Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,puja 2021 bangla kobita rezauddin stalin

ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: একগুচ্ছ কবিতা । রেজাউদ্দিন স্টালিন

Reading Time: 2 minutes
মানুষতো একা নয়
 
মানুষতো একা নয়
তার পাশে ছায়া আছে
আত্মার প্রতিনিধি
 
 
গাছেরা নি:সঙ্গ নয়
নিরব দুপুরে ছায়ারা
কি সহিষ্ণু প্রতীক্ষা
 
 
পাহাড় হাঁটতে পারে
বাতাসের সাথে
পাথরের বুকের ভেতর
প্রতিধ্বনি থাকে
 
 
নদীও একলা নয়
তার সাথে ঢেউ হাঁটে দ্রুত পদক্ষেপে
নৌকার পাল তাকে টেনে তোলে
পূর্ণ ছায়ামাছ
 
 
সুখেরতো ছায়া আছে
আয়নার ডালে প্রজাপতি
কেবল দু:খ এক নি:সঙ্গতা
তার ছায়া দেখি না কোথাও
 
 
 
 
 
 
 
 
ফিরে যাই মাতৃগর্ভে
 
 
এক সময় আমি ছিলাম
বাতাসের ঘণ্টাধ্বনি
বাড়ি থেকে বহুদূরে বেজে উঠতাম
দিগন্তের পথে -পথে
শুধু শুনতো স্তব্ধতা
 
 
এক সময় পাহাড়ের প্রতিধ্বনি ছিলাম
শুধু শুনতো বালুকণা
আর সমুদ্রের নুড়ি
ধীরে ধীরে পরিণত হলাম পাহাড়ে
তারপর এক বিশাল পাথরের বই
বাতাস উল্টে দিতো ইতিহাসের পৃষ্ঠা
 
 
অভিজ্ঞতা আমাকে তাড়িয়ে নেয়
হয়ে উঠি চারণক্ষেত্রের তুচ্ছ ঘাস
মাড়িয়ে যায় ঘোড়সওয়ার প্রেমিক
কবি আর কত ক্রীতদাসের দল
 
 
ভাবি কেন হলাম না হাঁস অর্ফিয়ুসের
আগামেননের ঈগল
কিংবা জীবনানন্দের সন্ধ্যার সুদর্শন
রাজা সোলেমানের পিঁপড়ের হাসি
 
 
এক সময় নিজেকে বের করি
সময়ের খাপ থেকে- সম্পূর্ণ অচেনা
আর ফিরে যাই মাতৃগর্ভে
আবার জন্ম নেবো বলে
 
 
 
 
 
 
 
 
সংসার
 
 
সংসার শুরু করেছি
কত আনন্দ
চাই লক্ষ কোটি টাকা শেষ না হওয়া
গাছের পাতা
রথ ও প্রাসাদ
প্রেম আর অতৃপ্তি
কি নেই আমি বুঝি
স্বজনের অভিযোগ দানাবাঁধে
টেবিলের গ্লাসে
কিছুই দিতে পারিনি- কি করে দেবো
আত্মসম্মানের ভয়ে লড়াইয়ের পোষা
মোরগ বিক্রি করি না
সবাই দেখে ছাতাহীন
বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে
লড়াইয়ের মোরগ হয়ে যাচ্ছি
 
 
আমার পদক্ষেপ প্রতিবেশীরা
কি দেখে ফেলছে
অভিযোগ -অপ্রাপ্তি
 
 
আর যখন কোনো আশা নেই
তখনই আবর্জনার ভেতর
জগতকে চিনে ফেলি
যেন আমি এক পৃথিবীর নিয়ামক
সংসারের ছিন্নভিন্ন স্বপ্ন জোড়া লাগাবার আলো আমার মুঠোয়
 
 
কিন্তু কোনো শামাদান
সহ্য করে না আগুন
সংসার সহ্য করে না স্বপ্ন
 
 
 
 
 
 
 
 
 
অংশীদার
 
 
চিতাভষ্ম বেঁধে রাখে দেহ
আগুন উন্মত্ত রাগে
ছিঁড়ে ফেলে মৃত্যুচিহ্ন
 
 
শূন্য ঘরে মোমবাতি
স্মৃতিগ্রস্হ-অর্ধনিমিলিত
অনুপস্থিতি কথা বলে-
ফিরে আর আসবে না কেউ
 
 
কিন্তু কেন জানি ফিরে আসে
ছায়া আর ঘটনার অনুপরমাণু
পৃথিবী কাউকে ছাড়ে না কখনো
 
 
স্তব্ধতা সেও বিরহের অংশীদার
ফিরে আসে অশ্রুকণা হয়ে
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
বজ্ররাণী
 
 
বজ্ররাণী বালা,
কষ্টে ঢাকা পড়েছে তার লাবণ্য প্রাণঢালা।
 
জীবন যখন ঝিঁঝিঁ পোকা আরশোলাদের সাথী,
বজ্ররাণী তখন জ্বালেন দুচোখে মোমবাতি।
ক্ষুধার কি নাম জানেন তিনি ভিক্ষা তবু নয়,
দুহাত ভরা লতা পাতা রয়েেছে সঞ্চয়।
লোকতো জানে বজ্ররাণী বজ্রভরা হাতে,
শাসন করেন দেবদেবীকে সকাল ও
সন্ধ্যাতে।
অনেক আছে শস্যভরা আকাশে চাঁদতারা,
তাদের কাছে রাণী এখন খড়কুটো নড়নাড়া।
ক্লান্তি তাকে মাফ করে না ঘোরায় পথে পথে,
কে নেবে তার লতাপাতা ছুটছে যারা রথে।
বজ্ররাণী বস্ত্রহীনা লজ্জা হাতে ঢাকে,
কেমন লাগে বঙ্গদেশে দেখতে এমন মাকে।
 
বজ্ররাণী বজ্ররাণী তোমার ভাঙা ঘর,
ঝড় বাতাসে যতই কাঁপে হৃৎকমল
অন্তর;
পড়বে না তা- জটা তোমার শিবের চেয়ে নীল,
বুকের ভেতর খাক করে দেয় প্রতিবেশির খিল।
কার ইঙ্গিতে মানুষ এমন দরিদ্র ও হত্,
দীক্ষা দাও বৃক্ষ তাদের করুক প্রতিহত।
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>