| 29 মার্চ 2024
Categories
উৎসব সংখ্যা’২০২১

ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: ফেরদৌস নাহারের দশটি কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
 
 
 
 
 
|| শিখা ||
 
রেখে যাচ্ছ কিছু ছেলেখেলা
অস্ফুট মাতাল ক্রন্দন
নাম ধরে ডাকা দিন
ক্ষীণ মলিন প্রদক্ষিণ
হৃদপিণ্ডে জ্বালিয়েছে শিখা
একা একা অনিরুদ্ধ আঘাত
জলের জামা গায়ে
ভেসে যায় আগুনের দেশে
 
 
 
 
|| একা ||
 
আহারে সকালবেলা, অবেলা
বয়ে যাওয়া অনিঃশেষ খেলা
মাঝপথে ফেলে চলে যাওয়া
চলে গেল বলে প্রতীক্ষা
বিজনের দাবাখেলা সামান্য হাসে
তারপর সারারাত গান
তারপর উদ্বাস্তু পৃথিবীর টান
একা একা  একা একা
 
 
 
 
|| খেলা ||
 
জ্বালিয়ে আকাশ প্রদীপ
নিভু নিভু ঘুমের মাঝে
চরকা কাটছে সেই চাঁদের বুড়ি
রাতজাগা খেলা, এবেলা অবেলা
আঘাতের ভুল নক্সা আঁকে
চেয়ে দেখা ভুলে যায় যাকে
বেশ তো, এখানে বাতাস এলে
অন্যখানে পাঠিয়ে দিও তাকে
 
 
 
 
|| চিঠি ||
 
একটি চিঠি উড়ে এলো
তোমাদের দক্ষিণের ঘরে
যেখানে ডাকবাক্স ঝোলে
সেখানে ঘুমিয়েছে সে
সারাবেলা গলে যায় তাপে
শিথিল প্রাণায়াম শেষে
চিঠি দেবে এক গ্লাস পানি
ব্যাস, এইটুকু জানি
 
 
 
 
 
 
 
|| পাতা ||
 
ঝরাপাতা উড়ে যায়
লালরং অসংখ্য পাতা
পত্র মিতালী মাখা, অনেক কথা
হন হন হেঁটে যায়
সেদিনের ভোরবেলা
বুঝি এখনো জানেনি তাকে
রং থেকে লালটুকু নিয়ে
মাখলে নতুন করে নিজের দেহে
 
 
 
 
|| মেঘ ||
 
এসো। হাত ধরে রাখো
তামাবিল পাহাড়ের বৃষ্টি  এলো
শিমুল তুলোর মেঘ দ্রাঘিমায়
উড়ে আসে চেরাপুঞ্জি হয়ে
তুমি তো এমনই চেয়েছিলে
গল্পের শেষটুকু জানিয়েছে
চিরকাল সবটুকু বৃষ্টিময় নয়
মেঘরং প্রচণ্ড দাবদাহও হয়
 
 
 
 
|| ঢেউ ||
 
জাগাবে না কখনই আর
নিশ্বাস নিতে খুব ভালোলাগা
চুপি চুপি আলিঙ্গন থেকে
বেরিয়ে আসে অতিথি হয়ে
বেশ তো এবেলার অহংকার
ওবেলায় জানিয়ে দিয়ে যাক
ফুলেরা ফোটেনি বহুদিন
নবীন ঢেউয়ের বুক ফুঁড়ে
 
 
 
 
|| বাড়ি ||
 
এ তল্লাটের বাড়িগুলো ফাঁকা
কিছুটা একাকী ভারে একা
দেখার চোখ দেখছে তরঙ্গ সখা
যাদের হেঁয়ালি আজও কাঁপায় ভুবন
তাদের বুকের তিলে অজস্র চুম্বন
গোপন চাতক করে তোলে
কীইবা আসবে যাবে তাতে
ফাঁকা বাড়ি, একা থাকা দায়
 
 
 
 
|| জ্বর ||
 
জ্বর হলে ভালো লাগে
অদ্ভুত শস্যের গাঁটছড়া
টেনে নেয় বুকের কাছে
উষ্ণ রুমাল ভিজিয়ে হু হু জ্বর
থই-থই উথাল পাথাল
বাইরে তখন নামে দুপুরের রোদ
জ্বর দিয়ে অংক কষি
তাপমাত্রায় সব শোধবোধ
 
 
 
 
|| উল্কি ||
 
সেযাত্রায় ছিলাম কোনো
উন্মাদ পরিব্রাজক
নাগরিক পরিচয় মুছে
বেঁচে ছিলাম একটি চিহ্ন হয়ে
আ-দিগন্ত উল্কি আঁকা মুখে
দেখেছিলাম রক্তাক্ত টোটেম
আজ ভুলে যেতে পারো, তবু
মন ছিল একান্ত মগ্নগিরি স্রোতে
 
 
 

One thought on “ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: ফেরদৌস নাহারের দশটি কবিতা

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত