অবিচ্ছেদ্য তুমি
তোমার হাওয়াই মিঠাই চুলে,
আঙুল আটকে গেছে ভুলে,
যত ছাড়াই আরো জড়াই,
আমায় মুক্তি দিলে না তো
তোমার খোঁপার বাঁধন খুলে।
তোমার বাঁকে, তোমার খাঁজে,
লেখা পাণ্ডুলিপির ভাঁজে,
বন্দী রাখা থমকে থাকা
আদর আদর গন্ধা দুপুর
গড়ায় হিম-মাখানো সাঁঝে।
তোমার ঘ্রাণের স্রোতের বানে,
আমার মন কিছু না মানে,
সোঁদা মাটি ধুপের কাঠি
শুধু তোমায় করায় স্মরণ
আর বুক ভরে শ্বাস টানে।
অভিশাপ
এইসব চুলোয় যাওয়া দিনগুলোতে
বুকে পাথর চাপতে থাকে,
অসুখবিহীন ব্যথা বাড়ে,
কান্নাফেরি পথে হাঁকে।
অন্য কারো মন খারাপের
বোঝা বাড়ে নিজের কাঁধে,
না-জানাতেই কষ্টগুলো
ডুকরে উঠে গলা সাধে।
কেন এমন দিনগুলোতে
নেভে চোখের নিয়নবাতি?
বুকের ভেতর অন্ধ হাতে
কাকে খুঁজি আঁতিপাতি?
নেই জানা নেই কার কারণে
কান্নাজমা, কান্নাঝরা,
কার কারণে মাথার ওপর
দুঃখের পাহাড় ভেঙ্গে পড়া।
যার কারণেই হোক না এসব
শাপ দিয়েছি অচেনাকে,
বাসবে ভালো তুমিও দেখো
কোনো কঠিন অজানাকে!
ঘুম-খোঁজ
কারো হৃদয় আছে কি গো ফাঁকা?
বানাতে চাই ছোট্ট একটা ঘর।
একটা মাদুর, একটা বালিশ নিয়ে
আরাম করে ঘুমোব রাতভর।
ঘুমুতে চাই অতল ঘুমের স্রোতে
ঘুমুতে চাই সুখ-স্বপ্নের ঘোরে,
ঘুমুতে চাই তারার আলো মেখে
ঘুমুতে চাই বৃষ্টিভেজা ভোরে।
ডাক দিয়ে যাই খোঁজের ভেতর ভেতর
আপন মানুষ আছে কি কেউ পাশে?
একটা মাদুর, একটা বালিশ নিয়ে
ঘুমুবো যার ছন্দবাঁধা শ্বাসে।
বিষণ্ণতার দিন
তোমারও মন বিষণ্ণ আজ তাই
দিলাম ছুঁয়ে তোমার কপাল, চুল
তোমারও আজ চোখ ভেজানো দিন
করব না থাক – মুছে দেয়ার ভুল।
তোমার ঠোঁটে তাল হারানো গান
তোমারও কি মন নেই আজ কাজে?
তোমারও কি খেই হারানো দিন?
তাই কি এমন অগোছালো সাজে?
তোমার হাত আজকে যদি খোঁজে
আমার আঙুল, আমার আলিঙ্গন
আস্তে করে ডেকো দুচোখ বুঁজে
থাকব পাশে, চাইবে যতক্ষণ।
একপাক্ষিক ভালোবাসা
সব ইচ্ছে পূরণ হয় না
সব স্বপ্ন মন তো ছোঁয় না
শুধু কষ্ট কষ্ট একরাশ উঁকি দেয়,
মন যদি থাকে তা তো ভাঙবেই
নীল বেদনার রঙে রাঙবেই
সেই নীল রঙে ধোয়া চোখটাও টুকি দেয়।
অশ্রু মানেনি বাঁধ তো
তবু তোমার কথাই ভাববো
যে যাই বলুক মন তো কিছু শোনেনি,
তোমার দূরে ঠেলার চেষ্টায়
আমি হারিয়ে গেছি রাস্তায়
পথ ফেরার খুঁজে পাইনি তুমি জানোনি।
আজ দিশেহারা তাই ঘুরপাক
তবু যন্ত্রণা আজ তোলা থাক
শুধু ভালোবাসা আজ মিশে যাক এই হাওয়াতে,
ভেজা চোখ দুটি করে বন্ধ
বুকে ভরে তোমার গন্ধ
আজ হারাই আমি শুধুই তোমায় চাওয়াতে।