Categories
ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: পাঁচটি কবিতা । চন্দনকৃষ্ণ পাল
আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
অন্ধকার
শুভেচ্ছা বাণী পেয়ে খুশি হতে পারি না যে
ভেতরে তো হাহাকার চলে-
ব্যানার আর ফেস্টুনে বন্ধুর হাসি ঝরে পড়ে
আমি জানি বিদ্রুপের হাসি,তোমরা জানো না!
ত্রাণের পোটলাসহ ক্যামেরায় হাসি মুখ দেখি
একজনে দশজন ত্রাণদাতা হওয়া কী হাস্যকর ,
তোমরা বুঝো না তা
স্থুল বুদ্ধি ধার করে নেতা হয়ে গেলে?
ভূড়িতে বুলিয়ে হাত নগদ ঢেকুর তোল লাল মাংসের।
তোমরাই ভবিষ্যত হবে?
আমি এই উজ্জল দিনটায়ও অন্ধকার দেখি!
রঙ দিয়ে রঙ মুছে ফেলি
ক্লিনশেভড মুখে আজ দাঁড়ির জঙ্গল দেখে বাকরুদ্ধ হই।
ঘাড় অব্দি নেমে আসা চুলে
আবাস বানিয়েছে পোকা মাকড়েরা,
তবু তুমি নিস্পৃহ রবে?
ভাবতে পারি না।
ভাবনায় এমন ছিলো না তো
রাজপুত্র ভেবে ক্যানভাসে দিয়েছি তো রঙ
উজ্জল আলোতে ছিলে ফেলে আসা দিনে
আজ দেখি অন্ধকারে তারার রোদন।
আমি বিমর্ষ হই
রঙ সব মুছে ফেলি অন্য রঙ দিয়ে।
শেষ কথা, শেষ কথা নয়
জোড়াতালি দিয়ে দিয়ে
সাজিয়েছি এ ভব সংসার।
এতে তুমি খুঁত ধরো,
ত্রুটি নিয়ে বিদ্রুপে সাজাও আসর
নিজেকে নিখুঁত ভাবা ভালো কথা নয়,
ত্রুটিহীন বললেও
ত্রুটি থেকে যায় জানি সকল সৃজনে।
শেষ কথা বললেও
শেষ কথা শেষ হয় না তো-
তারপরও ও শেষ থাকে
আমরা তা জানতে পারি না।
মানবী অথবা অন্য কিছু
নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাচ্ছ এই সকাল দুপুর রাত
কি দিয়ে করলে বশ?
ভেবে হই হতবাক আমি
এই প্রযুক্তি প্রাচুর্যের যুগে
কলুর বলদের মতো নয়,চোখ খোলা রেখেও সে
ঘুরছে চক্রাকারে কাঁধে রেখে কঠিন জোয়াল!
আহা,মানুষের কি পরিনতি!
তুমি মানবী হলে সত্যি কি করে সম্ভব এই
ভয়াল সমীকরণ?
ডাইনীর কনসেপ্ট বুঝা না বুঝার দায়
কাঁধে নিয়ে বলে যাই-
সত্যিই বোকা গাধা আছি,আজ অবধি-
যথার্থ শিক্ষা নিয়ে কবে যে মানুষ হবো
ভেবে ভেবে সারাদিন যায়………… ।
রাত যাপন,নীল ক্যানভাস নিয়ে
নীল আলোতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি বলেই
বেলকনিতে প্রতি রাতে নীল আলো জ্বলে
আমার সমুদ্র মানে আলোকিত বারান্দার রাতের শরীর
ঢেউ, শব্দ, ফসফরাসের আলো
সব কিছু নিয়ে করি রাত্রি যাপন।
তোমার গাঢ় ঘুম শব্দ আজকাল বিচলিত করে না আমাকে
আমার সমুদ্র রাত ভুলিয়ে ভালিয়ে রাখে জাগতিক যন্ত্রণা থেকে-
এই ভালো,
অন্যরকম এক ফেরারী জীবন
নীল আলো আর রাতের নিজস্ব শব্দ নিয়ে
দিন যাপনের চিত্র এঁকে যাবো নীল ক্যানভাসে।
কবি ও ছড়াকার
পেশায়:
উপ-পরিচালক(অর্থ)
শতভাগ ডিএনই (ডিএমসিএস) প্রকল্প
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।