‌।
 
                     সোনায় সোহাগা হয়ে
 
বসে আছে বাথটাবের কোরাসে।
গন্ধরাজলেবু আলো থেকে অন্ধকারে এলে,
কোপারনিকাস হয়ে যায় আমার কুশপুতুল।
প্রতিতুলনায় আর কতদূর যাবে যন্ত্রণা!
 
                             পালকি একদিন
 
এসেছিল ধানখেতে গাইতে গাইতে।
আজ শুধু তুমি ভেবেছিলে,
হয়তো আসবে।
Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

ব্যক্তিগত : ১০১

ট্রাফিকের শব্দ। নিঃশ্বাস নেয় আবহাওয়া।
এ খুব সাধারণ নয়। প্রত্যেকের মধ্যে
ভাঙাচোরা একটা ফ্রিজ বা চিতাকাঠ থাকে।
জমে যাওয়া স্মৃতির কাফেলা।
এক বছরের জন্য এই মরে যাওয়া।—
সকাল থেকে ধূসর শুষে নেয়,
টেবিলে ঘুরঘুরে পাখি। ত্রিভুজ তাকে লক্ষ করে,
নজর করছে তার পড়াশুনো।
ফুটপাত কারোর পায়ের শব্দ মনে রাখে না,
তাই তো একজন বেড়াল সারারাত
আদুরে গলায় ডেকে যায় ফুটপাতকে,
শুভদৃষ্টির সময় হলে হলদেটে
ফাজিলজিক আদুরে গলায় ডাকে জীবনকে।

 

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

 

ব্যক্তিগত – ১১৪

দোলনা পাশে নিয়ে কৃষ্ণগহ্বর। নিজস্ব ঝোরা।

চোখ তার লেন্স খোলে যমজে।

বৃষ্টিতে ছবি আঁকার পর আমার সত্যিকারের

                                 জীবন শুরু হলো।

সমুদ্র শরীর মোছে তোয়ালেতে,

মোছে নিজের কেটে ফেলা জিভ,  

বিবাহ ভাঙতে ভাঙতে উদ্ভিদরা মার্চপাস্টে।

পথে মানচিত্র বেছালে সাদা খোলে রজনীগন্ধা।

রান্না করতে করতে সরাইখানা

ক্যাকটাসকে শোনায় ঘুমজাগানিয়া পরিযায়ী গান।

মুখোশে কখন যে লেগে গেল সারি সারি মৃত্যু,

টুকরো কঙ্কাল।

 

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

 

ব্যক্তিগত – ১১৫

রাত ও বড় হওয়া ওয়াগন, শ্মশানের পাশ কাটিয়ে,

লন্ঠন পার হয়ে যায় যুগ যুগ জীও।

তার খেলে ফেলে ঠান্ডায় মারা যাওয়া বরফ

                     ও তার পাঁচালি।

বৃষ্টি টোকা দিচ্ছে এক অন্যরকম

বৃষ্টির দরজায়, বাটিক ছাপ এপার্টমেন্টে।

প্রসারিত তালু এবং জীবন, নাকি অল্প বিজর্নও।

কোনও কোনও দিন জ্বালাতে চায় মোমবাতি

ও পালকি। দাঁতে নখ কাটছে অবিকল

                                 বয়ে যাওয়া ঠুমকি।

স্বরলিপিতে রক্ত লেগে, অনেকটা

রক্ত লেগে মানুষের অর্ধেক খাওয়া রুটি,

চপ্পল, লম্বা রেললাইন ও তোমাদের মাইকেলে।

 

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

 

 

ব্যক্তিগত – ১১৬

হাসপাতাল রাশিচক্র খুলে বসে সকালবেলায়,

ঝালর শনছে স্বপ্ন আর সোনালি বেডরুম,

ডাকপিওন এলে খাম খুলে অন্ধকার নামায়

                               জনবিরল মণিবন্ধ।

নামায় খাম খুললে অঝোর বনানী।

ভিন্ন ভিন্ন তরিকায় মোমবাতে জ্বালে,

হলুদ মাখন লাগানো বাচ্চাদের রুটি।

তোমার বিরুদ্ধে আলো হয়ে উঠল একইঞ্চি।

আঁকিবুকি জামা জানে লন্ঠন।

পশম অনেকটা হলো লেডিজহষ্টেল আর

                               জাহাজের এপিটাপ।

হাসপাতালের বেঞ্চে বসে তিনমাস আগের মৃত্যু।

রাস্তায় মৃদু আলো।

পেনসিলে আমি একজন মৃত্যুর মুখ আঁকছি।

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত