ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: এসেছ হেমন্তকাল? । তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়
১) হিম
আমার ধৌত সন্ন্যাসজীবন নিয়ে বসে আছে একটি মৌমাছি!
তার মুখের দু’পাশে ক্ষয়ে যাওয়া হিম।
এমন হিম দেখেছিলাম
প্রাগৈতিহাসিক শীতের কাছাকাছি!
শৈশবের মাঠে, ঘাসে-
মায়ের শাসনের মতো ঘুমিয়ে ছিল, উদাস।
২) ছাতিম
পায়ের পাতার থেকে বেশি অত্যাচার সহ্য করে হৃদয়।
কোথায় থমকাবে,
আন্দাজ করতে পারে না-
চোখ পাল্টানোয়,
হাতের নির্দেশে।
কেবল ছাতিম ফোটার মুহূর্তেই
এরা দু’জন একসঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ে।
৩) প্রদীপ
পোকারা জানে,
শিখাটি উঁচুতে গেলেই
তার মৃত্যু নৃত্যরত হবে…
মৃত্যুর কার্নিশে ঝুলে থাকবে
কালো হয়ে যাওয়া প্রদীপ!
ওইরকম প্রদীপ গৃহিণীরা ঘষেমেজে পরিষ্কার করেন
দীপাবলির প্রাক্কালে।
৪) আতসবাজি
আকাশে আলপনা দিতে গিয়ে
অবশ্যম্ভাবী হয়েছে স্খলন।
সরে গেছি।
নরম রোদের কাছে পেতে দিয়েছি পিঠ।
শিরদাঁড়া বেঁকে যাওয়ার আগে
এই পিঠ যেন মাটির কাছাকাছি থাকে।
৫) উৎসব
পরপর দাঁড়িয়েছে ওরা সবাই!
যেন আর্ত,
যেন ঘরছাড়া,
যেন আর কিছুই হারাবার নেই।
পরপর দাঁড়িয়েছে ওরা সবাই।
ধান আছে।
দূর্বা আছে।
চন্দনপিঁড়ি,
নরম রঙের ফুল।
উৎসব, তুমি কি এসেছ?
এসেছো, হেমন্তকাল?

জন্ম- ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬। গত বছর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়েছেন। ২০১৫ থেকে সক্রিয়ভাবে লেখালিখির সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের নানা ছোটোপত্রিকায় লেখালেখি করেন। ২০১৮ তে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রথম বই ‘ঘুম দাও ঈশ্বর’, পেয়েছেন ‘সোনাঝুরি কবি সম্মান-২০১৯’।