Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

উৎসব সংখ্যা খেলা: ভিভ রিচার্ডস কেন ভিভ রিচার্ডস । উৎপল শুভ্র

Reading Time: 10 minutes

ভিভ রিচার্ডস কেন ভিভ রিচার্ডস? কোথায় তিনি বাকিদের চেয়ে আলাদা? দল-দেশ নির্বিশেষে তাঁর সময়ের প্রায় সব ক্রিকেটার কেন ভিভ রিচার্ডসের নামে এমন আচ্ছন্ন! ভিভ রিচার্ডস সম্পর্কে অনেক ক্রিকেটারের কথা পড়ে এবং নিজে অনেকের সঙ্গে কথা বলে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন উৎপল শুভ্র।

ভিভ রিচার্ডস কেন ভিভ রিচার্ডস?

শুধুই কি স্ট্রোক প্লের জন্য? তা ক্রিকেট ইতিহাস যুগে যুগে স্ট্রোক প্লেয়ার তো কম দেখেনি। ভিভ রিচার্ডসের ব্যাটিংয়ে স্ট্রোক প্লের ঔদ্ধত্য প্রথমেই নজর কাড়ত সত্যি, কিন্তু শুধু স্ট্রোক প্লের কারণেই ভিভ রিচার্ডস ভিভ রিচার্ডস হননি। তাহলে কিসের জন্য হয়েছেন? ইংল্যান্ডের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান গ্রাহাম থর্পকে আমি রান-টানের জন্য মনে রাখিনি। মনে রেখেছি ভিভ রিচার্ডস সম্পর্কে আসল কথাটা বলার জন্য, ‘একটি বলও খেলার আগেই প্রতিপক্ষের শিরদাঁড়ায় ভয়ের স্রোত বইয়ে দেওয়ার মতো প্রতিভা, কারিশমা ও সামর্থ্য ছিল তাঁর।’

মনে রাখতে বলি, কথাটা কোনো ফাস্ট বোলারকে নিয়ে হচ্ছে না। হচ্ছে একজন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে! সত্তর ও আশির দশক এত বড় বড় সব ব্যাটসম্যানকে দেখেছে, যাঁদের পুরোভাগেই সুনীল গাভাস্কার। সেই গাভাস্কার যখন বলেন, ‘ও বোলারদের মানসিকভাবে ধ্বংস করে দিত… সে-ই আমার প্রজন্মের সেরা ব্যাটসম্যান, সেটাও অনেকটা ব্যবধানে’—কার কথা বলছেন, বুঝতে সমস্যা হয় না। 

রান-সেঞ্চুরি সে তো অনেক ব্যাটসম্যানই করে। কিন্তু ‘শিরদাঁড়ায় ভয়ের স্রোত’, ‘বোলারদের মানসিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়া’ এসব কথা কজন ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে! জেফরি ডুজনের কথাটা এখনো কানে বাজে, ‘সব সময়ই দেখেছি, নতুন ব্যাটসম্যান এলে ফিল্ডাররা দুই পা এগিয়ে আসে। একমাত্র ভিভ নামলেই সবাই দুই পা পিছিয়ে যেত।’ 

যুগে যুগে ফাস্ট বোলাররা ব্যাটসম্যানদের মনে ভীতি ছড়িয়েছেন। রিচার্ডস উল্টো তা ছড়িয়ে দিতেন ফাস্ট বোলারদের মনেই। সেটিও শুধু মেরুন রঙের টুপিটা পরেই। হেলমেট নামের ওই বস্তুটা কখনো তাঁর লাগেনি। ডন ব্র্যাডম্যানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক এবং ক্রিকেট ইতিহাসবিদ ডেভিড ফ্রিথ স্যার ডনের মৃত্যুর পর চাঞ্চল্যকর এক তথ্য জানিয়েছেন। ডন নাকি তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর সময়ে হেলমেট থাকলে হয়তো ব্যবহার করতেন। রিচার্ডসের সময় তা ছিল, ফিরেও তাকাননি। শচীন টেন্ডুলকারকে নিয়ে যখনই ডন ব্র্যাডম্যানের পর সেরা বলে হইচই হয়েছে, অবধারিতভাবেই তাই মনে হয়েছে, ‘কী ব্যাপার, ভিভ রিচার্ডস তো এমন দূর অতীতের কেউ নন। তাঁর কথা সবাই ভুলে গেল কিভাবে?’

ইয়ান বোথামের মনেও এই একই প্রশ্ন জাগে। আগে থেকেই জানতাম। আরও ভালো করে জানলাম তাঁকে ইন্টারভিউ করতে গিয়ে। কথপোকথনের ওই অংশটা হুবহু তুলে দিতে ইচ্ছা করছে—

শুভ্র: আপনার কি মনে হয় না, লোকে যখন শচীন টেন্ডুলকারকে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের পর সেরা ব্যাটসম্যান বলে, তখন তাঁরা ভিভ রিচার্ডসের কথা ভুলে যায়?

বোথাম: যেকোনো কন্ডিশনে, যেকোনো উইকেটে ভিভ রিচার্ডস আমার দেখা সবচেয়ে কমপ্লিট ব্যাটসম্যান। ও শুধু রান করত না, বোলিংও ধ্বংস করে দিত। আমার জীবনে আমি ভিভ রিচার্ডসের চেয়ে ভালো কোনো ব্যাটসম্যান দেখিনি। শচীন খুবই ভালো ব্যাটসম্যান আর স্যার ডন তো ছিলেন অন্য ব্যাপার। ভিন্ন ভিন্ন যুগের খেলোয়াড়দের তুলনা করাটাও কঠিন। একেক যুগে খেলাটা একেক রকম। কে জানে, স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ওয়ানডে ক্রিকেটের সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নিতেন! তিনি অবশ্যই পারতেন। কারণ স্যার ডন ছিলেন দারুণ এক ব্যাটসম্যান, ক্রিকেটের দেখা সেরা খেলোয়াড়। তবে আমি আমার জীবদ্দশায় যাদের সঙ্গে খেলেছি এবং যাদের দেখেছি, কোনো সন্দেহ নেই ভিভ রিচার্ডস আমার দেখা সেরা এবং একই সঙ্গে সবচেয়ে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান।


ভিভ রিচার্ডস সম্পর্কে ইয়ান বোথামের পরিষ্কার কথা: `দেয়ার হ্যাজ নেভার বিন আ বেটার প্লেয়ার।` এর চেয়ে ভালো কেউ ছিল না, এর চেয়ে ভালো কেউ হবেও না। ছবি: গেটি ইমেজেস

ভিভ রিচার্ডস সম্পর্কে ইয়ান বোথামের পরিষ্কার কথা: ‘দেয়ার হ্যাজ নেভার বিন আ বেটার প্লেয়ার।’ এর চেয়ে ভালো কেউ ছিল না, এর চেয়ে ভালো কেউ হবেও না। ছবি: গেটি ইমেজেস


এখানে তা-ও বোথাম ডনকে সবার উর্ধ্বেই রেখেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ এবং ইংলিশ কাউন্টিতে সমারসেটে সতীর্থ হিসাবে দিনের পর দিন ভিভ রিচার্ডসকে দেখে প্রায় নিয়মিতই তাঁর মনে হতো, এর চেয়ে ভালো কিছু আর কিভাবে হয়! উইজডেন ক্রিকেট মান্থলির ওই বিশেষ সংখ্যাটা খুলে দেখছি, রিচার্ডস সম্পর্কে বোথামের সেই অমর বাণী, ‘দেয়ার হ্যাজ নেভার বিন আ বেটার প্লেয়ার।’ ইঙ্গিতটা পরিষ্কার। ‘নেভার বিন’ মানে রিচার্ডস শুধু তাঁর সময়েরই সেরা নন, অতীতেও তাঁর চেয়ে ভালো কেউ ছিল বলে ঘোর সন্দেহ বোথামের।

১৯৯৯ সালে প্রকাশিত সংখ্যাটা সংগ্রহে রেখে দেওয়ার একটাই কারণ, এটি সংগ্রহে রেখে দেওয়ার মতোই। বিলেতের ওই ক্রিকেট সাময়িকীর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটা জরিপ করা হয়েছিল সেই সংখ্যায়। সাময়িকীটির প্রচ্ছদে এসেছেন, এমন ক্রিকেটারদের বলা হয়েছিল গত বিশ বছরের সেরা তিনজন খেলোয়াড় নির্বাচন করতে। এক নম্বরের জন্য ৩ পয়েন্ট, দুই ও তিনের জন্য ২ ও ১।


উইজডেন ক্রিকেট মান্থলির সেই বিশেষ সংখ্যা। যাতে ক্রিকেটারদের ভোটে সন্দেহাতীত এক নম্বর ভিভ রিচার্ডস

উইজডেন ক্রিকেট মান্থলির সেই বিশেষ সংখ্যা। যাতে ক্রিকেটারদের ভোটে সন্দেহাতীত এক নম্বর ভিভ রিচার্ডস


ইয়ান বোথাম ওই জরিপে দ্বিতীয় হন, তৃতীয় শেন ওয়ার্ন। এক নম্বর অবশ্যই ভিভ রিচার্ডস। জরিপে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, নিজেদের নির্বাচনের পক্ষে এক-দুই লাইন লিখেও দিয়েছিলেন। রিচার্ডস সম্পর্কে বব উইলিসের কথাটা ছিল সবচেয়ে মজার, ‘ও আমার ভালো বলগুলোতে চার মারত, আর খারাপগুলোতে ছয়।’ অথচ রিচার্ডস যেসব ফাস্ট বোলারদের খেলেছেন, তাঁদের মধ্যে ডেনিস লিলিকে এক নম্বরে রেখে এর কাছাকাছিই রেখেছেন উইলিসকে।

২.

‘ক্রিকেটের বাইবেল’ বলে পরিচিত উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালম্যানাক শতাব্দী-সেরা পাঁচ নির্বাচন করেছিল ২০০০ সালের মিলেনিয়াম সংস্করণে। সাবেক খেলোয়াড়, ইতিহাসবিদ, সাংবাদিকের নিয়ে গড়া ১০০ জনের একটি প্যানেলের ভোটে। সবার সেরা পাঁচে একটা নাম কমন ছিল—ডন ব্র্যাডম্যান। এটা একদমই বিস্মিত হওয়ার মতো নয়। বিস্মিত হতে পারেন এটা জেনে যে, দশজন তাঁদের সেরা পাঁচে গ্যারি সোবার্সকে রাখেননি! এক নম্বরে ডন ব্র্যাডম্যান ও দুই নম্বরে গ্যারি সোবার্স। সেরা পাঁচের বাকি তিনজন ছিলেন জ্যাক হবস (৩০), শেন ওয়ার্ন (২৭) ও ভিভ রিচার্ডস (২৫)।

১০০ জনের ভোটে যে সিদ্ধান্ত, আমার একার নির্বাচনই সেটির সঙ্গে প্রায় মিলে গিয়েছিল বলে বেশ একটা গর্ব হয়েছিল। ঘটনা হলো, উইজডেনে প্রকাশিত হওয়ার মাস চারেক আগেই প্রথম আলোর সে সময়কার সাপ্তাহিক খেলার সাময়িকী ‘স্টেডিয়াম’-এর একটা বিশেষ সংখ্যা করা হয়েছিল শতাব্দী-সেরাদের নিয়ে। শুধু ক্রিকেট নয়; ফুটবল, টেনিস ও অ্যাথলেটিকসও ছিল। নির্বাচনটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই হয়েছিল, তবে ভোটারের সংখ্যা ছিল এক। ক্রিকেটের সেরা পাঁচে উইজডেনের সঙ্গে আমার একটা নামই মেলেনি। জ্যাক হবসের বদলে আমি রেখেছিলাম ইমরান খানকে। 

ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ৬১ হাজারের বেশি রান ও ১৯৯টি সেঞ্চুরির মালিককে বাইরে রাখার সিদ্ধান্তটা অবশ্যই কঠিন ছিল। হবস না ইমরান—এই প্রশ্নটা বেশ কয়েকদিনই মাথায় নিয়ে ঘুরেছি। শেষ পর্যন্ত ইমরানকে বেছে নেওয়ার কারণ রান আর উইকেট ছাপিয়ে খেলাটিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব। ইমরানের চেয়ে ভালো বোলার ক্রিকেট দেখেছে, তাঁর চেয়ে ভালো ব্যাটসম্যান তো অবশ্যই। অধিনায়ক হিসাবেও সবার এক নম্বরে থাকবেন, এমন কথা নেই। কিন্তু এই তিনটি মিলে যে প্যাকেজ, তাতে কাউকে ইমরানের চেয়ে বেশি নম্বর দেওয়া কঠিন।

ব্যাটে-বলে তাঁর সময়ের বাকি তিন অলরাউন্ডার বা এই প্রজাতির সর্বকালের সেরা বলে মোটামুটি সর্বজনস্বীকৃত গ্যারি সোবার্সের পোর্টফোলিওতে অধিনায়কত্ব এমন কোনো জ্বলজ্বলে অধ্যায় নয়। যতদিন অধিনায়ক ছিলেন, পাকিস্তানের ক্রিকেটে ইমরানের কথাই ছিল শেষ কথা। আমার কাছে ইমরানের এর চেয়েও বড় কীর্তি বলে বিবেচিত হয়েছিল—একান্তই নিজের উদ্যোগে ‘নিরপেক্ষ’ আম্পায়ার চালু করে দিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসেরই মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া। এখানেই শুধুই একজন ক্রিকেটার থেকে ইমরান খান যুগোত্তীর্ণ ক্রিকেট চিন্তাবিদে উন্নীত।


ইমরান খানও তাঁর সময়ের বাকি সব ব্যাটসম্যানের ওপরে রেখেছেন ভিভ রিচার্ডসকে

ইমরান খানও তাঁর সময়ের বাকি সব ব্যাটসম্যানের ওপরে রেখেছেন ভিভ রিচার্ডসকে


শুরুর দিকে ইমরান আর রিচার্ডসের সম্পর্ক পুরোনো বাংলা ছবির বউ-শাশুড়ির মতোই ছিল বলে শোনা যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজে একবার ইমরানকে ফরোয়ার্ড ডিফেন্সিভ খেলেছেন রিচার্ডস। এই শটটা এমন দেখনদারি ঢংয়ে খেলতেন যে, তাতে যেন মিশে থাকত বোলারের প্রতি বিদ্রুপ: ‘এই বলেও চাইলেই চার মারতে পারতাম, মারলাম না তোকে এটা দেখাতে—দেখ্, আমার ডিফেন্সও কত ভালো!’

ইমরান রেগেমেগে বলেন, ‘তুমি আত্মপ্রেমে মজে থাকা একজন মানুষ তাই, তাই না?’ 

রিচার্ডস মৃদু হেসে জবাব দেন, ‘হ্যাঁ, তোমার কাছ থেকেই এটি শিখেছি।’

পেশাদারি শ্রদ্ধার কোনো অভাব অবশ্য ছিল না। আত্মজীবনী অলরাউন্ড ভিউ -এ তাঁর সময়ের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ইমরান পরিষ্কার রায় দিয়ে দিয়েছেন, ‘ভিভিয়ান রিচার্ডস স্ট্যান্ডস্ হেড অ্যান্ড শোল্ডারস এবাভ এভরিওয়ান এলস্।’ এই একটা মোহনায় এসে মিলে যেতে দেখবেন তাঁর সময়ের সব ক্রিকেটারকেই।

রিচি রিচার্ডসনকেও। অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়ে শুধুই খেলোয়াড় হিসাবে ১৯৯২ বিশ্বকাপটা খেলতে চেয়েছিলেন ভিভ রিচার্ডস। সেই ইচ্ছা পূরণ না হওয়ার দুঃখ এখনো আছে। অ্যান্টিগা থেকে তাঁরই উত্তরাধিকার রিচি রিচার্ডসনই কলকাঠি নেড়েছিলেন বলে বিশ্বাস করেন বলেই দুঃখটা আরও বেশি। সেই ঘটনার প্রায় বিশ বছর পর রিচার্ডসনের সঙ্গে কথা বলে মনে হলো, রিচার্ডস ভুল করেননি তো! এ তো এখনো রীতিমতো ভক্তের মতো কথা বলছে! 

রিচার্ডসের বাদ পড়ায় তাঁর ভূমিকা ছিল কি না প্রশ্নে রেগেমেগে উত্তর না দিয়ে চলে গেছেন। অমন প্রতিক্রিয়া অনুমিত ছিল বলেই প্রশ্নটা করেছিলাম সবার শেষে। এর আগে রিচার্ডসনের সঙ্গে রিচার্ডসকে নিয়ে যে আলাপচারিতা, সেটি সংক্ষেপে তুলে দিতে ইচ্ছা করছে—  

‘ভিভ রিচার্ডস আমার দেখা গ্রেটেস্ট ক্রিকেটার। বেস্ট ব্যাটসম্যান। আমি ব্র্যাডম্যানকে দেখিনি, সোবার্সকেও না। ওরা যদি রিচার্ডসের চেয়ে ভালো হয়…ওয়াও! আমি নিজে যা দেখেছি, তাতে বলতে পারি রিচার্ডস ছিলেন এখানে (মাথার কাছে হাত রেখে) আর বাকিরা এখানে (পেটের কাছে হাত নামিয়ে। হি ওয়াজ আ এক্সস্ট্রা অর্ডিনারি হিউম্যান বিইং। স্পেশাল, একেবারেই স্পেশাল।’

ব্যাখ্যা চাইলাম—কোথায় এসে রিচার্ডস অন্যদের চেয়ে আলাদা হয়ে যান?

‘অসম্ভব প্রতিভা তো ছিলই আর ছিল প্রচন্ড আত্মবিশ্বাস। পরিস্থিতি যা-ই হোক, নিজের সামর্থ্যের ওপর প্রচন্ড আস্থা ছিল। কোনো কিছুকে ভয় পেত না, কাউকে না। ভেতরে একটা তাড়না ছিল, আমি সর্বকালের সেরা হতে চাই। যেকোনো পরিস্থিতিতে বিশ্বাস করত, আমি চ্যাম্পিয়ন, কারও সাধ্য নেই আমার সামনে দাঁড়ায়।’

কিন্তু যত বড় চ্যাম্পিয়নই হোক, কখনো না কখনো তাঁর মনেও অনিরাপত্তা আর সংশয় খেলা করতে বাধ্য। রিচার্ডসকে কখনো নড়বড়ে দেখেননি? 

‘অস্ট্রেলিয়ায় একবার দেখেছিলাম’ বলে রিচার্ডসন একটা হাসি দিলেন, ‘ও কিন্তু ডাবল সেঞ্চুরি করেছিল।’

৩.

আত্মবিশ্বাস তো ছিলই। সঙ্গে প্রচন্ড পেশাদারি গর্ব। ২০০৭ বিশ্বকাপের সময় অ্যান্টিগায় তাঁর নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে দাঁড়িয়ে অননুকরণীয় ভঙিতে বলছিলেন, ‘ব্যাট করতে নামার সময় বিশ্বাস করতাম, আমিই এই মাঠটার মালিক। প্রতিপক্ষের ফাস্ট বোলারও হয়তো তা-ই মনে করত। আমার প্রথম কাজ ছিল তাই তাঁর ভুলটা ভেঙে দেওয়া।’

‘বিশ্বাস করতাম’ শব্দযুগল খেয়াল করতে বলি। মনে করতেন না, বিশ্বাস করতেন! মাঠে হাঁটাচলা-ব্যাটিংয়ের মতো খেলোয়াড়ি জীবনউত্তর ভিভ রিচার্ডসও এমনই বর্ণময় এক চরিত্র যে, যতবার কথা বলেছি, মোহগ্রস্তের মতো লেগেছে। না, আর কোনো ক্রিকেটারই এই অনুভূতিতে আচ্ছন্ন করতে পারেননি। আর কোনো ক্রিকেটারকে তো ‘কিং’ নামেও ডাকা হয়নি।


তাঁর ব্যাটিং করতে নামাটাও ছিল দেখার মতো। ছবি: গেটি ইমেজেস

                                    তাঁর ব্যাটিং করতে নামাটাও ছিল দেখার মতো। ছবি: গেটি ইমেজেস


ডিন জোন্স তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘মাঠে তিনি এমন সব কাণ্ড করেছেন, গ্রেট ক্রিকেটাররা যা করার স্বপ্ন  দেখে।’ ভিভের ব্যাটিং দেখে, তাঁর কথাবার্তা শুনে সবসময়ই মনে হয়েছে, শুধু রান করার জন্যই ব্যাট হাতে তুলে নেননি। তাঁর কাছে এটি ছিল পূর্বপুরুষদের ওপর যুগের পর যুগ শ্বেতাঙ্গদের অত্যাচারের একটা বদলা নেওয়ার হাতিয়ারও। যখনই ইংল্যান্ডকে সামনে পেয়েছেন, চুরমার করে দিয়েছেন। টেস্টে ৫৬ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড করার দশ বছর পর ওয়ানডে এর চেয়ে কম বলে সেঞ্চুরি দেখেছে। বলাই বাহুল্য, পরবর্তী ত্রিশ বছর বলের হিসাবে টেস্টে দ্রুততম হয়ে থাকা সেই সেঞ্চুরির ভুক্তভোগীও ইংল্যান্ড।

বর্ণবাদের দক্ষিণ আফ্রিকায় রেবেল ট্যুরে যেতে আলী ব্যাখার তাঁকে ব্ল্যাংক চেক দিতে চেয়েছিলেন বলে শোনা যায়। নিজের আত্মজীবনীতে অবশ্য অঙ্কটা নির্দিষ্ট করে জানিয়েছেন রিচার্ডস। পাঁচ লাখ ডলারেরও বেশি! আশ্চর্যবোধক চিহ্নটা বুঝতে এই তথ্যটা জানা জরুরি যে, ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকের কথা হচ্ছে। রিচার্ডসের প্রত্যাখ্যানের ভাষাটাও খুব মধুর ছিল না।

সাবেক ইংলিশ বাঁহাতি স্পিনার ভিক মার্কস অনেক দিনই পেশাদার সাংবাদিক। তাঁর একটা মজার পর্যবেক্ষণ আছে। যে বোলারের যত সুনাম, তাঁর ওপর ততটাই নির্দয়ভাবে চড়াও হতেন রিচার্ডস। সেটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই হোক বা কাউন্টি ক্রিকেটে। আর যত বড় উপলক্ষ, রিচার্ডস ততই দুর্দমনীয়। বিশ্বকাপ-কাউন্টি মিলিয়ে লর্ডসে আটটি ফাইনাল খেলেছেন। তার একটিতেই শুধু ব্যর্থ বলা যায়। ব্যর্থতার সাক্ষী সেই ১৯৭৫ বিশ্বকাপ ফাইনালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ে বড় ভূমিকা তরুণ রিচার্ডসের করা তিনটি রান আউটের।  

১৯৮১ সালে অ্যান্টিগায় ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। তিন দিন আগে ভিভ রিচার্ডস আবার বিয়ে করেছেন। চারদিকে উৎসবের আমেজ। সেই উৎসবে নিজেকেও একটু রঙ ছড়াতে হয়। তো রিচার্ডস সেঞ্চুরি করলেন। ১১৪ রানের ৯০-ই এলো বাউন্ডারি থেকে। নিজভূমে খেলা প্রথম চার টেস্টের তিনটিতেই সেঞ্চুরি। প্রতিটিই রিচার্ডস বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭৮ রানের ইনিংসে ৩০টি চার! পরেরটি তো ৫৬ বলে সেঞ্চুরির ওই বিশ্ব রেকর্ড। যা দেখে উইজডেনের সাবেক সম্পাদক শিল্ড বেরি লিখেছিলেন, ‘পুরো ইনিংসে রিচার্ডস যদি কোনো সংশয়ে ভোগে থাকেন, তা হলো চার মারবেন না ছয়!’ অ্যান্টিগায় টেস্ট ম্যাচ নিয়মিত ব্যাপার হয়ে যাওয়ার কারণেই বোধহয় এখানে শেষ দুই টেস্টে তেমন রান-টান করেননি!


 

উপলক্ষ যত বড়, ততই চওড়া হয়ে উঠত ভিভ রিচার্ডসের ব্যাট। ছবি: গেটি ইমেজেস

                                 উপলক্ষ যত বড়, ততই চওড়া হয়ে উঠত ভিভ রিচার্ডসের ব্যাট। ছবি: গেটি ইমেজেস


বড় উপলক্ষে জ্বলে ওঠা নিয়ে কথা বলতে গিয়েই একবার রিচার্ডসের কড়কানি খেয়েছিলাম। লর্ডসের প্রেসবক্সের পেছনে খানা-পিনার একটা জায়গা আছে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে একদিন সেখানেই পেয়ে গেলাম তাঁকে। টেন্ডুলকারের ভারত ও লারার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ স্বপ্ন ততদিনে শেষ। এই প্রসঙ্গ তোলায় ‘ক্রিকেটে এমন হতেই পারে-টারে’ জাতীয় রুটিন কথাবার্তা বলছিলেন। যে-ই বললাম, বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে সময়ের দুই সেরাই ব্যর্থ, কিন্তু আপনি তো এমন উপলক্ষ পেলে আরও বেশি জ্বলে উঠতেন; রিচার্ডস আবারও ‘জ্বলে’ উঠলেন। 

ব্যাটিংয়ের সময় বোলারের গায়ের রক্ত হিম করে দেওয়া সেই চাউনিটা দিয়ে শীতল কণ্ঠে বললেন, ‘ডোন্ট কমপেয়ার মি উইথ এনিওয়ান। ভিভ রিচার্ডস ইজ হোয়াট ভিভ রিচার্ডস ডাজ। টেন্ডুলকার অ্যান্ড লারা আর হোয়াট দে ডু।’ লিখতে লিখতে এখনো কেমন একটা শিরশিরে অনুভূতি হচ্ছে। অন্য কারও মুখে শুনলে নির্ঘাত আত্মগর্বী বলে মনে হতো। রিচার্ডসের মুখে শুনে উল্টো দ্রুত একমত হয়ে গিয়েছিলাম, ‘তাই তো! ভিভ রিচার্ডসের সঙ্গে অন্য কারও তুলনা হয় নাকি!’

এই তুলনা করতে গিয়ে অপদস্থ হওয়ার আরেকটি অভিজ্ঞতার কথাও মনে পড়ছে। ২০০৬ সালের পাকিস্তান সফরে বীরেন্দর শেবাগের ব্যাট থেকে এমন আগুনের ফুলকি ছড়াচ্ছে যে, ভিভ রিচার্ডসের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে সবার। তাছাড়া বছর চারেক আগে ভিভ রিচার্ডস নিজেই শেবাগের মধ্যে তাঁর ছায়া দেখছেন বলে সবাইকে জানিয়েছেন। কিন্তু ভিভ-সতীর্থ মাইকেল হোল্ডিংয়ের কাছে প্রসঙ্গটা তুলতেই সদা হাস্যময় সাবেক ফাস্ট বোলার এমন কটমট করে তাকালেন যেন তাঁর দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছে। 

একটু সামলে নিয়ে তীব্র শ্লেষের সুরে বললেন, ‘কী বললেন, ভিভ? আপনারা পারেনও!’

কেন ভিভ রিচার্ডস এমন কী ছিলেন যে, তার সঙ্গে কারও তুলনাই করা যাবে না! 

এবার হোল্ডিং রাগে প্রায় কাঁপতে শুরু করেছেন, ‘তুলনা? আমি তো এ নিয়ে কথা বলতেই রাজি নই।’ 

এরপরই তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘আপনি ভিভকে দেখেছেন?’

‘মাঠে বসে নয়, টেলিভিশনে।’

‘তাহলে?’ এবার হোল্ডিং মহাবিস্মিত। 

আমি ভালো একটা স্টোরির গন্ধ পেয়ে গেছি। হোল্ডিংয়ের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে তাই কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেটি এরকম হলো:

আমি: ভিভের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়েও লোকে বলে, তাঁকে তো তাঁর সময়ের সেরা বোলিং অ্যাটাকই খেলতে হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফাস্ট বোলার যে তাঁর দলেই ছিলেন।

হোল্ডিং: লিলি-টমসনকে তো খেলতে হয়েছে। তখন কী হয়েছে?

আমি: (মিনমিন করে) রিচার্ডস তাঁদেরও মেরেছেন।

হোল্ডিং: (এই প্রথম মুখে একটু হাসি) লিলি, টমসন, ইমরান, বোথাম, উইলিস, কপিল, হ্যাডলি, চন্দ্রশেখর, বেদি…ওদের জিজ্ঞেস করুন ভিভ কী ছিল! আশির দশকে যত গ্রেট বোলার ছিল, পরের দুই দশক মিলিয়েও তো এত হবে না। এবার গিয়ে রিচার্ডসের রেকর্ডটা দেখুন।

আমি: (নিরস্ত না হয়ে) ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরোয়া ক্রিকেটে বারবাডোজের মার্শাল-গার্নার বা জ্যামাইকার হোল্ডিংয়ের সঙ্গে যখন অ্যান্টিগার ভিভ রিচার্ডসের দেখা হতো, তখন কী হতো?

হোল্ডিং: (মহা-বিস্মিত হয়ে) কী আর হবে, ভিভ সেঞ্চুরি করত!

গটগট করে সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাওয়ার আগে হোল্ডিং শেষ কথাটা বলে গেলেন, ‘ফুটবলে পেলের সঙ্গে যেমন আমি কারও তুলনা করতে চাই না, ক্রিকেটে তেমনি ভিভ।’


১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ডে শেষ উইকেটে ১০৬ রানের জুটির দুই অংশীদার মাইকেল হোল্ডিং ও ভিভ রিচার্ডস। ওই জুটিতে হোল্ডিংয়ের অবদান ছিল মাত্র ১২! ছবি: গেটি ইমেজেস

১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ডে শেষ উইকেটে ১০৬ রানের জুটির দুই অংশীদার মাইকেল হোল্ডিং ও ভিভ রিচার্ডস। ওই জুটিতে হোল্ডিংয়ের অবদান ছিল মাত্র ১২! ছবি: গেটি ইমেজেস


বছরের পর বছর একই ড্রেসিংরুম শেয়ার করার পর, ট্যুর-হোটেল-বাস-মাঠে একসঙ্গে দিনের পর দিন কাটানোর পর যে কারও সম্পর্কে একটু নিরাসক্তি আসাটাই স্বাভাবিক। এত বছর পরও মাইকেল হোল্ডিংকে ভিভ রিচার্ডসে এমন আচ্ছন্ন দেখে তাই একটু অবাকই হয়েছিলাম। একটু ভেবেই অবশ্য কারণটা বুঝতে পেরেছি। দিনের পর দিন যেমন একসঙ্গে কাটিয়েছেন, দিনের পর দিন অতিমানবীয় সব কাণ্ডও তো করতে দেখেছেন, বেশির ভাগই কোচিং ম্যানুয়ালকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে।

অগুনতি রিচার্ডস-শোর একটি তো দেখেছেন মাঠের ‘সেরা আসন’ থেকে। একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি দেখে ফেলতে পারত সেই ১৯৮৪ সালেই। পারেনি ইনিংস শেষ হয়ে যাওয়ায়। রিচার্ডস তখন ১৮৯ রানে অপরাজিত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ওই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ উইকেটে ১০৬ রানের একটা জুটি হয়েছিল। যাতে রিচার্ডসের পার্টনারের অবদান ছিল মাত্র ১২। পার্টনারের নাম মাইকেল হোল্ডিং।

৪.               

সাংবাদিকের প্রশ্ন থেকে কখনো তাঁর মনোভূমি বুঝে ফেলেছেন বলে ভাববেন না। স্টোরির প্রয়োজনে সাংবাদিককে কখনো কখনো নিজে যা বিশ্বাস করেন, সেটির উল্টো প্রশ্ন করতে হয়। মাইকেল হোল্ডিংও তাই ভুলই বুঝেছিলেন। ভিভ রিচার্ডসে তাঁর মতো আমিও আচ্ছন্ন। 

ক্যারিয়ার জুড়ে এতসব মণিমুক্তো, তারপরও ভিভ রিচার্ডসের কথা উঠলেই আমার কেন যেন সবার আগে ১৯৭৯ বিশ্বকাপ ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের শেষ বলটির কথা মনে হয়। ফিল্ডিং সাজাতে সময় নিচ্ছে ইংল্যান্ড। পা দুটি আড়াআড়ি ফেলে রিচার্ডস অপেক্ষা করছেন এবং যথারীতি চুইংগাম চিবুচ্ছেন। মাইক হেনড্রিকস বলটা স্টাম্পেই ফেললেন। রিচার্ডস অফ সাইডে সরে গিয়ে অবলীলায় সেটিকে তুলে দিলেন স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে। এমন তো কতই করেছেন। দেখার ছিল পরের দৃশ্যটা। বলের দিকে একবারও না তাকিয়ে রিচার্ডসের অমন নির্বিকার ড্রেসিংরুমে ফিরে যাওয়ার দৃশ্যটা যতবার দেখি, ততবারই শিহরিত হই। কীভাবে সম্ভব!  

এই বিস্ময় আরও বেড়ে যায় ২০০৭ বিশ্বকাপে অ্যান্টিগা দর্শনের পর। পুঁচকে একটা দ্বীপ। চারপাশে কেমন গ্রাম-গ্রাম আবহ। রাজধানী সেন্ট জনসে ঘুরতে ঘুরতে ভাবছিলাম, এখনও যদি এমন হয়, ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগে কেমন ছিল! 

আয়তনে এক শ বর্গমাইলের একটু বেশি। জনসংখ্যা মাত্র ৮০ হাজার। বারবাডোজ-জ্যামাইকা-ত্রিনিদাদের ছায়ায় ঢাকা পড়ে থাকা ‘স্মল আইল্যান্ড’গুলোর একটি। ঘরোয়া ক্রিকেটে অ্যান্টিগার আলাদা দল পর্যন্ত নেই। খেলতে হয় আরও কয়েকটি ‘স্মল আইল্যান্ড’কে নিয়ে গড়া লিওয়ার্ড আইল্যান্ডসের অংশ হয়ে। রিচার্ডসের আগে যে দ্বীপ অ্যান্ডি রবার্টস ছাড়া কোনো টেস্ট ক্রিকেটার দেখেনি। গণ্ডগ্রাম সেই অ্যান্টিগা থেকে উঠে এসে বাকি বিশ্বের চোখে চোখ রেখে ভিভ রিচার্ডসের ওই ‘মাস্তানি’র তাহলে ব্যাখ্যা কী? 

ব্যাখ্যা বোধহয় একটাই— 

ভিভ রিচার্ডস ইজ হোয়াট ভিভ রিচার্ডস ডাজ।

 

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>