আমরা কি এতটাই উদাসীন রয়ে যাবো? সৌন্দর্যকেই শুধু খাবো, সৌন্দর্যকে কখনো স্বাগতম জানাবো না, আমাদেরও খেতে…
সৌন্দর্য একটি প্রলেপ। যার কোনও কারিগর নেই। প্রতিটি বস্তুর অভ্যন্তরে সুনীল প্রচ্ছন্ন থাকে।তড়িতচুম্বকীয় প্রতিফলনে তা আরোও স্পষ্ট হয়ে ওঠে মাত্র। একজন ঘুমন্ত দর্শক প্রতিফলন সাজিয়ে রাখে। সম্ভাবনার তরঙ্গ চড়ে বেড়ায় পোষমানা ঝড়ের মত। অনেককিছুই ঘটতে পারত তুমি-আমি গাছের মত হলে। তারা দেখে। শোনে। ভাবে। অনুভব করে। অন্ধমানুষ যেভাবে ঘুম পাড়িয়ে রাখে প্রতিফলন। সৌন্দর্য। প্রলেপ। চয়ন এবং বুননের এই যে অতীন্দ্রিয় খেলা – তার চারু আল্পনায় রচেছি সৃষ্টির প্রাচীন প্রজাপতি প্রভাব। সেই কবে যেন প্রকৃতির মহামোহে লীন হয়ে নড়ে উঠেছে উত্তেজিতার লজ্জাবতী। তখনো ভায়োলিন আবিষ্কৃত হয় নি, সময় বেজে চলেছে উত্তুঙ্গ নাসারন্ধ্রের শ্রবণক্ষমতায়। কী যেন এক বিচিত্র স্নান সম্পাদিত হয়। সৌন্দর্য ভেজা ভেজা নয়। শুকনো নয়। পারিপার্শ্বিক ঘূর্ণনকে অপূর্ব স্পর্শে স্তব্ধ করে দিতে পারে এমন গন্ধ নয়। বরং হওয়া। তার পরের হওয়া। এবং তার তার পরের…
তাই জন্মের সংগত প্লাবনে যে সৌন্দর্য, নির্লিপ্ত হরিবোলের রুক্ষতায় সে সৌন্দর্যকে আমরা অবজ্ঞা করি। ললনার হীরকদ্যুতি তেপান্তরের দিগচক্রবালে হামেশাসীন হলেও, জন্মসূত্রে বৈজ্ঞানিক চয়নে যে ললনা নিরাভরণ তার সৌন্দর্যে লীন হতে পারি না। এরূপ ভুরি ভুরি উদাহরণ নিয়ে সাজিয়ে তোলা যায় উদাসীন দর্শকের একটি অডিটোরিয়াম। যারা কেবলই সৌন্দর্যকে অবদমন করতে চায়। অবদমিত হিতে চায় না। তারা ক্ষুধার্ত। সৌন্দর্যকে আহার করে। অথচ সৌন্দর্যের একান্ত আহার রূপে নিজেদের সমর্পন করতে পারে না। আলোর মৌন সংগমে সুপারসনিক স্তুতির যে বাহার পরিলক্ষ্যিত হয়, অন্ধকারের প্রাবল্য ও তারতম্যে দর্শককে যেন তা স্পর্শ করতে পারে না। এ কি ডিসটোপিয়া নয়? একটি চলমান দ্রুতির দিকে চেয়েই বাসনামত্ত দর্শক যদি ভবিষ্যত পরিকল্পনায় ছিটকে যায়, একটি নিথর -স্থির-দোমড়ানো-মোচড়ানো-ঘাড় হেলানো-ধুলামথিত মোটরবাইককে দেখে ধ্যানস্থ কে হবে?
কে লাগাবে ওতে সৌন্দর্যের শাশ্বত প্রলেপ?