| 20 এপ্রিল 2024
Categories
উৎসব সংখ্যা’২০২১

উৎসব সংখ্যা কবিতা: ফুল্লকুসুমিত কথাগুলো । অনিন্দিতা গুপ্ত রায়

আনুমানিক পঠনকাল: < 1 মিনিট
 
এক
কেউ নেই, খাঁ খাঁ ধূ ধূ হাওয়া ছাড়া
অশরীরী নিশ্বাস ছাড়া
অথচ শিউলিতলা একা একা সেজে আছে—
আর কারো থাকা বা না থাকায়
তার কী বা আসে যায়!
 
সাদা ও কমলা ঘিরে সবুজেরা
স্বাধীনতা দিবস সাজায়।
 
দুই
পাপড়ির গড়নে যে ঈষৎ নৌকোভাব
দলমন্ডলের যে স্ফুরিত অপেক্ষা
আকণ্ঠ নীল হয়ে হয়ে কিছুটা যমুনা
কিছু বা বর্ষাকাল
সে আসলে খুলে রাখা দুই চোখ
পথের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঝরে পড়ছে হাওয়ায়, ঘূর্ণিময়
অগ্রাহ্য করে যতদূর যেতে পারো, যাও
 
তিন
কাঁটা ও পাপড়ি ইচ্ছেমত পাশাপাশি রাখো
ফলত চোখ এড়িয়ে যায় পাতার আড়ালে জমা জল
স্পর্শ-উন্মুখ উপচার সাজিয়ে যে নৈবেদ্য
তার অগোচরে কোনও বিগ্রহ নেই,
কেবল হাওয়া, অর্থহীন—
বোঝনি নিবেদন শব্দের পাশাপাশি অপমান থাকেনা কখনো।
বৃন্তের কৌনিকে একটা জীবন নিজেকে দানপত্রে লিখে দিয়েছিল। সামান্য প্রশ্রয়ে বিস্তারিত রঙ আর ঘ্রাণ খুঁজে নিলে
হয়ত তুমিও এ সত্য জেনে যেতে কোনদিন।
 
চার
 
গুল্মের স্বভাবে কিছুটা নমনীয়, রৌদ্রবিলাসী কিছু। মৃতপ্রায় কুঁড়িটির দিকে উপশম ঢেলে ঢেলে দুহাতের ছায়া। কোথাও শিকড়ে যদি এতটুকু প্রাণ থাকে, শিহরণ থাকে, তবে তার এই জন্মেরই কাছে ফুটে ওঠা থাক। পতঙ্গজীবনের কাছে ঋণ নতজানু মেনে নিই, শুকনো পাতার কাছে ক্ষমা চেয়ে হাওয়ায় উড়াই। ভাঙা ডালে সুতো বেঁধে ছুঁয়ে থাকি প্রাণপণ। অথচ শুকিয়ে ওঠা ডালপালা আর কাঙাল শিকড়ের দেখা হয় না কখনো।
তাই
গাছ ও ছায়ার বিচ্ছেদ এভাবেই সমাপ্ত হয় ।
 
পাঁচ
কেটে রাখা গাছের গোড়ায় সামান্য মধু ও দারুচিনি গুঁড়ো,শিকড় ডেকে আনে।
অথচ যে হাত তাকে কেটেছিল তার কোনও নবজন্ম নেই।
বাচালতার প্রান্তে দাঁড়িয়ে বৃক্ষলতার মৌনতার প্রতি দয়া হয়। খোদাই করা অক্ষরে নামাবলী সেজে ওঠে বাকলের বাদামী চাদর।
তুমি কি জানো না, সমস্ত জীবন ভুল শব্দের ভিতর পাক খেতে খেতে উচ্চারিত কথা সঠিক অর্থ অবধি পৌঁছতে পারে না?
ক্ষমা ও প্রেম অনুবাদ করতে করতে
শেষযাত্রার পথে এগিয়ে দেয় সেই কুড়িয়ে তোলা ফুল ও পাতা,
তাদের যদিও কোনও বর্ণমালা নেই।
 
 
 
 
 
 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত