স্রোতস্বিনী চট্টপাধ্যায়ের একগুচ্ছ কবিতা

Reading Time: 2 minutes

 


আজ ২৯ মে কবি স্রোতস্বিনী চট্টপাধ্যায়ের জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


 

 

ভাঙা মেলা

ভালোবেসে যারা মৃত হাওয়ায় ছাড়িয়ে দিচ্ছে জীবন আখ্যান
তাদের কাছে এই জীবনের ঋণ আমার শোধ হওয়ার নয়
এমনি করেই নদীর ঢেউয়ের কাছে
আমি তাদের অজস্র হাতছানি ভাসিয়ে দিলাম

ভাঙা মেলার দিকে যেতে

জলের দুপাশে ছড়িয়ে আছে মুখ
একটি জীবন দেখুক খেলার ছলে
আহত পাঁজর কুহক রতি সুখ

এমন গোপন হৃদিখেলার শেষে
কার জন্য কি বরাদ্দ আছে
জানা নেই সেই দিকবিদিকে হারিয়ে যাওয়া সেনার
শুধু গল্পগুলি আষাঢ় বেলার শেষে
জলের ভিতর লুকিয়ে রাখা আছে…

 

 

 

ডুবসাঁতার

একটি মাছ ডুবে যাওয়ার পরে
মেয়েটি তাকে শত্রু ভেবে
এগিয়ে গেল জলের দিকে
সেইখানে আজ কোন শূন্যে বৃষ্টি পড়ে এত
মেঘের কাছে আড়াল করার মতো

মুখ লুকিয়ে দেখেছিল সে অবাক হাতছানি
ডুবে যাওয়ায় মাছটি জানে অন্ধ পরিবার
কোথায় কোথায় জলের নীচে কে যে বাঁধে ঘর
মেয়েটি তাকে শত্রু ভাবে
আকাশ ভেজা জ্বর

জলের ওপর দাগে বিষাদ রাখা ঘট
অমঙ্গলের চিহ্ণ নিয়ে একলা জেগে আছে
ভীষণ সন্তাপে

 

প্রহর জোড়া সংস্থিতা – ৩

 

 

বৃষ্টির বুকে ভোর নামছে

আর রাতের সাথে তুমিও অন্যের হয়ে যাচ্ছো …

গত সাতদিন ধরে একটা লেখাও

না শেষ করতে পারার ব্যর্থতা

আমায় ধীরে ধীরে বোঝাচ্ছে

সব শব্দ কবিতা হয়ে উঠতে পারে না

কবিতার মত দেখতে লাগে শুধু !

আমি তো চলেই এসেছি

বালিশ , বিছানা , মিক্সার গ্রাইন্ডার, তেল, হলুদ

সবই তো রেখে এসেছি

তোমার নতুন স্ত্রী এখনও রান্নাঘরে কি হাতড়ায় ?

শুধুমাত্র তোমাকে ভালো লাগার পর

ভালোবাসার কাছে আমি দীর্ঘ এক বছর ধরে

দেশলাই জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ফেলার ঘ্রান কিভাবে নিতে হয়

তা অভ্যেস করেছিলাম –

এখন কারুর পায়ের আওয়াজ শুনলে

আমার মাথা নিচু হয়ে,ঘাড় ঝুলে যায় ,

আমি বোধহয় নিজেই ক্রমশ

পোড়া গন্ধ হয়ে উঠছি !

তুমি আরেকবার ফিরে এসে ,

আবার চলে যাও

দ্বিতীয় বারের ধাক্কা অতটা তীব্র নাও হতে পারে !

যেসব চিঠির উত্তর আসে না

তারা আসলে নতুন সূর্যাস্ত দেখে ফেরা

অন্যের ঠোঁটে আটকে থাকা চুমু …

প্রচন্ড শারীরিকের পর কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ –

বাইশ বছরের মেয়েটি ফোন করল ওকে

বেজে গেল

খানিকক্ষণ পর জোড় ঝংকার দিয়ে আওয়াজ থেমেও গেল ,

আবার ওকে একটা ফোন মিনিট খানেক বাদেই ,

এইভাবে পর পর ছয় বার

তারপর অন্য প্রান্ত থেকে ঘুম জড়ানো গলা

দু চারটে কথার পর ,

শেষ পাঁচটা শব্দ –

“আমায় আর ফোন করোনা কোনোদিন …”

বাইশ বছরের মেয়েটি প্রেমের ইস্তেহার লিখে

অ্যাবরসানটা করেই ফেলল –

ভালোবাসার পর কিছু যান্ত্রিক গোলযোগ আর…

অনি,

আরেক বার “আমি” থেকে “আমরা” হয়ে যাই ?

আসলে প্রতিটা প্রতিজ্ঞার মধ্যেই

একটা করে নতুন তাচ্ছিল্য জন্ম নেয় …

১০

অভিমানের সাথে স্লিপিং পিলসের সহবাস দেখার পরও

আমি রাতের পর রাত জেগে কাটিয়েছি

আর আমার শরীর কখন যেন জ্যোৎস্না হয়ে গেছে …

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>