| 13 নভেম্বর 2024
Categories
উৎসব সংখ্যা’২০২১

ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: শোয়াইব জিবরানের কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
নিদান
 
পৃথিবীর যাবতীয় অঘটন ঘটিয়ে
আজ তোমার পায়ের কাছে বসে আছি
ভন্ড, তপস্বী, জবুথুবু বিড়াল।
 
সহস্র ইঁদুর হত্যার অনুশোচনায়
নতজানু।
 
একমাত্র তোমার করুণার হাতই
এখন আমার একমাত্র নিদান।
 
 
 
 
 
দুরের নীল হয়ে আছো
 
 
 
 
দূরের নীল হয়ে আছো। সবুজ পাহাড়
 
বৃক্ষ ছিলে।
 
আজ দূরত্ব ধূ ধূ মাঠ
সম্পর্কের মাঝখানে।
 
অথচ সে সকল বর্ষায় তুমি ভিজে এলে
আমাকে ছুঁতে দিতে
সে সকল বসন্তে ফুটলে নতুন ফুল
জাগলে নতুন পাতা
 
ছুঁতে দিতে, তোমার সবুজ।
 
আজও আমি ছুঁই
স্মৃতি আর স্বপ্নের ভেতর
দূরে অন্ধকার হয়ে জেগে আছো
 
স্বপ্নে, স্মৃতিতে।
 
  
 
 
 
পেঁচা
 
একটি পেঁচা প্রায় রাতে  ডাকে তোমাদের বাড়ির জলাঙ্গলায়।
 
তুমি কেঁপে ওঠো অজানা অশংকায়
থু থু দাওবুকে
আরভাবো
সংসারে কোনো অমঙ্গল এলোবুঝি নেমে!
 
তোমার সংসার অমনি ভরে উঠেছে আকাশের তারারাজির মত
কোথাও কোনো অসুখ অন্ধকার নেই।
 
তবু তুমি মাঝরাতে ঘুম ভেঙে ভাবো
কেন পেঁচা ডাকে তবে?
 
সেইক্ষণে তুমি একটু একটু ব্যথা পাও
গভীরে কোথাও
চেনা চেনা মনে হয় পেঁচার কণ্ঠখানি
 
আর আমি এইখানে এই শব্দে
নিশি ডাক লিখে চলি। 
 
 
 
 
সইবাস
 
নিঃসঙ্গতা আমার সই। কালো আর ক্লান্তি মান। তাকে নিয়ে ডেরা গহিন গুহায়-ডিহাং পাহাড়েতে, সেইখানে আমাদের বাস। পাশে মনু নদী বয় সইসই বাতাস নিয়ে। বাতাস কন্যার সখি হয়, তিনি হাহাকার। রাতে আসেন হাতের বালা নিয়ে। দুইসখি প্রেমালাপ সারারাত পাশে আমি জবুুথবু একা একা বই কম্পন আর পিঁচুটি নিয়ে।
 
দেহের ভেতরশুয়ে থাকি-গহিনপরবাসে এ কঠিন দুঃখদিনে আত্মীয়রা কই? তারা ছিল বাতাস বাসনা বিদ্যুৎরেখা, জলের ওপারে সাড়ে সাত’শ ভাই। আজ আর কেউ নাই, অজীণকুর্তা, স্তিমিত লণ্ঠন আর পঞ্চভাই।
 
পাশার চালে হেলে দুলে গহিন বনে দ্যাখ বনবাসে যাই।
 
 
 
 
শিষ্যবচন
 
ট্যাবু দিয়েছেন গুরু, প্রসাদ ভাগ না দিয়ে কেমনে খাই। ভিক্ষা মাগি দ্বারে দ্বারে, দুগ্ধ বাটি উল্টো করে দাও। রমণীরা বেঁধেছে স্তন কাঁচুলিতে, গুরু তোমার ভাগ কোথা পাবো?
 
এতোদিন লতাপাতা, আকন্দকষ, গাভীদুগ্ধ ফেনা খেয়ে বেঁচেছি। আজ গভীর পরিখায়। চক্ষু দু’টি কই? নাম ধরে ডাকো গুরু, নাম ধরে ডাকো, তোমার রাস্তা যেনো দেখিতে পাই।
কী হবে গো আমার, কে তরাবে পার, লকলকে অগ্নিমালার মাথায় ঝুলবে সুতো এই নাকি পথ, মহিষ পিঠে ফিরবেন মাতা, পুত্র তার আঁচলে কি উপায়ে পাব বলো ঠাই?
গিয়েছিলে চিল্লায় অনুপস্থিতির সকল দায়ভার আমায় দিয়ে। পত্নি তোমার এইকালে রজঃশ্বলা হলো। করিনি ভোগ, রীপু স্বমেহনে ভুলেছি।
 
এইবেলা শুধু নাম ধরে ডাকো গুরু, অন্ধ আজ পড়ে আছি গভীর পরিখায়।
 
 
 
 
 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত