Categories
ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: চারটি কবিতা । লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
জিরো আওয়ার
বেজে যাচ্ছে ন’টা দশটা ; ছাপ ছাপ আঁকিবুঁকি কাটা-ঢালাই রাস্তার ধারে খিস্তি দিচ্ছে তেলেভাজা দোকানদার। গুঁড়ো গুঁড়ো মসলার টুকরো ছড়িয়ে দিচ্ছে রাস্তায়, কোথায় যে হারিয়ে যাচ্ছে নিদ্রাভাঙা ঝিঁঝিঁ গানের সুর-
বাতাসে আর্দ্রতার কারনে ঘামের ছাপ ফুটে উঠছে টিশার্টের গায়ে , ভেজারাতের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে – বিউটি পার্লারের মাথায় চাঁদটা মেঘে ঢাকতেই ছনছন শব্দ ; সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছে যৌনতার প্রলেপ দেওয়া মুখ
কতদূর মাঠ, কতদূর ফুল, অফুরান আবছা শরীর
কি দেব রাত্রিকে – নির্জনের পথটাই স্রোত নেয় জ্বালাময় বিশ্বের দু-চোখ!
ক্লোরোফিল স্রোতের দিকে
জল ভেসে যায় বাল্বের ভাঙা ভাঙা ইলেকট্রিক নিয়ে
দাদু বলতেন – এর নাম শিয়াল তাড়ানো বৃষ্টি
যদিও প্রচন্ড অন্ধকার থাকে মেঘ ঢাকা সন্ধে আর আমাকে অনুসরণ করে খোকনদার লিকার চা, ছিঁচ কাটা বেঞ্চি থেকে পিঠে পড়া গুড়োঁ বৃষ্টি ঝাড়তে ঝাড়তে হাত ভিজোচ্ছি, ভেজা মতবাদগুলি মনে আসছে কিছুতেই-
কোন পায়ের ছাপ নেই- গড়িয়ে যাওয়া ঘোলা জলে কংক্রিট ভাইরাস; অথবা আমি কীই বা ধারণ করতে পারি নিজের নগ্ন শরীরে, তবে কি গড়িয়ে যাবার কাল এসে দাঁড়িয়েছ ইলেকট্রিক পোস্টের নিচে
এসব এগিয়ে যাবার কাল – সমস্ত নোংরামো নিয়ে কাদা মুছতে চুমুক দিতে থাকি সুতীব্র আত্মহনন !
বামদিক ডানদিক
একটি নিবিড় সম্পর্কের কাছে অপেক্ষা করছে চৌমাথার রাত
সদ্য উৎকোচ দিয়ে যে কয়েকটা বাড়ি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে তাদের মাথায় কালো মেঘ , দুরান্তের কলঙ্কবাহ বাদুড়েরা উৎসুক , ঝাপটাচ্ছে আবছা ডানা ছুঁয়ে থাকা বাতাসের কান্নাকাটি
আমি তার নাইট বাল্বের দিকে তাকাই , সেখানে নীল স্বপ্নেরা বিছিয়েছে শিরা উপশিরার কেবল্ লাইন – পার্টি অফিসে পৌঁছে যায় নেশাখোর কাঁপনের অবাধ্য প্রলাপ –
কোথায় পৌঁছবে মৃত্যুঞ্জয় ; কোন বীজের ভিতর স্থায়ী যন্ত্রণার হাত ; সীমিত জীবনের সঠিক দৃষ্টিপথে তৈরি থাকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি – মিলনের নির্জন কালো পিচরাস্তাটি নির্বাক নদী হয়ে যায় –
একা জেগে থাকা গাছটা আমায় চেনে না – আমি তারই নামে শিমুল হয়ে যাই
অস্তিত্ব
দেয়াল বেয়ে ওঠা সাপের ছবিটাকে ভুলতে পারছিনা কিছুতেই , মাটির বিদ্যুৎ নিয়ে ছুঁয়ে ফেলতে চাইছে আকাশ ; চারদিকে একটা থমথমে সকাল অপলক সেই ঊর্ধ্ব পথের দিকে – হৃদয় চুপ হতে গিয়ে বাড়িয়ে ফেলছে ছটফটানি –
কে ? কোন সেই জন নীল হতে চায় ?
এক টুকরো জংলা ভাবনায় কিছু দুঃখ আর সম্বিত – ফিরে পাওয়া সবুজ বাতাস সামাল দিতে থাকে আস্ত একটা মানচিত্র –
বৃষ্টি নেই , কোন উঠোনের সামগান থেকে সামান্য দুলে ওঠা কনকনে একরত্তি নিঃসৃত সঙ্গমে বুকে মেলে ধরছি মাটির ধর্মপ্রাণ অস্থিমজ্জা
আমাকে নীল শরীরের অস্তিত্ব দাও