ফুলিগান
হাতে ফুল দেয়ামাত্র তা বন্দুক
রেণু ছিলনা তাই গুলি ফুটলোনা
হাতের ওমে ঘুমালো বন্দুক
পাত্রে ঘুরতে ঘুরতে পানি ক্লান্ত
সে পানি অনন্ত
পানমাত্র অন্য জলজ
হাতে কোদাল, ছিল কাস্তে কুঠার
ভূ-ভয় দুইভাগ ‘কোপ’ বলামাত্র
নাঙ্গা এ তাপে, পরিতাপে
গলিত সীসায় পা অন্তরিত
মাংস গলে মাটি প’ড়ে প’ড়ে
ফুল ভেঙে ডাল অতিরিক্ত ।
ভাত ও ভূতের আসর
লবণ লাল,
বুকে মরীচ নিয়ে
ভাতে ছড়িয়ে থাকো
আঙুল ও ভর্তায়
মদে ছাড়ে
ভাতে ছাড়েনা পাতেরে
ভাত যাকে ধরে
তাকে শুইয়ে দেয়
মনু শর্করার ক্ষেতে
দূরের বাঁশি আনে মন্দ বাও
বাঁশির ভেতর গুঁড়া মরীচ, কাঁটা,
মদের বিচি আর ভাত সাজিয়ে
দেবে একটা, মহাকর্ষিক টান?
টানে টানে উঠে আসার লেলিহান,
বসন্তে এই বৃষ্টির শিমুলিয়া ।
পলাশের রক্ত মত্ত উন্নাসে
শিমুল কাঁটায় যদি অসম কামড়,
জিহ্বার কি স্বাদ!
সব জিহ্বা কি চিরতার রস জানে
আর মেহগনি ফল?
টক ও চিনির মধ্যে
লবণ লাল, তুমি মধ্যস্থতা
তুমিই মাঝদরদী মদ্য আমার
তুমি ছাড়া জমবে না ভাত ও ভূতের আসর ।
জামা পুড়িয়া গেল
বুকের পাশে টাকা পয়সার দাগ
দাগে পাতা মূল পকেটের ছাপ
আছে কিছু রোদের তৈরি মুদ্রা
খয়-খরচের বায়ু বাজার কোথায়?
বাজার এগিয়ে এলে
পকেটও এগিয়ে যায়
বাজারের সঙ্গে দেখা হলে পকেটের,
উভয়ে খালি হয়ে যায়
আছেন কোনো জামা গেঞ্জি ভাই
আছেন কোনো নতুন আসা প্যান্ট?
ওই পকেটে আমার কিছু খুচরো,
দেখা যায় ।
দেখা যায় চাবি, খোলে আসমান
আমার পকেটে আপনার শূন্যতা
অভিযোগ আর নিদাম অভিজ্ঞান
পকেটে গুজে দিয়েছেন শাক
পকেটে খড় বিছালি বিছান
পকেটে মাছ, খলবলায়
পকেটে টাকার ব্যাঘ্র নড়ে ।
জামা পুড়িয়া গেল!
দেহ, পায়জামার দিকে আওগান ।
উপরিগুঞ্জনে
দেখা যায় সন্তান?
বাতিল জন্মের নিবন্ধনে বহিনী মায়ের পূনরাবৃত্তি,
মাটির ভেতর শেকড় ফুলে গর্ভধারণের স্বরূপ?
শেকড় ফুঁড়েই শেকড়ের উৎকলন
রোদের শুক্র সেই জন্মঘটনার সামান্য সহাস
গর্ভমৃত্তিকার ওপরে ছড়ানো বাউ বকুলের গুণ
পঁ’চে, গ’লে, মাটির সঙ্গে নিবিড় আড্ডায় পত্রনিষ্ঠ ভূমি
পোকাদের বিনম্র উৎপাতে তার এতটুকু বিক্ষিপ্ত হয়না ।
মধু এড়িয়ে যে ফুল,
অনির্নীত পরিণাম বা
ছায়ার কাঠামো এড়িয়ে বট-মেহগনির যে উপরিগুঞ্জন—
তাঁরা গান রাখে সেই নামে— প্রসবের দলীয় সংগীত।
জ্ঞান থেকে ছিটকে পড়া একটি হুঁশ ।
আত্মসঙ্গম
সেখানে তরঙ্গ বন্য, কম্পন টানা বাঁশে যদিও লুব্রিকেটিং
প্রথা ও প্রেমের আরও, উহুঁ আহাহ্ না-তো
দূরের বনোপথে পাখিদের বৃক্ষসভা ঝলোমলো
সে সঙ্গম মেলায় যূথচারীরা হারানো,
যে নিয়মে উহ্য সঙ্গমসন্দর্ভ
ভিন্ন বিধানে আবার একীভূত ।
একীভূতরা অন্য একীভূতে মিলিত হয়ে
সৃষ্টি-দুঃখ-আদর-সংকট প্রতিপূরকে
একে অপরে নষ্ট, অন্যপক্ষপাত।
যখন সমন্বয়হীনে ভুগতে থাকা
পোষা নিতম্ব, সস্নিগ্ধ পেট পাতা—
নাভীর কুণ্ডলীতে নাক লেলিহান পর্যটক
ঘোরে আর দেখে আর খায় না চাখে;
পৃষ্ঠদেশের কোন অংশে মরীচ আনুপাতিক
কেশের আড়ে আদার ঝাঁঝ কেমন
কোথায় কোথায় জন্ম মৃত্যুর অনাদি গন্ধ
গলদেশে রাখা যায় কত জিহ্বা নুনের চাটন
কানপাতায় কেমন রসুন রসুন ।
এবং আমরা ভুল করি
কচুবন আঁকতে উনমনিয়া ঘেউ গাছ হয়ে উঠি
শক্তির আধিক্যে লেবুবাগে ঈর্ষা ফোলাতে থাকি
যেহেতু নিসর্গের আসন বিন্যাসে
পর্বতই পৃথিবীর স্তন্য
শীর্ষ ছুঁয়ে হালকা মেঘ উড়ে যায়
তোমার সে টলোপাহাড়ে তুমিই বৃক্ষ
সে বৃক্ষের ফল তুমি নিজে,
খাও তুমিও ।
সে হালকা মেঘ ডানা ভেঙে পড়ে থাকে
কোন অপরিচেয় উরুর ভাগারে,
যোনিবিশ্বের কোন তৃণভূমি চিরে যাওয়া কোন নদীতে
ক্লিটোরিস আঁকা চরে ব্রাজকের যে সবুজ অন্ধকার, নিমজ্জন
আর কত নীচে তার ডুবকোমল ঠাপ, তলসাপ,
কি ভণিতে লাড়ে চাড়ে?
গো সোনা! সিধেল ট্রেন যাচ্ছে নীলচে স্টেশনে
একটু একটু করে তা ধূসর মিসাইল,
গ’লে গ’লে গমন আর
বেরোবার ঠান্ডা সাবমেরিন
অর্গানিক সে সমুদ্র অন্তঃস্রোত।
কল্পিত কন্ডম এবং অশ্বভগ্ন গমনাগমনে
বলতে পারবোনা তোমার প্রেমিক বা আমি কে,
আত্মপরিচয়ের চেনা না চেনার বিভ্রান্ত বিজ্ঞাপনে ।
চুমু খাই নিজেকে নিজের ঘরে একান্তে ডেকে
নারী হয়ে সাড়া দিতে থাকি
অব্যবহৃত কন্ডমে সম্মানিত মাননীয় শিশ্নদন্ড
অপমানিত কন্ডম হারিয়ে গেলে দন্ডে ফেরেনা
অপরিহিত থেকে কেঁপে কেঁপে উঠে দমকে
স্বমেহনের হাওয়ায় উড়ে যায় খালি প্যাকেট;
ছেঁড়া প্লাস্টিক, পলিথিন- যেমন প্রকৃতি হয়ে যায়!
ডিম ও আসামী
সুউচ্চ আদালত থেকে ডিম ছেড়ে দেয়া হলো নিম্ন আদালতের ছাদে । ডিমটি ভাঙলোনা । উপর থেকে ছাড়া হলেও পতন হয়নি কোথাও— শূন্যে তখনো ঝুলে । ডিম ভাঙার আগে সাক্ষীর মন ভেঙে গেল ।
এ আমি কোথায়? আমি কি কোথাও?সমস্ত বিচার বন্দনা মামলা সাক্ষী সন্দেহের ঊর্ধ্বে ভেসে যাচ্ছি । পরোয়ানা, হাতকড়া, জামিন-অযোগ্যতা, কারাঘর, প্রকৃত চোর ও পুলিশের লাল টেলিফোন পেরিয়ে মালিক্লাউনের ছাদে পুরনো এন্টেনা হতে যাচ্ছি। তথ্য প্রতিফলনের কংকাল নেত্র ।
ইথারের কাক, পরমাদন, মুতাহারাদের জৌলুসে উত্থিত বৃক্ষলিঙ্গম। শিবের দেশে কলা মেলে পূজা করছি। অথচ ডিমের ভেতর অজস্র পুলিশ স্টেশনের জন্য একটি মাত্র আদালত । উড়ে গেলে কোনো প্লাটফর্ম নেই যার । কাঠগড়া নেই । উড়ন্ত বিচারকের সামনে ইতস্তত আসামী।