| 19 এপ্রিল 2024
Categories
দেহ স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য: গর্ভাবস্থা ও শিশুর জন্মগত ত্রুটি । মনীষা দত্ত

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
 
 
একটা সুস্থ শিশু আমাদের আগামী দিনের সুন্দর ভবিষ্যৎ এবং আমাদের নির্ভরতার প্রতীক। আমরা জানি, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আর সেই স্বাস্থ্য বা সুস্থতার পরিচর্যা শুরু হয় শিশুটির জন্মের পূর্ব থেকেই। একজন সুস্থ মা একটা সুস্থ, স্বাস্থ্যবান, সুন্দর শিশুর জন্ম দিতে পারেন। তাই আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে শিশুর জন্মের আগে থেকেই এবং সমস্ত পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে।
 
গর্ভাবস্থায় কি কি করনীয়ঃ
একজন গর্ভবতী মাকে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। মায়ের শরীরের কোনো প্রকার পুষ্টিজনিত অভাব যেমন: আয়োডিনের অভাব, আয়রনের অভাব, ভিটামিনের অভাব থাকা যাবে না।
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে হাঁটাহাঁটি করতে হবে এবং পরিমাণমত পানি খেতে হবে। খাবার খাওয়ার পর শয়ন করা যাবে না, কিছুক্ষন বসতে হবে এবং হাঁটাহাঁটি করতে হবে। শয়নের সময় বাম পাশে কাত করে শুতে হবে যেন বাচ্চার বৃদ্ধি ভাল ভাবে হয়।
বাচ্চার মাকে সব সময় হাসিখুশি থাকতে হবে এবং প্রতিদিন যোগ ব্যায়াম করার অভ্যাস করতে হবে। এই সময় ভারী জিনিস নিয়ে উঠানামা থেকে বিরত থাকতে হবে।
একজন প্রসুতি চিকিৎসক এর তত্ত্বাবধান এ থাকতে হবে এবং শিশুর বিকাশ, শিশুর নড়াচড়া কেমন হচ্ছে সেই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
কিছু রুটিন চেক আপ যেমন, রক্তচাপ মাপা, ডায়াবেটিস পরীক্ষা (রক্তের সুগার পরীক্ষা) রক্ত শুন্যতা আছে কিনা এবং মায়ের অন্যকোন সমস্যা আছে কিনা তার পরীক্ষা করতে হবে।
 
গর্ভাবস্থায় মায়ের যেকোনো সমস্যা তার নবাগত সন্তানের উপর প্রভাব ফেলে আর সেই প্রভাবজনিত সকল সমস্যাকে বলা হয় শিশুর জন্মগত ত্রুটি।
কি কি কারনে জন্মগত ত্রুটি হতে পারে?
১.গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টিজনিত সমস্যা যেমনঃআয়োডিনের অভাবে থাইরয়েড রোগ হতে পারে।
২.গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ জনিত সমস্যা থাকলে।
৩.গর্ভবতী মা দীর্ঘদিন কোনো অসুস্থতায় ভুগলে বা মায়ের কোনো অটোইমিউন রোগ থাকলে।
৪.ভিটামিনের অভাব
৫.হরমোনজনিত সমস্যা
৬.রক্ত শূন্যতা
৭.ধুমপান বা মদ্যপান করলে
৮.এই সময় যদি কোনো ওষুধ সেবন করে যেমন: টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক, ব্যাথার ওষুধ ইত্যাদি।
৯.কোনো জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হলে যেমন: রুবেলা বা জার্মান মিজলস, সাইটোমেগালো ভাইরাস, টক্সোপ্লাজমা ইত্যাদি।
১০.জিনগত ত্রুটি থাকতে পারে যেমন: পরিবারে রক্তসম্পর্কের আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে হলে।
১১.বেশি বয়সে গর্ভধারণ করলে যেমন: মায়ের বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে।

 


আরো পড়ুন: গর্ভবতী মা ও দাঁতের যত্ন

 

 
কি কি ত্রুটি নিয়ে একটা শিশু জন্মাতে পারে?
১.হাত -পায়ের গঠনগত ত্রুটি যেমন: পলিডেক্টাইলি, সিন্ডেক্টাইলি।
২.হৃৎপিন্ডজনিত সমস্যা হার্টের ভালব এর সমস্যা কিংবা পর্দায় ছিদ্র নিয়ে শিশুর জন্ম।
৩.স্নায়ুতে বিভিন্ন ধরনের অস্বাভাবিকতা
৪.মাথার খুলি অসম্পূর্ন থাকা যাকে মেডিকেলের ভাষায় বলা হয় এনানসেফালি (Anencephali)
৫.ছোট সাইজের মাথা নিয়ে জন্মানো (Microcephaly)
৬.স্পনাইনা বাইফিডা (নার্ভকর্ডের সমস্যা)
৭.ব্রেনের ভেতর তরল পদার্থ জমা হওয়া বা হাইড্রোসেফালি (Hydrocephali)
৮.ক্রোমোজোমাল প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছে, ডাউন সিন্ড্রোম (Down Syndrome)
৯.থ্যালাসেমিয়া (Thalassaemia)।
মেটাবলিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছে হাইপোথাইরইডিজম, ফিনাইলকিটোনিউরিয়া।
সাধারনত ২০থেকে ২৪ সপ্তাহের আল্ট্রাসনোগ্রামে বাচ্চার কার্ডিয়াক, রেনাল, হাড়/অস্থি, পরিপাকতন্ত্র সহ অন্যান্য বেশিরভাগ ত্রুটি বোঝা যায়। তাই যেকোন প্রেগন্যান্ট মায়েরদের এসময়ে একটি এনোমেলি স্ক্যানিং দেওয়া হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত