
অবশিষ্ট
কুলিঙ্গীতে কিছু চুম্বন
লুকিয়ে রেখেছিলাম
সুদে আসলে নিয়েছো তা তুলে
এমন কিছু না,
তা দিয়ে হয়তো বা এক টুকরো
ত্যানা হতে পারতো
মুছতে পারতাম
এক বিন্দু স্বেদ অথবা বিভ্রম
এই আগস্টে আমার জন্য
গায়ে রইলো শুধু সিঁদকাটা শ্রম।
রাত, বইছো তুমি নৃত্বাত্তিক নদী
পৃথিবীর প্রাচীন হাতের মুঠো থেকে নেয়া আপেল বাসী হলে তার নির্যাস যেমন
আত্মহুতি বেদাত বিবেচনায়
তোমার রক্তচক্ষু হ্রদে এই ভাসাভাসি।
হে অনুন্নত আন–এ্যানিমেটেড রাত
তোমার বাজুবন্দে তবু বান্ধি
এ অপুষ্ট রাখি
কবি, গাগল ও পরী ছাড়া
তুমি আর হয়োনা কাহারো।
হলেই না হয় একটু গদাই লস্কর
তবু তুমিই যে আমার অপ্রতিরোধ্য
একমাত্র এ্যালক্যামি।
বিরতি
বিলেতের এদিকটায় এখন বিকেল
আগস্টের বাসী আকাশ থেকে
আপেল ঝরে পড়ছে ।
বহুদিন ধরে সিথানে সভ্যতা,
আর বাজুবন্দে উল্কার ঘাম ও
পরাজয় নিয়ে বসে আছি –
এ বিধুরকালে
ঠোঁটের আঁকে যদি একটিও
প্রজাপতি পেয়ে যাই!
মৃত্যুর চেয়ে মর্মান্তিক সময় এখন
অন্ধকারের অধিক অন্ধকারে
ঘড়িগুলো অবাধ্য অবোধ্য
অসভ্যের মত ছুটছে।
‘ওরে ঘড়ি এই ঘাগুকালে
চারদিক না দেখে শুনে এমন করে
কেবল বরাবরের পলকা বলের মত
ছুটলে কি চলবে?
দেশে বৈদেশে কোভিডের চেয়েও
মারাত্মক পয়মালদের পরম্পরা
পাল্লা দিচ্ছে
আর ভাল লাগে না রে…
একটু বিরতি নে বাপ!
আমি হাড় খুলে নিদ্রা যাই
ভাদর ভাঁপানো ঘ্রাণে
সূর্য চমকিত হবার আগে
তোর রাঙা বাহুমূলে।
পরম গরম ঘামকণা লয়ে
স্মৃতিপেটে জলিষ্ণু জামালপুরে
একটু জিরাই,
দে তোর ঊষামুখী হাত
বানহীন বানে ভেসে যেতে যেতে
ভাসিয়ে দিই আমাদের দ্বিখন্ডিত বিবেক।’
হাউজ এ্যারেস্ট
আসন্ন শীতের মাজেজায় এই যে
তখন আগষ্টের বাসী আকাশ থেকে
অবশিষ্ট আপেল ফেটে পড়ে মাটিতে
পাতার পাঁজর মটমট করে
অনতিদূরে তুষার–কাফনের
সাদা চৌরাস্তা দোলে
যেন পরিবর্তিত পরিবেশে
তাদেরই দাবী সবচেয়ে বেশি।
আমরা সবাই আঁচ করতে পারিঃ
আজ থেকে
আর কোন প্যানাল্টিবিহীন
পার্কিং হবে না,
আলোয় আলোয় উড়বে না
বেনীখোলা রোদ।
তুমিও চলে যাবে , যাও।
কন্ঠের কাঁটা তুলে নিলে
কে আর বসে থাকে!
থাক সকল নিদ্রারতি
আমিও তুলে রাখছি
তোমার সকল পুরানো তরল।
ভিনটেজ হ’লে
বাসী আপেলেই মারবো কামড়
পান করবো তোমাকেই,
চম্কানো চঞ্চুর
সিক্ত টাইফুনে বেঁধে ফেলবো
বাতাসের কোমর।
শীত –নিদ্রার আগেই আটকাবো তাহারে
ভাবনা–ভালুকটারে।

সত্তুর ও আশির দশকে বাংলাদেশে পেশাজীবি সময় কেটেছে তাঁর – সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় সাংবাদিকতা, বাংলাভাষা ও সাহিত্যে শিক্ষকতা, রেডিও ও টেলিভিশনে উপস্হাপনা এবং সেই সঙ্গে কবি ও লেখক হিসেবে নিরন্তর সাহিত সাধনায়। প্রায় তিন দশক বিলেতে আছেন। কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটক, অনুবাদ, শিশুগ্রন্থ মিলিয়ে বিলেত ও বাংলাদেশে তাঁর বইয়ের সংখ্যা ত্রিশের বেশী।
২০১১ সালে বিশ্বখ্যাত এডিনবরা ফ্রিঞ্জ ফেস্টিভ্যালে প্রথম বাংলাদেশী কবি হিসেবে পরিবেশন করেছেন কবিতা ও গল্প। ১৯৯৭ সালে আমেরিকার বিখ্যাত সাময়িকী ‘দি নিউইয়র্কার’ এর বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কবিতার অনুবাদ। এদিকে তাঁর স্বপ্নলালিত ও উদ্ভাবিত ‘বিজয়ফুল’ এখন সারাবিশ্বে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অমর করে রাখার জন্যে উঠেছে এক অনন্য কর্মসূচী।
উল্লখযোগ্য গ্রন্হ: হে যুবক তোমার ভবিষ্যত, মধ্যবিত্ত বদলে যাচ্ছে, দুই রমনীর মধ্য সময়, ওম, স্মৃতিকাব্য, বিলেতের স্ন্যাপশট, পকেট ভরা পাঁপড়ি, ১০০ প্রেম অপ্রেমের কবিতা, বুগ্লী দ্যা বার্গেন্ডী চিতা, এ্যা ভক্সাল কোরাস ও ব্রিটিশ বাংলাদেশী পোয়েট্রি।
বাংলাদেশের সম্মাননা: ১৯৯৫ দেশী ফ্যাশন ও লাইফ স্টাইলে অন্যতম অবদানের জন্য বিচিত্রা এ্যাওয়ার্ড ফর ফ্যাশন জার্নালিজম, ২০১৬ বিদেশে বসবাস করে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সামগ্রিক অবদানের বাংলা একাডেমীর সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার।
বিলেতের সম্মাননা: ২০০৯ বাংলাদেশী হুজ হু এ্যাওয়ার্ড, ২০০১ সিভিক এওয়ার্ড সম্মাননা।