উৎসব সংখ্যা বিশেষ রচনা: বিলাতি নারীদের ভারত দর্শন

Reading Time: 11 minutes

”ভারত পৌছতে হাতে এখনা অনেক সময় বাকি। এদিকে কেপটেন মশাই জানিয়ে দিলেন আর কয়েক ঘন্টা পরই আমাদের জাহাজটি দক্ষিন আটলান্টিকের সেন্ট হেলেনায় পৌঁছে যাবে। সেখান থেকে খাবার পানি আর কিছু শুস্ক খাবার- দাবার বোঝাই করে আমাদের জাহাজ আবার সমুদ্রে ভাসবে ভারতের ঠিকানায়। আহা কি আনন্দ! বন্দরের দেখা মিলবে তাহলে! ভারত! নামটা উচ্চারণ করলেই গায়ে কেমন জানি শিহরণ জাগে! না জানি দেশটা কেমন? কিন্তু এখন কি করি? হাতে তো সময় অনেক! জাহাজের ডেকে উঠলে কেমন হয়? আকাশের গায়ে ফুটে উঠা তারাগুলো যেন আমাকে হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। আহা! প্রকৃতি কতই না সুন্দর। খুব ইচ্ছে করছে এই জাহাজের ছাদে খোলা আকাশের নীচে একটু নাচতে। কিন্তু কে নাচবে আমার সাথে? কেউ কি আছে?” কথা গুলো ডাইরিতে লিখেছিলেন এনি উইলসন নামের এক বিলাতী নারী যিনি ১৮৯০ সালে লন্ডন থেকে ভারতের মাদ্রাজের উদ্দেশ্যে জাহাজে চড়ে ছিলেন তার স্বামীর সাথে দেখা করতে।

ভারত ততদিনে ইউরোপের কাছে বেশ জনপ্রিয় আর লোভনীয় একটি নাম। বিশেষ করে ১৫৯৯ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গোড়াপত্তনের পর থেকেই ভারত থেকে জাহাজ বোঝাই পণ্য সামগ্রী নিয়ে ইউরোপের বাজারে চড়া দামে বিক্রি করা ছিল মত রিতিমত লোভনীয় একটি বিষয়। শুধু ব্যাবসায়িক লগ্নি নয় সেই সাথে রয়েছে ভারতের সম্পদের প্রতি ইউরোপিয়ান বনিকদের লোভাতুর চোখ। যে কোনভাবে ভারতের বাজার দখল করা চাই। এ কথা ঠিক যে ভারত সে সময়ে অন্য সমসাময়িক দেশগুলোর তুলনায় বেশ বড় একটি রাজ্য। কিন্তু বড় রাজ্য হলেও ভারতের মুঘল শাসন ছিল তুলনামূলকভাবে দুর্বল। ”প্রথমেই বুঝতে হবে যে মুঘল সাম্রাজ্য কোন শৃঙ্খলাবদ্ধ শাসন ছিল না। তারা এমন কি তাদের সমসাময়িক শাসক অটোম্যান এবং পারস্য শাসকদের মতও সংঘবদ্ধ ছিল না। রোমান শাসকদের কথা বাদই দিলাম” (ক্লাইভ অব ইন্ডিয়া: এ পলিটিক্যাল এন্ড সাইকোলজিক্যাল এসে, নীরদ চন্দ্র চৌধুরী, বেরি এন্ড জেনকিনস লিমিটেড, ১৯৭৫)।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী সে খবরটি জানতো এবং তারা এর পূর্ণ ব্যবহার করেছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কুইন এলিজাবেথ ওয়ান জাহাজটির একচেটিয়া ব্যাবসা ছিল রীতিমত চোখে পরার মত। এ ব্যবসার বিস্তৃতি ছিল ইংল্যন্ড থেকে শুরু করে পূর্ব কেপ অব গুড হোপ পর্যন্ত। অন্যদিকে ইউরোপীয় বাজারে ডাচ বনিকদের উপস্থিতি ছিল অপেক্ষাকৃত বেশি মজবুত এবং নিয়ন্ত্রিত। সেক্ষেত্রে বিলেতের পক্ষে ডাচ বনিকদের সাথে টেক্কা দিয়ে খুব সহজে ব্যবাসা পাতি করা সহজ কোন ঘটনা ছিল না। সে কারণেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যে অনেক কূটচাল এবং সেই সাথে মোগলদের অনুকম্পা পেতে বেগ পেতে হয়েছিল বৈকি! বিভিন্নরকম ক‚টকৌশল এবং যুদ্ধ বিগ্রহের পর শেষ পর্যন্ত ভারতের বিশাল বাজার চলে আসে বিলেতিদের করতলে। সেই থেকেই শুরু। ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানীর যাত্রা থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ঔপনিবেশিক ভারতে স্থায়ীভাবে জীবন যাপন করতে বিলেতিরা তাদের স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেন। শুধু বিলেতি পুরুষ নন, সেই স্বপ্নের মোহে প্রতিনিয়ত আচ্ছন্ন ছিলেন বিলেতি নারীরাও। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে বিলেত থেকে ভারতে আসতে শুরু করলেন। তাদের কেউ ভারতে এলেন সেখানে তাদের কর্মরত স্বামীর সাথে স্থায়ীভাবে সংসার যাপন করতে, কেউ ভারতে এলেন কোন ধনবান পয়সাওলা স্বামীর খোঁজ পেতে, কেউ মিশনারির কাজে জাহাজে চড়ে বসলেন, কেউ হাসপাতালের নার্স হয়ে, কেউ ভালো একটি চাকরীর সন্ধানে আবার কেউ কেউ উন্নত জীবনের আশায় নিজ দেশ ছেড়ে ভারতে পাড়ি জমালেন। দেখা যায় ঔপনিবেশিক ভারতে বিলেতি নারিদের জীবন যাপন পরবর্তীতে ভারতের সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম এবং প্রধান একটি অংশ হয়ে পরে।

”নথিপত্র অনুযায়ী জানা যায় ১৬১৭ সালে মিসেস হাডসন এবং তার পরিচারিকা ফ্রান্সেস ওয়েব প্রথম দুই বিলাতি নারী ভারত এসেছিলেন।” ( ওমেন অব দি রাজ: দি মাদারস, ডটারস, ওয়াইভস এন্ড ডটারস অব দি বৃটিশ এমপায়ার ইন ইন্ডিয়া। লেখক মারগারেট মেকমিলান, রেনডম হাউস ট্রেড, ২০০৭)। তারা দুজনেই ভারতে জন্মগ্রহনকারী আরমেনিয়ান মহিলার সাথে ভারত আশার পরিকল্পনা আটেন। মজার কথা হল পরিচারিকা ফ্রান্সেস ওয়েব ভারত আসার পথেই জাহাজের এক নাবিকের প্রেমে পরেছিলেন। এই নিয়ে সেই সময় বেশ মজার মুখরোচক খবর বাতাসে বেড়াতে শুরু করে। তবে পরিসংখ্যান করলে দেখা যায় যেসব বিলাতি নারীরা ভারতে এসেছিলেন তাদের মোটামুটি সবার উদ্দেশ্য ছিল ভারতে চাকুরীরত স্বামীদের সঙ্গে বসবাস করা। পাশাপাশি উন্নত জীবনের আশায় যেসব ইউরোপিয়ান বনিকরা ভারতের বন্দরে তাদের ভাগ্যকে যাচাই বাছাই করতে এসেছিলেন তাদেও অনেকেই স্থানীয় ভারতীয় রমণীদের কে বিয়ে করে সংসার পেতেছিলেন। অনেকেই ভারতীয় রমণীদের বিয়ে করে তাদেরকে খৃস্ট্রান ধর্মে দীক্ষিত করেছিলেন।

বলা প্রয়োজন যে বিলাতি নারীদের কাছে তথ্যটি অজানা ছিল না। তাদের অনেকেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী জাহাজে চড়ে, কখনো মাছ ধরার জাহাজে অথবা বিভিন্ন উপায়ে ভারতে আসতে শুরু করেন। অনেক বিলাতী নারীরা ভারতে এসে বিভিন্নরকম অনৈতিক কাজেও জড়িয়ে পরেছিলেন। ১৬৭৫ সালে লন্ডন থেকে বোম্বের ডিপুটি গভর্ণরকে লেখা এক চিঠিতে আমরা তারই আভাস খুজে পাই। ”ভারতে আসা আমাদের কিছু বিলাতি নারীরা বিভিন্ন রকম সামাজিক স্ক্যানডালে জড়িয়ে পরেছে এবং তা আমাদের জাতির জন্য কলংক বয়ে এনেছে। আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি তাদের কে যথাযথভাবে সতর্ক করে দিন এবং সভ্যভব্য হয়ে ভদ্র খৃষ্টানের মত চলতে তাদের কে বলুন।” ( ওমেন অব দি রাজ: দি মাদারস, ডটারস, ওয়াইভস এন্ড ডটারস অব দি বৃটিশ এমপায়ার ইন ইন্ডিয়া। লেখক মারগারেট মেকমিলান, রেনডম হাউস ট্রেড, ২০০৭)

কথা হল সেই সময়ে ঔপনিবেশিক ভারতে বিলাতি নারীদের কদর কেমন ছিল? ১৯৯৫ সালে মারাঠি ভাষার লেখক এবং সাহিত্যিক কিরন নাগরকার এর একটি উপন্যাস ’রাবন এন্ড এডি’ তে ঔপনিবেশিক ভারতের বিলেতি নারীদের একটি চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি উপন্যাসে চরিত্রের প্রয়োজনে উল্লেখ করেছেন, ”পৃথিবীতে দুরকম জাতির মানুষ রয়েছে। প্রথমতটি হল যারা ইংরেজি ভাষা জানেন আর দ্বিতীয়তটি হল যারা জানেন না। ইংরেজি একটি মন্ত্র, মহামন্ত্র। এটি একটি উন্মক্ত সাগর। এটা শুধু নতুন দরজা উন্মুক্ত করে না বরং নতুন বিশ্বকে উন্মক্ত করে যেখানে আপনি একটি বিশ্ব থেকে আরেকটি বিশ্ব অতিক্রম করতে পারবেন। যদি ইংরেজি জানা থাকে আপনি কোন বিলাতী মেয়েকে নাচের জন্যে আমন্ত্রন জানাতে পারেন। ইংরেজি জানা থাকলে কোন ইংলিশ রমণীকে ঠোটে চুমু খেতে পারবেন।” বিলাতি নারীদের সামাজিক মর্যাদা ভারতের মাটিতে যে অনেক বেশি ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বিলেত থেকে জাহাজে চড়ে সোজা ভারতে চলে আসা এত সহজ ঘটনাও না। প্রথম কথা হল সেকালের জাহাজগুলো ছিল কাঠের তৈরি। সে সময়ে সমুদ্রের ঝড়ের কবলে পরে দুর্ঘটনা ঘটা ছিল খুব সাধারণ একটি বিষয়। পাশাপাশি দক্ষিন আটলান্টিক এবং ভারত মহাসগর ঝড়ের জন্যে সেই সময়ই খুব বিক্ষাত ছিল। একবার ঝড়ের কবলে পরলে আর রক্ষা নেই। ১৮৩০ সালে ’দি রেভারেন্ড হবার্ট’ জাহাজ এর রেকর্ডে টুকে রাখা তথ্য থেকে সে খবরটা জানা যায়।   

”আমাদের মাঝে তিনি ছিলেন একমাত্র বিলাতী নারী যিনি প্রতি মুহুর্তেই থেকে থেকে ভয় পাচ্ছিলেন। যখনই আমাদের জাহাজ প্রচন্ড ঝড়ে দোলে উঠছিল তখনই তিনি ভয়ে চিৎকার করছিলেন। সে ঝড়ে জাহাজের যাবতীয় আসবাবপত্র উলট-পালট হয়ে যায়। জাহাজে রক্ষিত কামান গুলো ভিজে নষ্ট হয়ে পরে।” ইভেন কাউন্টার নামের একজন নারী পর্যটক অনেকটা একই রকম অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা দেন।তার ভাষায়, ”অতিরিক্ত পরিমানে ভয়াবহ!” এদিকে রাত নামে। ঝড়ের বেগ বাড়তে থাকে। ইভান কাউন্টারের কক্ষটি ছিল জাহাজের কেপটেনের কক্ষেরে ঠিক পাশেই। হঠাৎ করেই ঝড়ের তান্ডবে কাউন্টার মেঝেতে পরে যান। জাহাজের পাটাতন তখন পানির নীচে। ঝড়ের ঝাপটায় তিনি মেঝেতে পানিতে সাঁতার কাটতে থাকেন এবং মূর্ছা যান। পরবর্তীতে জাহাজের কেপটেন এসে তাকে উদ্ধার করেন। (ওমেন অব দি রাজ: দি মাদারস, ডটারস, ওয়াইভস এন্ড ডটারস অব দি বৃটিশ এমপায়ার ইন ইন্ডিয়া। লেখক মারগারেট মেকমিলান, রেনডম হাউস ট্রেড, ২০০৭)

বিলেত থেকে ভারতে যাত্রাপথ নূন্যতম সময়সীমা ছিল দু মাস। তবে প্রতিকুল আবহাওয়া এবং জাহাজ বিকল হয়ে পরলে সেই সময়সীমা ছয় মাসও হয়ে যেত। কখনো হাওয়া জাহাজের বিপক্ষে কাজ করলে বিশেষ করে আফ্রিকার পশ্চিম উপকুল এলাকায় জাহাজ ব্রাজিল পর্যন্ত যেয়ে সেখান থেকে ঘুরে কেপ অব গুড হোপে আসতে হত। সবকিছ্ইু নির্ভর করতে হত হাওয়ার জোরের উপর। বাতাস জাহাজের প্রতিকুলে থাকলে এতসব চিন্তা করতে হত না। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে এই জাহাজ গুলো ছিল নোংরা এবং বসবাসের অযোগ্য। যারা জাহাজে কেবিন পেতেন তাদের কথা অবশ্য আলাদা। সেই ভাগ্যবানরা সবাই ছিলেন সমাজের উপর তলার মানুষ। সাধারণ চাকুরে বা সৈনিকদের জায়গা হত জাহাজের ডেকের উপর। তাদেরকে হিসেব করে দুই মগ নোনা পানি দেওয়া হত। এক মগ পানি দিয়ে তারা টয়লেটের কাজ সারতেন আর আরেক মগ পানি বরাদ্ধ ছিল পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্যে। মিসেস শেরওড উনিশ শতকের প্রথম দিকে তার সেনা কর্মকর্তা স্বামীর সাথে ভারত ভ্রমনের একটি বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন জাহাজের ডেক ঝড়ের পানিতে এতই নোংরা ছিল তাকে শেষপর্যন্ত কামানের উপর পেতে দেওয়া কোন রকম একটি শক্ত বিছানায় রাত কাটাতে হয়েছিল। বিলেত থেকে ভারতে যাওয়ার এত প্রতিকুলতার কথা জানা থাকলেও বিলেতের নারীরা ভয়ে কখনো ভারত ভ্রমনের চিন্তা থেকে পিছিয়ে থাকেন নি। কারণ ভারত তাদের প্রতিনিয়ত হাতছানি দিয়ে ডাকছে!!

ভারতের পথে পথে…

ঔপনিবেশিক ভারতের সমসাময়িক সময়ে বিলেতের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার দিকে একটু তাকানো যাক। এ কথা মানতে হবে যে উনিশ শতকের গোড়ার দিকে বিলাত ছিল গোটা পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো মাঝে অন্যতম একটি দেশ। শিল্প বিপ্লব, সভ্যতা, কারিগরি প্রসার, কল-কারখানা সবমিলিয়ে ইংল্যান্ড ছিল সেই সময়ে রমরমা একটি দেশ। বিশাল সম্পদের মালিক এই বিলেতিদের নাকটাও ছিল সমান তালেই অনেক উচু আর লম্বা! বিলাতিদের দৃষ্টিতে সেই সময় ভারত নিতান্তই গরীব একটি দেশ। বিলাতিদের ধারণা যদিও দেশটায় সম্পদের ছড়াছড়ি তারপরও দেশটায় ধর্ম কুসংস্কারে ভরা। আর এই দেশের মানুষগুলো আদব-কায়দা জানে বলেই চলে। বিলাতি নারী মানেই সেখানে মেম সাহেব যেখানে ভারতীয় স্থানীয় নারীরা সেই মেমসাহেবদের খেদমতে সদাই ব্যাস্ত। বিলাতি পুরুষ মানেই কর্মস্থল থেকে বাড়ি তারপর তাদের সমগোত্রিয়দের সাথে ক্লাবে চুটিয়ে আড্ডা। বলার অপেক্ষার রাখে না যে সেই আড্ডায় অংশ নিতে পারতেন শুধুমাত্র উচ্চশ্রেণীর ভারতের রাজা-মাহারাজ বা সেইরকম সমকক্ষের মানুষজন। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিলাতি পুরুষদের নজর থাকতো কোন বিলাতী নারীদের উপরই। কিন্তু ঔপনিবেশিক ভারতে বিলেতি পুরুষ এর তুলনায় বিলেতি নারীর সংখ্যা ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। যদি ভালো যুতসই কোন বিলাতি কন্যা ভারতে এসে পৌছেন সেই আশায় বিলাতি পুরুষরা বিলেত থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে জাহাজের দিকে হা করে অপেক্ষার প্রহর গুনতেন। কেউ কেউ স্থানীয় ভারতীয় নারী নিয়েই সুখি হওয়ার চেষ্টা করতেন। এদের কেউ কেউ তাদের বিয়ে করেছিলেন তবে বেশির ভাগ বিলাতিরা ভারতীয় নারীদেরকে উপপত্নী হিশেবেই রেখেছিলেন।


Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com


আগেই উল্লেখ করেছি বিলেত থেকে সেই সময়ে ভারতে যাওয়া এত সহজ ছিল না। তার উপর যদি তিনি নারী হন তাহলে তো কথাই নেই। সেই সাথে রয়েছে জাহাজের কিছু নিয়ম কানুন। কেবিন পাওয়াটা রিতিমত কঠিন ব্যাপার। শুধুমাত্র বড় কর্তা বাবুরাই কেবিনের জন্যে আবেদন করতে পারতেন। উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের স্ত্রী বা কোন হোমরা-চোমড়া ডিউকরাই কেবিনের যথার্থ প্রার্থী। আর বাদ বাকীদের অবস্থা ছিল খুব নাজুক। মিসেস এলিজা ফে আঠার শতকের দিকে ভারতে ছিলেন এবং তিনি কয়েকবারই বিলেত থেকে ভারতে আসা-যাওয়া করেছেন। বিলেত থেকে ভারতে যাওয়ার তিক্ত কিছু অভিজ্ঞতার কথা তিনি তার বোনকে লেখা একটি চিঠিতে জানাচ্ছেন। ”আমার কেবিনের দরজা প্রায় সবসময়ই বন্ধ করে রাখা হত। বাইরে থেকে সেখানে না ছিল কোন আলোর ব্যাবস্থা আর না ছিল কোন বাতাস। জাহাজের কেপটেনটা আস্ত একটা বেয়াদব এবং তার আচরন ছিল খুব উদ্ধত। সে তার যাত্রীদের অনেকটা অর্ধাহারে রেখে দিত।” তবে জাহাজে অনেক সময় খাবার ফুরিয়ে যেত। তখন জাহাজের ক্যাপ্টেনকে কৃচ্ছতা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকতো না। সাধারণত বিলেত থেকে জাহাজ ছাড়ার সময় যথেষ্ঠ পরিমান তাজা মাংস, ভেড়া, গরু, মদের বোতল জাহাজে মজুত থাকতো। মিনি বেন নামের এক বিলেতি নারী যিনি ১৮৫৬ সালে তার স্বামীর সাথে ভারতে গিয়েছিলেন তার লেখা ডায়রি থেকে জানা যায়, ”যতই দিন যেত ততই খাবারের সংগ্রহ কমতে শুরু করতো। খাবার পানির সমস্যা দেখা দিত। অনেক সময় পানির রং হয়ে যতে চায়ের রং এর মতই যা ছিল পান করার অযোগ্য।” মিনি যখন জাহাজে চড়েন তখন তিনি ছিলেন অন্তঃসত্বা। তার বর্ণনায় দেখা যায় যে তিনি এক সপ্তাহ পর্যন্ত কোন খাবার মুখে তুলতে পারেন নি। জাহাজ যখন কেপ অব গুড হোপে ভিড়লো তখন প্রথমবারের মত তিনি সিদ্ধ শুয়োরের মাংস, চপ কারি এবং আধা কাঁচা খাসির মাংস খাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তিনি তার মাকে লিখেন, ”তুমি কল্পনাও করতে পারবে না যে এই খাবার গুলো ছিল অর্ধেকটাই পঁচা। খাবার থেকে সেই দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। একদিন আমি মাংস কাটতে দেখি ওর ভেতর চারটা সাদা পোকা কিলবিল করছে।” (ওমেন অব দি রাজ: দি মাদারস, ডটারস, ওয়াইভস এন্ড ডটারস অব দি বৃটিশ এমপায়ার ইন ইন্ডিয়া। লেখক মারগারেট মেকমিলান, রেনডম হাউস ট্রেড, ২০০৭, পৃষ্ঠা ২৩) তবে সাধারণ সৈন্যদের স্ত্রীদের অবস্থা ছিল আরো মানবেতর। জাহাজের কেবিন পাওয়াতো দূরের কথা তারা কোন রকম জাহাজের বিভিন্ন জায়গায় রাত্রি যাপন করতো। কখনো কখনো তাদের স্থান হত মদ রাখার পিপের পাশে, কখনো কখনো তাদের ঘুমানোর স্থান হত দূর্গন্ধযুক্ত ঘোড়ার খোয়াড়ের পাশে। জাহাজের ডেকে যাওয়ার অনুমতি তাদের ছিল না। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে সাধারণ সৈনিকরা তাদের স্ত্রীদের কে নিয়ে জাহাজে চড়ার অনুমতি পেতেন না। শুধুমাত্র উচ্চ মর্যাদার সেনারাই তা করতে পারতো। পরবর্তীতে বিশ শতকের গোড়ার দিকে বিলেতে সে প্রথার পরিবর্তন আনা হয় এবং জাহাজে সাধারণ সেনারাও তাদের স্ত্রীদের কে নিয়ে আসার সুযোগ পান।

বিলেত থেকে ভারতে পথে জাহাজ মূলত থামতো দুটো জায়গায়। প্রথমটি হল সেন্ট হেলেনা এবং দ্বিতীয়টি কেপ অব গুড হোপ। এই দুুটো জায়গা থেকেই জাহাজে খাবার পানি এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য জাহাজে বোঝাই করা হত। বিনোদনের জন্যে জাহাজের যাত্রীদের জন্যে এটি ছিল সবচেয়ে বড় সুযোগ। দীর্ঘদিনের পানিতে ভাসার পর মাটি স্পর্শ পাওয়ার জন্যে সবার প্রাণ উন্মুখ হয়ে থাকতো। যাত্রীরা প্রাণ ভরে স্থানীয় মদ এবং তাজা মাংস খেত এবং শহরের বিভিন্ন জায়গা দল বেধে ঘুরতে বেড় হয়ে পরতো। এ যেন দীর্ঘদিনের যাত্রাপথের খানিক বিশ্রাম নেওয়া। সেন্ট হেলেনা এবং কেপ অব গুড হোপ সবখানেই পানশালাগুলো তখন লোকে গমগম করতো। স্থানীয় ক্ষুদে ব্যাবসায়ীদের জন্যে এই জাহাজের যাত্রীদের কাছ থেকে কিছু টাকা পয়সা কামিয়ে নেওয়ার এটিই ছিল মোক্ষম সময় ।

১৮৩০ সালের দিকে জাহাজের এই যাত্রাপথ আগের থেকে আরো বেশি নিরাপদ এবং দ্রুত হয়ে পরে। সেই সময় সুয়েজ, লহিত সাগর এবং বোম্বের মধ্যে প্রথম স্টিমার চালু হয়। ১৮৪০ সালে পেনিসুলার এবং স্ট্রিমশিপ কোম্পানী ভারত সরকারে সাথে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয় হয়। চুক্তি অনুযায়ী সুয়েজ এবং ভারতের বিভিন্ন বন্দরে স্টিমার চালু শুরু হতে থাকে। সেই সময়  (পেনিসুলার এন্ড ওরিয়েন্টাল স্টিমশিপ কোম্পানী) ছিল ভারত ভ্রমনের জন্যে খুব পরিচিত একটি নাম। পাশাপাশি আরেকটি রাস্তাও চালু ছিল। এসকোর এবং ক্লান লাইন যা লিভারপুল থেকে সরাসরি বোম্বের বন্দরে ভিড়তো। কলকাতা স্টারলাইন চলতো লিভারপুল এবং কলম্বো এবং ইটালিয়ান রুবাটিনো লাইন ছিল জিনিওয়া এবং নেপলস হয়ে বোম্বে পর্যন্ত। ১৮৬৯ সালে সুয়েজ খাল দিয়ে স্টিম ইঞ্জিনের এই পথ আবিস্কার হওয়ার পর বিলেত থেকে ভারত আসতে সময় চার থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সাশ্রয় হল। বিলেত থেকে ভারতের রাস্তা ছোট হয়ে যাওয়ায় আরো বেশি বিলাতি নারীদের ভারত ভ্রমনের ইচ্ছা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সাথে জাহাজের মানও আগের থেকে অনেক ভালো হতে শুরু করে। জাহাজের কেবিনের সংখ্যা বাড়ানো হয় এবং খাবার দাবার পর্যপ্ত মজুদ নিশ্চিত করা হয়। জাহাজের যাত্রীদের মাঝে প্রচুর পরিমান ব্রান্ডি, হুইস্কি, বিস্কিট এবং চা গরম করে খাওয়ার জন্যে স্পিরিট বাতি সরবরাহ করা হত। ১৮৮২ সালে প্রকাশিত বিলেতি নারীদের গাইড বই হিশেবে প্রকাশিত ’ইন্ডিয়া আওটফিট’ গ্রন্থে বর্ণনায় চোখ রাখা যাক। ”যারা সমুদ্র ভালোবাসেন তাদের জন্য যাত্রাপথটি খুবই আনন্দের। সাধারণত জাহাজে সব যাত্রীরাই খুব ভদ্র। কখনো কখনো জাহাজের ডেকে বিভিন্ন রকম গান বাজনার ব্যাবস্থা আয়োজন করা হয়ে থাকে। জাহাজের দীর্ঘ যাত্রাপথে পাঠাগারের ব্যাবস্থাও রয়েছে। তাই এমন একটি সুন্দর সময়ের সাথে ভ্রমন করার ইচ্ছা না হওয়ার কোন কারন নেই।” বলার অপেক্ষা রাখে না বিলাতি নারীদের পটানেরা জন্যে এই ধরনের বিজ্ঞাপণ সেই সময় মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে কাজে দিত। কারণ বিলাতি নারীরা ভারতে পাড়ি দেওয়ার জন্যে উন্মোখ হয়ে বসে থাকতো।


Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com


স্বপ্ন হল সত্যি

লহিত সাগরের প্রাকৃতি সৌন্দর্য্য এক কথায় অপূর্ব। দীগন্ত বিস্তৃত শুধু নীল আর নীলের ছোওয়া। সেই নীল জলের ঢেউ কেটে কেটে বিলাতি নারীরা ভারতের উদ্দেশ্যে যেন আনন্দের সাথে যেতে পারে এর জন্যে ’ইন্ডিয়া আওটফিট’ নামের পুস্তিকাটির জুড়ি মেলা ভার। পুস্তিাকটিতে বিভিন্নরকম মুখ রোচক বিজ্ঞাপণ দিয়ে বিলাতি নারীদের ভারত ভ্রমনে উদ্ধুদ্ধ করা হয়। বিজ্ঞাপণের মূল বিষয় ছিল বিলাত থেকে ভারতেগামী জাহাজের বর্ণনা। একটি বিজ্ঞাপণের নমুনা দিচ্ছি। ”ধীরে ধীরে এখন বসন্তের গরম বাতাস বইতে শুরু করেছে। বিলাতি নরীরা গরমের পোষাকে নিজেদের সজ্জিত করছেন, পুরুষরাও সমান তালে হালকা আর খোলামেলা পোষাকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জাহাজের কর্মচারীরা সবাই সাদা রং এর ইউনিফোর্ম পরে হাসি মুখে খেদমতে ব্যস্ত। ফুরফুর বাতাসে জাহাজ চলছে ভারতের দিকে। সকাল এগারটার দিকে ঠান্ডা বরফ আর সেই সাথে তরমুজ দিয়ে যাত্রীদের আপ্যায়ন করা হচ্ছে।” এ কথা সত্য যে বিলাত থেকে ভারতে আসা জাহাজগুলোর দশা খুব একটা সুবিধের না হলেও ধীরে ধীরে জাহাজগুলোর চেহাড়ায় রং লাগতে শুরু করে। দীর্ঘ যাত্রপথে যাত্রীরা যাতে পর্যাপ্ত বিনোদন এবং ভালো খাবার খেতে পারে সে দিকে জাহাজ কতৃপক্ষ বিশেষ নজর দিতে শুরু করে। তবে মূল বিষয়টাই ছিল ব্যাবসা। ভারতের প্রতি বিলাতিদের অদম্য আগ্রহ মূলত ব্যাবসাপাতি ছাড়া আর কিছু নয়। দেখা যায় জাহাজগুলোতে আগের তুলনায় অনেক বেশি বিনোদনমূলক ব্যবাস্থা করা হয়েছে। কিছু কিছু জাহাজে সুন্দর সময় কাটানের জন্যে বিভিন্ন রকম খেলাধূলার ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে।

১৯৩০ সালে ডেনিস কিনকেইড তার বিক্ষ্যাত গ্রন্থ ’ বৃটিশ সোসাইটি ইন ইন্ডিয়া’তে লিখেছেন, ”আমি বিলাতি নারীদের বলতে শুনেছি যে তারা বিলেত থেকে ভারত আসতে বিলেতি জাহাজকেই বেশি প্রাধান্য দেন কারণ সেখানে খেলাধূলার অনেক ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। জাহাজের ডেকে টেনিস, দাবা সহ বিভিন্নরকম বুদ্ধিদীপ্ত খেলার আয়োজন থাকতো। খেলাধূলার পাশাপাশি চলতো বিভিন্নরকম সৌখিন কাপড়ে সজ্জিত হয়ে মনের সুখে গান বাজনা, আবৃত্তি, কৌতুক ইত্যাদি পর্ব। সেড়া অংশগ্রহনকারীদের জন্যে ছিল বিশেষ পুরস্কার। বিষয়টা ভারতে নতুন ভ্রমনকারীদের জন্যে উৎসাহব্যাঞ্জক ছিল বৈকি!” অনেক সময় জাহাজের ডেকেই এক আরেকজনের সাথে পরিচিত হতেন এবং সেই পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব এবং বন্ধুত্ব থেকে মন দেওয়া নেওয়ার পর্যায়ে পর্যন্ত হয়ে যেত। মোট কথা বিলেত থেকে ভারতের দীর্ঘ একঘেয়েমি মাখা পথে খানিকটা খেলাধূলা, নাচ-গান সহ বিভিন্নরকম বিনোদন জুড়ে দিয়ে বিলাতিদের মনোরঞ্জনের ব্যাবস্থা করা হত।

ভারতে পৌঁছানের ঠিক আগের বন্দরটির নাম অডেন। অডেন বন্দরটি দেখতে খুব রুক্ষ ধরনের। সবুজের ছায়া মাত্র সেখানে নেই। চারদিকে শুধূ পাহাড় আর পাহাড়ের স্তুপ। অডেন অতিক্রম করার সাথে সাথেই আবহাওয়া গরম হতে শুরু করে। সমুদ্রের জলের গরম বাতাস জাহাজের গায়ে এসে লাগে আর তখনই বিলাতি নারীদের প্রাণ চাঙ্গা হতে শুরু করে দেয়। অনেক সময় গরম এতই বেশি পড়ে যে জাহাজের ডেকের এক পাশে বিলাতি নারীরা স্বল্প কাপড় চোপড় পরে তাদের বেডিং এ শুয়ে সময় কাটাতে চাইতেন। ভদ্রতার খাতিরে জাহাজের এক প্রান্তে মেয়েদের এবং অন্য পাশে পুরুষদের জন্যে বিছানা পাতার ব্যাবস্থা ছিল। বলার অপেক্ষার রাখে না যে যারা ভারতে প্রথম ভ্রমন করছেন তাদের উৎসাহটা ছিল অন্যদের থেকে বেশি। ১৯২০ সালে বিলাতি নারী মনিকা কেমপবেল মারটিন ভারত মহাসগর অতিক্রম করে ভারতে এসেছিলেন। তার বয়স ছিল অল্প এবং চোখে ছিল শুধু বিস্ময়। তিনি তার স্মৃতি হাতরিয়ে বলছেন, ”সারাদিনই উড়ন্ত মাছগুলো রূপকথার গল্পের মতই চোখের সামনে উড়ছিল। আমরা জাহাজের ডেকে ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম থেকে উঠে জাহাজের পানির কল দিয়ে মুখ ধুয়ে পরিস্কার হয়ে আবার সেই ডেকে উঠে শুধু অপেক্ষার প্রহর গোনা।”

ভারতের বন্দরে জাহাজ খুব কাছাকাছি পৌছানোর সাথে সাথেই জাহাজের নাবিক, কেপটেন, খালাসি এবং যাত্রী সবার মাঝেই প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসতো। প্রথম কথা হল দীর্ঘ সময় ধরে সমুদ্র জীবন যাত্রীদের মাঝে এক ধরনের হাতাসা সৃষ্টি করে দিত আর দ্বিতীয় কারনটি ছিল সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে নতুন শহর নতুন দেশ ভারতের মাটি স্পর্শ করার অদম্য উৎসাহ। জাহাজ যখন ভারতের বন্দরে ভীড়বে ভীড়বে করছে তখন বন্দরে শুরু হত আনন্দের বন্যা। সবার মুখে তখন চাপা ফিসফাস আর মাতামাতি। ”আহা! বাতাসে সত্যি ভারতের ঘ্রাণ পাচ্ছি!!” সেই সময় থেকেই জাহাজের আগত যাত্রীদের পরস্পর থেকে বিদায় নেওয়ার পালা শুরু হয়। সে এক আসাধরণ দৃশ্য। তারা সবাই তাদের প্রিয়জনের সাথে দেখা হওয়ার জন্যে উদগ্রীব হয়ে বসে আছে। তাদের সবার চোখে তখন শুধু স্বপ্ন আর স্বপ্ন। কেমন হবে সেই স্বপ্নদেখা কল্পনায় আকাঁ ভারত নামের দেশটি? দীর্ঘদিনের বিচ্ছেদে থাকা তাদের প্রিয় মানুষগুলো নিশ্চয় কত উদগ্রীব আর ভালোবাসার সাথেই না তাদের জন্যে অপেক্ষা করছে! কীভাবে তাদের আভ্যর্থনা জানানো হবে? কেমন হবে ভারত বসবাসের সেই অনাগত ভবিষ্যত? এক অজানা অচেনা পরিবেশে তারা নিজেদের কতটুকু গড়ে নিতে পারবে? ভারত সত্যি তাদেরকে গ্রহণ করবে তো? সে এক অপার উৎকন্ঠা এবং সেই সাথে বিস্ময়! শেষপর্যন্ত ভারতের মাটিতে বসবাস শুরু করার এক অদম্য আকাংখার বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। স্বপ্ন তাহলে সত্যি হতে চললো?

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>