| 18 এপ্রিল 2024
Categories
উৎসব সংখ্যা’২০২১

ইরাবতী উৎসব সংখ্যা গল্প: অবয়ব । অনিন্দিতা গোস্বামী

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট
 
আয়নার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠল শর্মিষ্ঠা। বিদ্যুৎকে ডাকল, শুনছ? বিদ্যুৎ অনেক আগেই বিছানা নিয়েছে। তার ভারী নিঃশ্বাসে মালুম হচ্ছে ঘুমও বেশ গাঢ় হয়ে এসেছে। কাজকর্ম সেরে শর্মিষ্ঠার আসতে দেরি হয়। সে বসেছিল রাতের সামান্য প্রসাধনী সারতে। শর্মিষ্ঠার ডাকে ‘উঁহ্’ বলে একটা বিরক্তিসূচক শব্দ করে পাশ ফিরল বিদ্যুৎ, তারপর বলল, কী হলো? শর্মিষ্ঠা খানিকটা ভয়ে ভয়ে বলল, দেখো না, আয়নার মধ্যে কী অদ্ভুত দৃশ্য!
বিদ্যুৎ বলল, রাত দুপুরে আমি আয়না দেখব! খেয়েদেয়ে কাজ নেই। তুমি চলে এসো তো। এই জন্যই আগেকার দিনের লোকেরা বলত রাতে আয়না দেখতে নেই, তোমরা তো সে সব মানবে না।
শর্মিষ্ঠা বুঝল কথা বাড়িয়ে লাভ নেই, জোর করলে কাজ তো কিছু হবেই না, বরং অশান্তি বাধবে। সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও এসে শুয়ে পড়ল বিদ্যুতের পাশটিতে। মনে মনে ভাবল, যা হয় হবে, বাড়ি তো তার একার নয়। বিপদে পড়লে তখন টনক নড়বে । শর্মিষ্ঠা পাশে এসে শুতেই হাত বাড়িয়ে শর্মিষ্ঠাকে বুকের মধ্যে টেনে নিল বিদ্যুৎ। শর্মিষ্ঠা অবাক হয়ে বলল, বাব্বা, হঠাৎ!
বিদ্যুৎ শর্মিষ্ঠার বুকের মধ্যে মুখ গুঁজে দিতে দিতে বলল এটা হলো গিয়ে লক্ডাউন এফেক্ট। শর্মিষ্ঠা আলতো হেসে বলল, হুম ,তাই বুঝি! বলে আনমনা হয়ে পড়ে রইল বিদ্যুতের বাহুর বেড়ের মধ্যে। ওদের ভালোবাসাবাসি বেশি দূর এগোলো না বটে কিন্তু শর্মিষ্ঠার নাকে এসে লাগল কবেকার ভুলে যাওয়া কনকচাঁপা ফুলের গন্ধ। ওদের ফুলশয্যার দিন ওদের বালিশের ওপর ওর শাশুড়ি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন এক-মুঠি চাঁপা ফুল। সেই থেকে ওই চাঁপা ফুলের গন্ধটাই যেন ছড়িয়ে গিয়েছিল বিদ্যুতের গায়ে। শর্মিষ্ঠা যখনই বিদ্যুতের কাছে গিয়েছে তখনই ওই গন্ধটা নাকে এসেছে তার। কিন্তু সেসব তো যেন মনে হয় কোন গত জন্মের কথা। সেই যখন একটা পক্ষীরাজ ঘোড়া চিঁ হিঁ হিঁ শব্দ তুলে রোজ রাতে নেমে আসত ওদের বিছানার ওপরে আর ওরা চেপে বসলে ডানা মেলে সেটা উড়ে যেত নীল সাদা মেঘেদের রাজ্যে।
তারপর ওদের একটা ছেলে হল। সাদা ঘোড়াটা ডানা মুড়ে নেমে এল ওদের বারান্দার কোণে। ওরা দুজনেই বাচ্চাকে দুধ খাওয়াত, খেলা দিত। বিদ্যুতের বন্ধুরা বলত, বাব্বা, তোমরা মা-বেটাতে কী এমন করলে যে সদা আড্ডাবাজ বিদ্যুৎ আর মোটে ক্লাবমুখো হয় না! বাস্তবিকই যেন বিদ্যুৎ আপিস থেকে কতক্ষণে বাড়ি ফিরবে এই চিন্তা। তারপর একদিন বিদ্যুৎ ছেলের বগল ধরে তুলে বসিয়ে দিল বারান্দার কোণে রাখা ওই ঘোড়াটার পিঠের ওপর। ঘোড়াটা দুলতে লাগল। ঘোড়া যত দুলতে লাগল, ছেলে ভয় পেয়ে তত চেঁচাতে লাগল। সে নেমে পড়তে চায়। বিদ্যুৎ প্রবল উৎসাহে ছেলেকে শেখাতে লাগল ঘোড়ার পিঠে চেপে থাকার কায়দা কৌশল। ‘কান দুটো চেপে ধর, দোল, দোল জোরে দোল’ ইত্যাদি নানা নির্দেশ দিতে লাগল সে ছেলেকে। একসময় ছেলে খানিকটা রপ্ত করে নিল ব্যাপারটা। কিন্তু সে খুব বেশি জোরে দুলতে চাইত না। আর তাতেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠত বিদ্যুৎ। শেখাত এমনি না চাইলে কী ভাবে চাবুক মেরে ঘোড়া ছোটাতে হয়।
বিদ্যুতের চাহিদা অনেক। ছেলেকে সে টাট্টু ঘোড়া বানাতে চায়। পড়াশোনা খেলাধুলায় তার ছেলে হবে চৌকস। সে নিজে ছেলেকে অঙ্ক কষায়, গ্রামার করায়। আরও ভালো হতে হবে, আরও আরও। কিছুতেই তৃপ্ত হয় না বিদ্যুৎ। সারা বাড়িতে যেন একটাই শব্দ ঘুরতে থাকে, সপাং, সপাং। ছেলে ককিয়ে ওঠে। ছেলে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একসময় সে নেমে পড়ে ঘোড়া থেকে। নিজের মতো করে সে পড়াশোনা করবে ঠিক করে চলে যায় হস্টেলে। ততদিনে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে রণে ভঙ্গ দেয় বিদ্যুৎ। মাঝখান থেকে চলে যায় অনেকগুলো বছর। শর্মিষ্ঠা পরিপাটি ভুলে যায় তাদের ঘরেও একদিন চাঁপা ফুলের গন্ধ ছিল। বিদ্যুৎ ফিরে যায় তার পুরনো আড্ডায়, শর্মিষ্ঠা ব্যস্ত হয়ে পড়ে তার অনাবশ্যক ঘরকন্নায়।
এমনই চলছিল গতানুগতিক। হঠাৎ একদিন সবকিছু পালটে গেল। না-জড় না-জীব এক আণুবীক্ষণিক বস্তু তোলপাড় করে ফেলল বিশ্ব। হ্যাঁ, এক মারণ ভাইরাস। এক অজানা নিউমোনিয়ায় বিশ্ব জুড়ে মারা যেতে লাগল হাজার হাজার মানুষ। মানুষ থেকে মানুষে হু হু করে ছড়াতে লাগল রোগ। আতঙ্কগ্রস্ত মানুষ নিজেকে গৃহবন্দি করে ফেলল। রাষ্ট্র ঘোষণা করল লকডাউন। বন্ধ হয়ে গেল অপিস কাছারি, বন্ধ হয়ে গেল বাস, ট্রাম, ট্রেন সব।
সেদিন ন্যুব্জ দেহে বাড়ি ফিরল বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎকে কোনোদিন মাথা নিচু করে হাঁটতে দেখেনি শর্মিষ্ঠা। সেদিন দেখল। ভয়ে তার বুকের ভিতরটা গুরগুর করে উঠল, তবু উপরে কিছু বলল না। শুধু শুধাল, ‘‘তোমাদেরও অপিস বন্ধ হয়ে গেল?’’ ঘাড় নাড়ল বিদ্যুৎ, ‘‘হুম, ওয়ার্ক ফ্রম হোম। ভালই হল, কদিন একটু বাড়িতে বসে রেস্ট করা যাবে।’’ বলল বটে, কিন্তু তার গলার মধ্যে যেন কোনো জোর খুঁজে পেল না শর্মিষ্ঠা। এই বিদ্যুতের কী প্রতাপ দেখেছে সে সবসময়ে! কোনোদিন ধমকে ছাড়া তো সে কথাই বলেনি শর্মিষ্ঠাকে। সে কিনা বলছে কাজের লোক আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে তো কী হয়েছে, নিজেদের কাজ তো নিজেরা করাই ভালো। আমি তোমাকে সাহায্য করে দেব। শর্মিষ্ঠার চোখে জল চলে আসছে। দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে যে-বিদ্যুতের নখ-দাঁত ছাড়া কিছুই দেখেনি শর্মিষ্ঠা, সেই বিদ্যুৎই আগ বাড়িয়ে তার হাত থেকে নিয়ে কেটে দিচ্ছে সবজি, মেজে দিচ্ছে বাসন, পিছন থেকে জড়িয়ে ধরছে কোমর, এ যে ভাবতেও তার অবাক লাগছে।
কতদিন পরে যেন এই গারদটাকে শর্মিষ্ঠার ঘর মনে হচ্ছে, তাও যেমন ঠিক, তেমনি আবার সারাদিন কাছাকাছি পাশাপাশি দুটো মানুষ! এত নৈকট্যও কি হাঁপ ধরাচ্ছে শর্মিষ্ঠার! অপিস থেকে বাড়ি ফিরে দুদণ্ড ঘরে থাকত না বিদ্যুৎ। প্রায় উড়েই বেরিয়ে যেত ক্লাবে। কোনোদিন অভিমান করে কিছু বলতে গেলে বলেছে চাকরির চাপ কাটাতে এইটুকু রিক্রিয়েশন আমার প্রয়োজন। শর্মিষ্ঠা রেগে বলেছে, চাকরি তো আমিও করি, কই বাড়ি ফিরে তো আবার আড্ডা দিতে বেরই না! তাতে বিদ্যুতের কী উত্তর! —তোমার চাকরি আর আমার চাকরি! ওই তো খুদে খুদে বাচ্চাগুলোকে একটু অ আ ক খ পড়াও, ওতে কোনো চাপ আছে নাকি! তাও অসুবিধা হলে ছেড়ে দাও। কে বলেছে চাকরি করতে।
সত্যি বটে, শর্মিষ্ঠার এই প্রাইমারি স্কুলের চাকরিটা নিয়ে বিদ্যুৎ এবং বিদ্যুতের মায়ের আপত্তির শেষ ছিল না। বিদ্যুতের মা তো কিছুতেই পরীক্ষা দিতে দেবে না তাকে। নিজের বাচ্চা মানুষ করো, লোকের বাচ্চা মানুষ করতে হবে না। ওই দুই পয়সা রোজগার করে তোমার কী হবে শুনি! বিদ্যুৎ অবশ্য আরও এক কাঠি ওপরে। বলেছিল, মা, দেবে বলছে যখন দিক না। দিচ্ছে তো কত জনাই, পাচ্ছে কজন! অত সহজ না। ওর কোনো সম্ভাবনা নেই। বিদ্যুতের কাছে কৃতজ্ঞ শর্মিষ্ঠা। অবহেলা করে হলেও সেদিন পরীক্ষা দেবার সুযোগ করে দিয়েছিল তাকে। এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে চাকরিটা পেয়েও গিয়েছিল সে। তবু এই চাকরিটা রক্ষার জন্য প্রতি মুহূর্তে অপমানিত হতে হয়েছে তাকে। উচ্চ পদের গরিমা ক্রমশ দাম্ভিক করে তুলেছিল বিদ্যুৎকে। শিখিয়েছিল অন্যকে অপমান করে কী করে সর্বত্র নিজের আধিপত্য বজায় রাখা যায়। সেদিন টং করে শর্মিষ্ঠার মোবাইল ফোনে একটা মেসেজ আসতেই বিদ্যুৎ বলল, দেখো তো তোমার মাইনে ঢুকল কিনা!
অবাক হল শর্মিষ্ঠা, তার মাইনের খোঁজ বিদ্যুৎ করছে! বলল, হ্যাঁ।
বিদ্যুৎ বলল, বেড়ে চাকরি কিন্তু তোমাদের। যাও না যাও ঠিক সময়ে মাইনে ঢুকে যাচ্ছে। আর হবে না-ই বা কেন, তোমরাই তো দেশের ভবিষ্যৎ কাঠামোটা তৈরি করছ। আমাদের চাকরি আজ আছে কাল নেই। পঞ্চাশ বছর বয়স হয়ে গেছে, যে-কোনো দিন ভিআরএস ধরিয়ে দেবে হাতে। আর দিক না দিক আমারই আর ইচ্ছে করে না যেতে। অত পাবলিক ডিলিং আমাদের। কোথায় কোন ভাইরাস ঘাড়ে চেপে বসবে। তোমার চাকরিটা তো আছে। দিব্যি আমাদের চলে যাবে সংসার, বলো! কী বা প্রয়োজন অধিক অর্থ উপার্জনের। আগে তো জীবন, আগে তো বাঁচা। থম মেরে থাকে শর্মিষ্ঠা। এ কাকে দেখছে সে! তার মনে হচ্ছে মৃত্যু ভয়ে বিদ্যুৎ আরও বেশি করে যেন সিঁধিয়ে যাচ্ছে ঘরের অন্দরে।
 
অথচ ওরা বেরিয়ে পড়েছে। পিলপিল করে বেরিয়ে পড়েছে। যারা ভিনদেশে গিয়েছিল কাজ করতে। সপ্তাহান্তে যারা টাকা পাঠাত বাড়িতে বউ-ছেলেমেয়ের কাছে আর নিজেরা গাদাগাদি করে থাকত একটা ঘরে, তারা বেরিয়ে পড়েছে রাস্তায়। তারা হাঁটছে। ঘরে ফিরবে বলে তারা হাঁটছে। হাঁটতে হাঁটতে কখন রাস্তাটাকেই ওদের বিছানা বলে মনে হচ্ছে, কখনও বা রেললাইনটাকে। ওরা পথের মধ্যেই শুয়ে পড়ছে, ক্লান্ত অবষণ্ণ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে পথের মধ্যেই। ওদের পিষে দিয়ে যাচ্ছে ট্রেনের চাকা কিম্বা ট্রাকের শরীর।
সাইকেল চালিয়ে এসেছিল মালতি। শর্মিষ্ঠা মাইনেপত্র রেডি করেই রেখেছিল। কাজ করেনি তো কী হয়েছে! গরিব মানুষ খাবে কী? এই সিদ্ধান্ত নিতে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ লাগে না। প্রধানমন্ত্রী টিভিতে দেশবাসীকে অনুরোধ করেছেন কেউ যেন কর্মীদের মাইনেপত্র না কাটেন। প্রধানমন্ত্রীর কথা যদি সবাই শুনত তবে তো মানুষগুলোকে পথে নামতে হত না। শর্মিষ্ঠা মালতিকে ডেকে বলল, আয়, মাসপয়লায় তুই যে টাকা নিতে আসবি আমি জানতাম। সব গুছিয়েই রেখেছি। ভালো আছিস তো সব?
বলতেই ডুকরে কেঁদে উঠল মালতি। বলল, আজ পাঁচ-ছয় দিন ধরে আমার বরের কোনো খবর পাচ্ছি না জানো! ফোন করলে বলছে মোবাইল ফোন সুইচ অফ। এই যে লোকগুলো নাকি সব রাস্তা ধরে হাঁটছে আর অনেকে ধুপধাপ করে পড়ে মরেও যাচ্ছে, টিভিতে যে দেখাচ্ছে এসব কি সত্যি গো? কী বলবে ভেবে পাচ্ছিল না শর্মিষ্ঠা, সে বলল, তোর বর কোথায় যেন কাজ করত? ও বলল, পশ্চিমে বোম্বে বলে একটা জায়গা আছে না? ওইখানে। সেন্টারিংয়ের কাজ করত। ওই অত উঁচু মাচায় উঠে কাজ করত, ওপর থেকে পড়ে যায়নি তো?
শর্মিষ্ঠা বলল, মালিকের ফোন নম্বর নেই তোর কাছে?
ঘাড় নাড়ল মালতি, না।
শর্মিষ্ঠা ওর হাতে মাইনার টাকা সঙ্গে বাড়তি দুশো টাকা গুঁজে দিয়ে বলল, চিন্তা করিস না, হয়তো রাস্তা ধরে হাঁটছে, মোবাইল ফোনে চার্জ নেই তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ধৈর্য রাখ। তোর বর ঠিক তোর কাছে ফিরে আসবে। বলল বটে, কিন্তু তার গলাটাও কেমন ফ্যাসফ্যাসে হয়ে গেল। যারা মাঝপথে মারা যাচ্ছে তাদের নাম ঠিকানা কি আদৌ থাকে? নাকি ওরা সবাই পরিযায়ী শ্রমিক! সঠিক খবর পাবে কি মালতি!
মালতি চলে গেল। এক মনখারাপের মেঘ কালো করে ছেয়ে ফেলল আকাশ। শুরু হল বৃষ্টি। মুষলধারে বৃষ্টি। শর্মিষ্ঠা দেখল রান্নাঘরের নালি থেকে, বেসিনের পাইপ থেকে শয়ে শয়ে কালো ডেঁয়ো পিঁপড়ে বেরিয়ে আসছে ওপরে। ওরা অবিন্যস্ত ঘুরছে আর ছড়িয়ে যাচ্ছে ঘরের চারপাশে। ও কীটনাশক স্প্রে করছে কিন্তু পিঁপড়েগুলো মরছে না, বরং জলকণা দ্বারা ধৌত হয়ে পূর্ণ উদ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে ঘরময়। দেওয়ালে দেওয়ালে সার বেঁধে হাঁটছে। এমনকী আয়নার ভেতরেও জড়ো হয়েছে অসংখ্য পিঁপড়ে। ওরাও কি আশ্রয় খুঁজছে! এবার কি বেদখল হয়ে যাবে তাদেরই ঘরটুকু! ঠিক যেভাবে ভাইরাস ঢুকে পড়েছিল মানবদেহে! কোনো প্রাণীর দেহকোষ ছাড়া তো সে বংশবৃদ্ধি করতেই পারে না! শর্মিষ্ঠার খুব ভয় করছে। সে বিদ্যুৎকে ঠেলা দিয়ে বলে, ওঠো, জাগো, দেখো বিপদ তোমার ঘরের ভিতরে!
বিদ্যুৎ কোনো সাড়া দেয় না। আরও গুটিয়ে সুটিয়ে শুয়ে থাকে বিছানার ওপরে। এমনকি চাদরটা দিয়ে মুড়ে নেয় মুখ ও মাথা। মুহুর্মুহু মেঘের গর্জনে দুলতে থাকে চারপাশ। শর্মিষ্ঠার মনে হয় এবার কি তবে উল্টো দিকে ঘুরবে সভ্যতার রথের চাকা! সময় কি আবার ধীরে ধীরে চলে যাবে মানুষহীন পৃথিবীতে! অহংকারের পতন ঘটবে! সে আয়নার দিকে তাকায়, তার নিজের অবয়বটাই ঝাপসা হয়ে ওঠে। বরং খালি চোখে যা দেখা যায় না তাই যেন ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ভয়!
 
 
 
 
 
 

One thought on “ইরাবতী উৎসব সংখ্যা গল্প: অবয়ব । অনিন্দিতা গোস্বামী

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত