ফুল, অশ্রু, প্রেম – ৩১ নারীর কবিতা (পর্ব – ১) । মুম রহমান
বিশ্ব কবিতায় নারীর কণ্ঠস্বর খুঁজতে গেলে সবার আগেই সাফো’র নাম আসে। সমালোচকদের বিবেচনায় সাফো (৬৩০-৫৭০ খ্রীষ্টপূর্ব) বিশ্বের প্রথম নারী কবি। কিন্তু তাকে বিচার করার এটিই প্রধান বিষয় নয়। প্রাচীন গ্রীসের এই কবি তার রচনা বৈশিষ্ট্য ও বক্তব্যের ভিন্নতায় নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। সাফো’র অধিকাংশ কবিতাই হারিয়ে গেছে। তবু যেটুকু টিকে আছে তার বৃহৎ অংশই প্রেমের কবিতা। সেই প্রেমও নারীর প্রতি নারীর প্রেম। আজকের যুগেও সাফোর কবিতা ভীষণ সাহসী ও প্রভাব বিস্তারী। গ্রীসের লেসবস দ্বীপে তার জন্ম। লেসবস সে সময় গ্রীসের জ্ঞান ও সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম কেন্দ্র ছিলো। লেসবস দ্বীপের অধিবাসীদের লেসবিয়ান বলা হয়। সাফো’র কারণেই পরবর্তীতে লেসবিয়ান শব্দটির ভিন্ন মানে দাঁড়ায়। নারী সমকামীকে লেসবিয়ান বলা হয়। সাফো তাই ছিলেন বলে অনেকের ধারণা। তার কবিতাতেও নারীর প্রতি তীব্র প্রেম ও কামনা লক্ষ করা যায়।
অপেক্ষার রাত
দিনটি কি বড় দীর্ঘ
ওগো লেসবিয়ান কুমারী,
আর রাত্রি অসীম
তোমার নিঃসঙ্গ ঘরে
মিটাইলিনে ?
সকল উজ্জ্বল দিন,
সন্ধ্যাকে স্বাগত জানানো আগ নাগাদ
যখন তারারা জ্বলে ওঠে পোতাশ্রয়ে,
তোমার তখন কি কাজ থাকে?
ঝর্ণা চলে যায়
সোনালী সূর্যাস্তের দিকে
বাড়িমুখোদের মধ্যে একজন
কারবারী, তুমি কি
ভেবেছিলে তোমার প্রেমিক?
আদতে, তবে কতো বড়
আর বিস্তৃত হবে এই রাত,
যখন আমি ফিরছি
প্রিয় দরজার দিকে
শুনছি আমার নিজের হৃদস্পন্দন!
১.লেসবসের অধিবাসীদের লেসবিয়ান বলা হয়। সাফো নিজেও লেসবোসের অধিবাসী ছিলেন। পরবর্তীতে লেসবিয়ান বলতে স্বকামী নারীদের বোঝানো হয়। সাফো নিজে অন্য নারীদের প্রতি কামে আসক্ত ছিলেন।
২.লেসবসের রাজধানী হলো মিটাইলিনে
প্রতীক্ষা
ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকি,
নিরব দরজাটিকে দেখি ।
দেয়ালে ছায়ারা আসে যায়
আর সিঁড়িরা যায় রাস্তায়।
প্রত্যাশা আর দ্বিধা
ভীরু মনে ফেলে পা
কতোজন আসে ঘরে ফিরে
আর তুমি এখনও কতো দূরে।
সবাইকে বলে দাও
সবাইকে বলো
এখন, আজ, আমি অবশ্যই
গাইবো সুন্দর করে
আমার বন্ধুদের মনোরঞ্জনের তরে।
জন্ম ২৭ মার্চ, ময়মনসিংহ। এমফিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। পেশা লেখালেখি।