Categories
ইরাবতী উৎসব সংখ্যা: তিনটি ছড়া । সুকন্যা প্রাচী
আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট ![সুকন্যা প্রাচী](data:image/svg+xml;base64,PHN2ZyB4bWxucz0iaHR0cDovL3d3dy53My5vcmcvMjAwMC9zdmciIHdpZHRoPSIxMDAiIGhlaWdodD0iMTAwIiB2aWV3Qm94PSIwIDAgMTAwIDEwMCI+PHJlY3Qgd2lkdGg9IjEwMCUiIGhlaWdodD0iMTAwJSIgc3R5bGU9ImZpbGw6I2NmZDRkYjtmaWxsLW9wYWNpdHk6IDAuMTsiLz48L3N2Zz4=)
একটা দেশ
এক দেশে এক মেয়ে ছিল, থাকত ঢাকার বাসায়
দিন রাত্তির বসেই থাকে, মা- টা কেবল শাসায়
দেখত না সে আকাশটা নীল, খুব সাধারণ কথা
দেখত না সে গাছে পাখির উদ্ধত এক মাথা;
জানত না সে ঠাণ্ডা হাওয়া ডান থেকে যায় বামে
চারদিকেতে ঘিঞ্জি বাসা, কাজ নেই তাই ঘামে।
বুঝত না সে পাহাড় থেকে মেঘকে যাবে ধরা
শুনত না সে শালিকগুলোর কিচিরমিচির করা।
এই না দেখে এক জাদুকর, মায়া হল তার
সেই মেয়েকে সাত সমুদ্র করিয়ে দিল পার
পাঠিয়ে দিল সেই দেশেতে, পাহাড় যেথায় আছে
কাকাতুয়ার দল যেখানে বাসা বাঁধে গাছে
সেখানে সব ছেলেমেয়ে উড়ুউড়ু মত
তাদের সাথে সেই মেয়েটা দৌড়ে বেড়ায় কত,
জানলা দিয়ে দেখা যাবে নীলচে উপত্যকা
হাওয়ার সাথে যুদ্ধ করে দিচ্ছে তাকে বকা
লালচে-হলুদ ম্যাপেল সারি ঝরিয়ে দিল পাতা
সবটা দেখে উঠল ভরে নিজের মনের খাতা।
শীত
তাপের সাথে আড়ি মেরে শীত বসেছে জেঁকে
ঘাসের ওপর বরফ কণা, দেখছি নিজের চোখে
হুহু মতন ঠাণ্ডা হাওয়ায় শরীর যাবে বেঁকে
কোন জ্যাকেটের সাধ্য এমন দুরন্ত শীত রোখে?
ম্যাপেলগাছের শীর্ণ শরীর, নেই তো সবুজ পাতা
সেই সময়ই শীত বাবাজির চলে আসার কথা
পাহাড়চূড়া যায় না দেখা, কুয়াশাতেই ঢাকা
আকাশ- বাতাস, জল- জঙ্গলে শীতের ছবিই আঁকা।
বাঁদর বিস্কুট
এক যে ছিল ছোট্ট ছেলে, পেটুক ছিল বড়
খাওয়ার যোগান দিতে বাবা হল মরমর,
ভাত আর মাছে দারুণ জমে, মিষ্টিখানাও বেশ
পাথর গিলে খেতেও যে তার নেই কো কোন ক্লেশ!
একদিন এক জাদুর বুড়ো এলো তাদের গ্রামে
ডান হাতে এক লম্বা লাঠি, ময়লা ঝুলি বামে
সেই ঝুলিতে আছে পোলাও, মণ্ডা মিঠাই সব
তাই না দেখে গ্রামবাসীদের জিভ করে লকলক!
দুই মিনিটে গেল সবাই হাপুস হুপুস করে-
শেষ করে সব- রইল না কো কিচ্ছুটি আর পড়ে
পেটুক ছেলে কাঁদছে কসে, পেট করে কুটকুট
এমন সময় পড়ল চোখে এক টিন বিস্কুট!
যেই না পেটুক কুড়মুড়িয়ে একটা দিল মুখে
মনটা যে তার ভরে গেল স্বর্গ সমান সুখে
তার সে খুশির বার্তা দিতে খুলল নিজের মুখ
কথা তো না, গলা দিয়ে আসল কেবল ‘উক’!
লেজখানা তার বেরিয়ে এলো দিতে একটা লাফ
বাদামি লোম উঠল নেচে যখন দিল ঝাঁপ,
‘উক উক উক’ ধ্বনি শুনে গ্রামের লোকে হাসে
বাঁদর হওয়া পেটুক ছেলে চোখের জলে ভাসে!
(লীলা মজুমদারের হুলিয়া গল্প থেকে বাঁদর বিস্কুট নামটি নেয়া হয়েছে )
![সুকন্যা প্রাচী](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2019/11/Shukanya_Photo-150x150.jpg)
বয়স-১৩
ঢাকার উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির বিদ্যার্থী। চার বছর বয়স থেকে লেখার হাতেখড়ি। বাংলাদেশ অমর একুশে
বইমেলা-২০১৮ সুকন্যার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাতরঙা ছবি’ প্রকাশিত হয়।