স্ট্যামফোর্ড জার্নালিজমের প্রতীকী ইট বলছে জাতির গৌরবকথা

Reading Time: 3 minutes

 

দেড়যুগের সামরিক শাসন শেষে জাতি যখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস প্রায় ভুলতে বসেছে তখন মুক্তিযুদ্ধ প্রজম্মের আটজন মানুষ ১৯৯৬ সালের ২২শে মার্চ ৫ সেগুনবাগিচার একটি সাবেকী তিনতলা ভাড়া বাড়িতে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের মানুষের আকুন্ঠ সর্মথন ও ভালবাসায় আটজন ট্রাস্টির উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত জাদুঘরটি কালক্রমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক প্রধান সংগ্রহশালায় পরিণত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ব ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ের সংগৃহিত ১৫ হাজার  নির্দশন সেগুনবাগিচার স্বল্প পরিসরে যথাযথভাবে প্রর্দশন করা যাচ্ছিল না। সংগৃহীত নির্দশনগুলো প্রর্দশনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের একটি নিজস্ব ভবন নির্মাণের প্রয়োজন পড়ে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের “আমাদের জাদুঘর আমরাই গড়বো” আহবানে সাড়া দিয়ে সারা দেশের নানা শ্রেনী পেশার মানুষের সঙ্গে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব ভবন নির্মাণে এগিয়ে আসে। ২০১২ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত এই অনুদান সংগ্রহ কার্যক্রমে ৩৩,৩৭-৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিভাগীয় কর্মচারীরা অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব ভবন নির্মাণের অর্থসংগ্রহ ও জনসংযোগের জন্য ২০১০ সালের অক্টোবরে দশজনের একটি পদযাত্রী দল ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে সুনামগঞ্জের ভারতীয় সীমান্তবন্তী ডলুরা পর্যন্ত ৪৫০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে ‘তারুণ্যের পদযাত্রায়’ অংশ গ্রহণ করে। তারুণ্যের পদযাত্রায় অংশ নেয়া দশজনের মধ্যে পাচঁজনই স্ট্যামফোর্ড জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিল।পদযাত্রায় অংশগ্রহণের সময়ই আমরা আমাদের জানালির্জম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি প্রতীকী ইট কেনার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করি। পদযাত্রা থেকে ফিরে এসে অনুদান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করার ব্যাপারে আমরা শ্রদ্ধেয় ডেপুটি রেজিস্টার ফজলে রব তাজ স্যার এবং জার্নালিজম বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর কাজী আবদুল মান্নান স্যারের দ্বারস্থ হই। ডেপুটি রেজিস্টার এবং চেয়ারম্যান স্যার আমাদের এই মহতী উদ্যোগের কথা শুনে খুব খুশি হন। তাৎক্ষনিক অনুমতি প্রদান করে দ্রুত অনুদান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন। অনুদান সংগ্রহ কার্যক্রমটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এগারো সদস্যের একটি কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয় । সেই সাথে প্রতি ব্যাচে একজন করে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হয়। শিক্ষার্থী, শিক্ষকমন্ডলী, কার্যনির্বাহী কমিটি ও বিভাগ কর্মচারীদের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আন্তরিক সহযোগীতায় ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগেই আমরা একটি প্রতীকী ইটের মূল্য (দশহাজার টাকা) সংগ্রহ করি। অনুদান প্রদানকারীদের মানি রিসিপ্টের দ্বিতীয় অংশ ‘ইতিহাসের অংশ যারা’ শীর্ষক বোর্ড বিভাগের দেয়ালে বর্তমানে প্রর্দশিত হচ্ছে।

২০১২ সালের ৬ এপ্রিল স্ট্যামফোর্ড জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হকের কাছে একটি প্রতীকী ইটের মূল্য (দশহাজার টাকা) হস্তান্তর করা হয়।

২০১৭ সালের ১৬ই এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশাল পরিসরে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব ভবনের শুভ উদ্ধোধন করেন।

এখন যদি এই বিভাগের কোন শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ঘুরতে যায় তাহলে মূল প্রবেশপথের বাম পাশে টিকেট কাউন্টারের লবিতে প্রতীকী ইট দাতার নামের তালিকায় চোখ বোলালে দেখতে পারবে কাচের ফলকে জ্বলজ্বল করছে স্ট্যামফোর্ড জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের নাম।

প্রতীকী ইট ক্রয় করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণে অংশ নেওয়ায় গত বছরের ২২শে ডিসেম্বর স্ট্যামফোর্ড জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগকে সম্মানণা জানায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিজস্ব ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বিভাগের শিক্ষার্থী মির্জা মাহমুদ আহমেদ ও মামুন অর রশিদের হাতে সম্মানণা স্মারকটি তুলে দেন। এ বছরের ৩রা ফ্রেরুয়ারি সম্মানণা স্মারকটি স্ট্যামফোর্ড জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক কাজী আবদুল মান্নান স্যারের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্ট্যামফোর্ড জানালির্জম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রতীকী ইট বলছে জাতির গৌরবকথা। জার্নালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য নিশ্চয়ই এটা খুব গৌরবের বিষয়।    

 

 

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>